কক্সবাজার ইউনিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আফসানা হোসেন শীলা নামে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নুনিয়ারছড়ার মোহাম্মদ হোসেনের কন্যা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসিউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
প্রসূতির স্বামী ইফতেখার বলেন, তার স্ত্রীকে গত ২১ এপ্রিল রাতে হালকা পেটে ব্যথা হওয়ায় কক্সবাজারের বেসরকারি ইউনিয়ন হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নীনা জিহানের প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে যান। এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্লাড দেয়া হয়। ব্লাড দেয়ার পরপরই অসুস্থতা বোধ করে। পরে ডা. নীনা জিহানের পরামর্শ অনুযায়ী ইউনিয়ন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহেদ তার স্ত্রীকে ভর্তি করান।
তিনি বলেন, ভর্তি করার পর পরই তার শরীরে ইনজেকশন পুশ করা হয়। ইনজেকশনটি পুশ করার কিছুক্ষণ পরেই তার স্ত্রীর প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। পরে ২২ এপ্রিল রাত ২টার সময় জানানো হয় তার স্ত্রীকে ডেলিভারির জন্য রক্তের ব্যবস্থা করতে, এক ব্যাগ রক্ত চালানোর পর একটি স্যালাইন দেয়া হয়। পরবর্তীতে রাত সোয়া ৩টার সময় ডাক্তার শাহেদ হিমু এবং সোমা নামে দুজন নার্স নিয়ে তার স্ত্রীকে ডেলিভারি করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। ডেলিভারিতে তার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
পরবর্তীতে ডাক্তাররা জানান, তার স্ত্রীর ব্লিডিং বন্ধ করা যাচ্ছে না। পরে ডাক্তার নীনা জাহানকে ইউনিয়ন হাসপাতাল থেকে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সদর হাসপাতালের ডিউটিতে আছি, রোগীকে সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।’ আমার স্ত্রীকে সদর হাসপাতালে আনার পর তিনি আইসিইউতে প্রেরণ করেন। এরপর বুধবার রাতে তার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ইউনিয়ন হাসপাতাল ঘেরাও করে নিহতের স্বজনরা। ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়ায় ভুয়া ভুয়া বলে হৈ-হুল্লোড় করেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রোগীর স্বজনরা জানান, ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুল চিকিৎসা করে আফসানাকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের মেয়ের মৃত্যুর দায় ইউনিয়ন হাসপাতালকে নিতে হবে। তারা আরও জানান, আফসানার ডেলিভারির তারিখ ছিল ৬ মে। টাকার লোভে আগাম ডেলিভারি করাতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছ ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোসাব্বির হোসেন তানিম বলেন, নিহতের স্বজনদের করা অভিযোগগুলো পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
তবে খোঁজ-খবর নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার।