০৪:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরাকান আর্মি’র দখলে রাখাইনের নৌঘাঁটি: বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চাপ

  • শ.ম.গফুর:
  • প্রকাশিত সময় : ০১:৪১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৩৩ ভিউ

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে একটি নৌ ঘাঁটি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। সংঘাতের এ পরিস্থিতিতে গতরাতে বিচ্ছিন্ন ভাবে এপারে ঢুকে পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা। অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তের ওপারে অবস্থান করছেন অন্তত আরোও অর্ধলাখ রোহিঙ্গা। সীমান্তের অসমর্থিত সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।রাখাইনভিত্তিক জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বলছে, তারা প্রায় এক মাসের তীব্র লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার(৫ আহস্ট) থান্ডওয়ে শহরের এনগাপালি বিচের পর্যটন কেন্দ্রের কাছে অবস্থিত জান্তার নেভি সিল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
খবর মিয়ানমারের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ইরাবতী।দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিদ্রোহীদের হাতে হারানো জান্তার প্রথম কোনো নৌ-সদর দপ্তর এটি। এই ঘাঁটিটি জান্তার সেন্ট্রাল নেভাল ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ ডিপো (সিএনডিএসডি) নামে পরিচিত।আরাকান আর্মি জানিয়েছে, ৭ আগস্ট থেকে এই নৌবাহিনীর ঘাঁটিটি দখলের জন্য তারা অভিযান শুরু করে। ঘাঁটিটি রক্ষায় ১২০০ জনেরও বেশি সেনা মোতায়েন করেছিল জান্তা।মোতায়েনকৃত এসব সেনার মধ্যে নৌ প্রশিক্ষণার্থীরাও ছিলেন। এই ঘাঁটিকে ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরাকান আর্মির সৈন্যদের ওপর বোমাবর্ষণ করে আসছিল জান্তা।আরাকান আর্মি’র দাবি, তাদের অভিযানে জান্তার ৪০০ জনেরও বেশি সৈন্যকে হত্যা করেছে। ঘাঁটি থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে। নৌবাহিনীর জাহাজগুলো মৃত ও আহত জান্তা সৈন্যদের নিয়ে আইয়েরওয়াদি অঞ্চল এবং রাখাইনের রাজধানী সিট্যুয়েতে চলে গেছে।এদিকে উত্তর রাখাইনে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মংডু শহর দখল করার জন্য সপ্তাহব্যাপী আক্রমণে জান্তা বাহিনীর সাঙ্গে সংঘর্ষ অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। এই সংঘাত থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে বলে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা  সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার যুযোগ খুঁজছে বলে জানা গেছে।এদিকে মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে নাইক্ষ্যংছড়ি,উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে।শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) একদিনেই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে পড়েছে প্রায় ৫শ’র বেশী রোহিঙ্গা।টেকনাফ সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত নভেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি’র সংঘাত তীব্র হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে।চলমান সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে, নাফনদী পার হয়ে ফের বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন রোহিঙ্গারা।পরে তারা চলে যাচ্ছেন উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে।এছাড়া মিয়ানমারের মংডুর মনিপাড়া, সিকদারপাড়া ও আইরপাড়া এলাকায় অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা বলছেন, গত এক মাসে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন সংবাদ মাধ্যম’কে বলেন, এ সংখ্যা ৮ হাজার।
সীমান্তরক্ষায় বিজিবি-কোষ্ট গার্ড কঠোর টহল দানে রয়েছে।তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

খুরুশকুল ইলেকট্রিশিয়ান এন্ড সেনেটারী মিস্ত্রি কল্যাণ সমিতির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহণ

আরাকান আর্মি’র দখলে রাখাইনের নৌঘাঁটি: বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চাপ

প্রকাশিত সময় : ০১:৪১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে একটি নৌ ঘাঁটি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। সংঘাতের এ পরিস্থিতিতে গতরাতে বিচ্ছিন্ন ভাবে এপারে ঢুকে পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা। অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তের ওপারে অবস্থান করছেন অন্তত আরোও অর্ধলাখ রোহিঙ্গা। সীমান্তের অসমর্থিত সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।রাখাইনভিত্তিক জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বলছে, তারা প্রায় এক মাসের তীব্র লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার(৫ আহস্ট) থান্ডওয়ে শহরের এনগাপালি বিচের পর্যটন কেন্দ্রের কাছে অবস্থিত জান্তার নেভি সিল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
খবর মিয়ানমারের জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ইরাবতী।দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিদ্রোহীদের হাতে হারানো জান্তার প্রথম কোনো নৌ-সদর দপ্তর এটি। এই ঘাঁটিটি জান্তার সেন্ট্রাল নেভাল ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ ডিপো (সিএনডিএসডি) নামে পরিচিত।আরাকান আর্মি জানিয়েছে, ৭ আগস্ট থেকে এই নৌবাহিনীর ঘাঁটিটি দখলের জন্য তারা অভিযান শুরু করে। ঘাঁটিটি রক্ষায় ১২০০ জনেরও বেশি সেনা মোতায়েন করেছিল জান্তা।মোতায়েনকৃত এসব সেনার মধ্যে নৌ প্রশিক্ষণার্থীরাও ছিলেন। এই ঘাঁটিকে ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরাকান আর্মির সৈন্যদের ওপর বোমাবর্ষণ করে আসছিল জান্তা।আরাকান আর্মি’র দাবি, তাদের অভিযানে জান্তার ৪০০ জনেরও বেশি সৈন্যকে হত্যা করেছে। ঘাঁটি থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে। নৌবাহিনীর জাহাজগুলো মৃত ও আহত জান্তা সৈন্যদের নিয়ে আইয়েরওয়াদি অঞ্চল এবং রাখাইনের রাজধানী সিট্যুয়েতে চলে গেছে।এদিকে উত্তর রাখাইনে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মংডু শহর দখল করার জন্য সপ্তাহব্যাপী আক্রমণে জান্তা বাহিনীর সাঙ্গে সংঘর্ষ অব্যাহত রেখেছে আরাকান আর্মি। এই সংঘাত থেকে বাঁচতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে বলে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা  সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার যুযোগ খুঁজছে বলে জানা গেছে।এদিকে মিয়ানমারে সংঘাতের জেরে নাইক্ষ্যংছড়ি,উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে।শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) একদিনেই বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে পড়েছে প্রায় ৫শ’র বেশী রোহিঙ্গা।টেকনাফ সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত নভেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি’র সংঘাত তীব্র হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে।চলমান সংঘাতের মধ্যে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে, নাফনদী পার হয়ে ফের বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন রোহিঙ্গারা।পরে তারা চলে যাচ্ছেন উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে।এছাড়া মিয়ানমারের মংডুর মনিপাড়া, সিকদারপাড়া ও আইরপাড়া এলাকায় অন্তত ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা বলছেন, গত এক মাসে ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন সংবাদ মাধ্যম’কে বলেন, এ সংখ্যা ৮ হাজার।
সীমান্তরক্ষায় বিজিবি-কোষ্ট গার্ড কঠোর টহল দানে রয়েছে।তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।