০৯:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগ সভাপতি ও জামায়াত আমীরের জন্য ভোট খুঁজছেন বিতর্কিত বিএনপি নেতা!

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনের বাতাস শুরু হওয়ার পর থেকে মাঠ দখলে রেখেছেন আওয়ামী লীগের একক মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত বিএনপি নেতা খায়রুল আলম চৌধুরী।

রমজানে একাধিক ইফতার মাহফিল ও আওয়ামী লীগের দলীয় মিটিংয়ে খায়রুল আলম চৌধুরীর সরব উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে। যদিও দলীয় এসব প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদার উপস্থিতি দেখা যায়নি। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কানাঘুঁষা ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

এদিকে এতোদিন ধরে খায়রুল আলম চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্য পাড়া মহল্লা চষে বেড়ালেও গত রবিবার হঠাৎ করেই উপজেলা জামায়াতের আমীর মৌলানা আবুল ফজলকে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করে তার জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। আবুল ফজলের নির্বাচনী মিটিংয়ে তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির অনুমতি নিয়ে এসেছেন বলে দাবী করেন।

তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির বরাদ দিয়ে বলেন, মৌলভী আবুল ফজল কে প্রার্থী করার বিষয়ে তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেছেন। তারা সম্মতি দিয়েছেন।

আবুল ফজল এর মিটিংয়ে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্য বলেন, জামায়াত আমীর আবুল ফজলের পাশাপাশি তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্যও ভোট করবেন। তিনি আরও বলেন, তিনি স্বার্থের জন্য সবসময় ক্ষমতার সাথে থাকেন। এমপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে সর্ম্পক রাখেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়ে যে কোন দল ক্ষমতায় আসলে তিনি সাথে সাথে তাদের দলে যোগ দেবেন বলে ঘোষণা দেন।

ফলে খায়রুল আলম চৌধুরীর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার সাথে সাথে সর্বত্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সাবেক এমপি আস্কারা পেয়ে বেপরোয়া কথাবার্তা বলছেন খায়রুল আলম চৌধুরী। তিনি বিএনপি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর ক্ষতি করছেন। পাশাপাশি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে কৌশলে বিতর্কিত করছেন। এখনই খায়রুল আলম চৌধুরীর মুখের লাগাম টেনে ধরার দাবী জানান ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

আওয়ামী লীগের আরেকজন ওয়ার্ড সভাপতি নাম প্রকাশ না করে বলেন, খায়রুল আলম চৌধুরী কোন পদপদবী ছাড়া ক্ষমতাহীন একজন মানুষ। তিনি আলোচনায় থাকতে এসব ভ্রান্ত কথাবার্তা বলছেন। আগামীতে তিনি আরও অনেক বেফাঁস কথাবার্তা বলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বারোটা বাজাবেন বলে মন্তব্য করেন।

তার মতে, খায়রুল আলম চৌধুরী একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। আর এই বিতর্কিত ব্যক্তিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জামায়াত আমীরের জন্য একসাথে ভোট খুঁজছেন, যা হাস্যকর। এটা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে ডুবানোর একটি অকৌশল ও ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন ওই নেতা।

তৃণমূল আওয়ামী লীগের এই নেতা খায়রুল আলম চৌধুরীর বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদার প্রতি অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে খাইরুল আলম চৌধুরীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

উখিয়া-টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দু রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিএনপি নেতার সমর্থন চাওয়ার বিষয়টি লজ্জাকর ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোটের জন্য বিএনপির বিতর্কিত নেতার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, সাধারণ মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ জিতবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

আ.লীগ সভাপতি ও জামায়াত আমীরের জন্য ভোট খুঁজছেন বিতর্কিত বিএনপি নেতা!

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫০:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনের বাতাস শুরু হওয়ার পর থেকে মাঠ দখলে রেখেছেন আওয়ামী লীগের একক মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত বিএনপি নেতা খায়রুল আলম চৌধুরী।

রমজানে একাধিক ইফতার মাহফিল ও আওয়ামী লীগের দলীয় মিটিংয়ে খায়রুল আলম চৌধুরীর সরব উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে। যদিও দলীয় এসব প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদার উপস্থিতি দেখা যায়নি। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কানাঘুঁষা ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

এদিকে এতোদিন ধরে খায়রুল আলম চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্য পাড়া মহল্লা চষে বেড়ালেও গত রবিবার হঠাৎ করেই উপজেলা জামায়াতের আমীর মৌলানা আবুল ফজলকে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করে তার জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। আবুল ফজলের নির্বাচনী মিটিংয়ে তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির অনুমতি নিয়ে এসেছেন বলে দাবী করেন।

তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির বরাদ দিয়ে বলেন, মৌলভী আবুল ফজল কে প্রার্থী করার বিষয়ে তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেছেন। তারা সম্মতি দিয়েছেন।

আবুল ফজল এর মিটিংয়ে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্য বলেন, জামায়াত আমীর আবুল ফজলের পাশাপাশি তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্যও ভোট করবেন। তিনি আরও বলেন, তিনি স্বার্থের জন্য সবসময় ক্ষমতার সাথে থাকেন। এমপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে সর্ম্পক রাখেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তন হয়ে যে কোন দল ক্ষমতায় আসলে তিনি সাথে সাথে তাদের দলে যোগ দেবেন বলে ঘোষণা দেন।

ফলে খায়রুল আলম চৌধুরীর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার সাথে সাথে সর্বত্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সাবেক এমপি আস্কারা পেয়ে বেপরোয়া কথাবার্তা বলছেন খায়রুল আলম চৌধুরী। তিনি বিএনপি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর ক্ষতি করছেন। পাশাপাশি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে কৌশলে বিতর্কিত করছেন। এখনই খায়রুল আলম চৌধুরীর মুখের লাগাম টেনে ধরার দাবী জানান ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

আওয়ামী লীগের আরেকজন ওয়ার্ড সভাপতি নাম প্রকাশ না করে বলেন, খায়রুল আলম চৌধুরী কোন পদপদবী ছাড়া ক্ষমতাহীন একজন মানুষ। তিনি আলোচনায় থাকতে এসব ভ্রান্ত কথাবার্তা বলছেন। আগামীতে তিনি আরও অনেক বেফাঁস কথাবার্তা বলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বারোটা বাজাবেন বলে মন্তব্য করেন।

তার মতে, খায়রুল আলম চৌধুরী একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। আর এই বিতর্কিত ব্যক্তিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জামায়াত আমীরের জন্য একসাথে ভোট খুঁজছেন, যা হাস্যকর। এটা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে ডুবানোর একটি অকৌশল ও ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন ওই নেতা।

তৃণমূল আওয়ামী লীগের এই নেতা খায়রুল আলম চৌধুরীর বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদার প্রতি অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে খাইরুল আলম চৌধুরীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

উখিয়া-টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দু রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিএনপি নেতার সমর্থন চাওয়ার বিষয়টি লজ্জাকর ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে সারা দেশে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোটের জন্য বিএনপির বিতর্কিত নেতার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, সাধারণ মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ জিতবে।