ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের খামার পাড়ায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। গত ২২ মে (বুধবার) ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বারের উপর প্রকাশ্যে হামলা হলেও এতে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মাঠে নেমেছে এদের গড ফাদারগন।
এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার বিকালে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নূরুল আলমকে পথ আগলে মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসী রেজাউলের নেতৃত্বাধীন ইয়াবা কারবারীরা। ঘটনার পর এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু ঘটনার পরপরই সন্ত্রাসী গ্রুপের নিয়ন্ত্রক কয়েকজন গড ফাদার তাদের রক্ষায় মাঠে নামে। ফলশ্রুতিতে ৪/৫ দিন গড হয়ে গেলেও এরা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে।
এলাকার কতিপয় গড ফাদারের নিয়ন্ত্রণাধীন কিশোর গ্যাং সদস্যরা এখানে প্রকাশ্যেই বিক্রি করছে মরণ নেশা ইয়াবা।
বিভিন্ন মামলায় জেলফেরৎ রেজাউলের নেতৃত্বে ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের খামার পাড়া ও মিয়াজী পাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে এ অপকর্ম চলে আসলেও তার নিয়ন্ত্রকরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। এদের কারন আইন শৃংখলা পরিস্থিতিরও চরম অবনতি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্হানীয়রা।
অভিযুক্ত রেজাউল করিম জালালাবাদ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের খামার পাড়ার মোজাফফর আহমদের ছেলে।
অনুসন্ধানে প্রকাশ, চাঞ্চল্যকর ধর্ষন মামলায় কয়েকমাস আগে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ১ থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করলে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে গত ২৯ মার্চ ঈদগাঁও থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর গডফাদাররা মামলার বাদীকে চাপপ্রয়োগ করে তাকে জামিনে মুক্ত করে আনে। এলাকায় এসে ফের মাদক বিকিকিনি ও চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে সে।
এলাকাবাসী জানান, তার নিয়ন্ত্রনাধীন অপরাধী সিন্ডিকেট মাদকের টাকা যোগাড় করতে গৃহস্থ বাড়ির মুরগী চুরি, নলকূপ চুরি ও সুযোগ বুঝে ছিনতাইয়ের মত ঘটনা ঘটাছে প্রতিনিয়ত।
তার নেতৃত্বে এলাকার বিপথগামী একাধিক কিশোর গ্যাং কর্তৃক খুঁচরা মাদক বিকিকিনি ও সেবন, জমি দখল এবং যখন তখন যে কাউকে হামলা করা এখানে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভূক্তভোগীরা জানান, গত সুপারী উৎপাদন মৌসূমে কাঁচা সুপারীর দাম বেশী থাকায় প্রায় প্রতি রাতে বিভিন্ন গৃহস্থ বাড়ীর বাগান থেকে সুপারী চুরি করে এরা। এ ছাড়াও গৃহপালিত হাঁস মুরগী চুরি হয় প্রায় রাতেই।
কিছুদিন আগে পূর্ব ফরাজী পাড়ার এক বাড়ীর আঙ্গিনা থেকে নলকূপ চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরের দল।
সূত্রে প্রকাশ, সন্ধ্যার পর থেকেই এখানে সক্রিয় হয়ে উঠে একাধিক চোরের দল। অর্ধরাত নাগাদ গ্রামের বিভিন্ন দোকানে আড্ডা দিয়ে রাত গভীর হলে শুরু করে চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্ম।
এলাকাবাসী জানান, রেজাউল করিম ও তার সহযোগীরা সবাই মাদকাসক্ত। ইয়াবা সেবনের টাকা যোগাড় করতেই চুরি-ডাকাতির মত অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
পূর্ব ফরাজী পাড়া মনজুর মৌলভীর দোকান সংলগ্ন ভাঙ্গা ব্রীজের নীচে দিনের বেলায়ও এরা ইয়াবা নিয়মিত সেবনের আসর বসায় রেজাউল।
তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মাদক কারবারের গডফাদারদের নাম বেরিয়ে আসবে।
এলাকাবাসী জানান, এদের মধ্যে রেজাউল ও তার সিন্ডিকেট প্রায় প্রকাশ্যেই সারা বছর খুঁচরা ইয়াবা বিক্রি করে। এসব বিষয় এলাকায় ওপেন সিক্রেট হলেও তাদের কোমরে সবসময় ধারালো ছুরি থাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে পূর্ব মিয়াজী পাড়ায় মোরশেদ নামক এক টমটম চালককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এদের কারনে এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি তলানীতে ঠেকছে।
এ ছাড়াও স্কুল মাদ্রাসাগামী ছাত্রীদের ইভটিজিং করে এরা। কেউ এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই সংঘবদ্ধভাবে তেড়ে আসে।
ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, সন্ত্রাসীদের আটক করতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।