০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদগাহ হাইস্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্র, ইউনএনওকে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে ব্যবহার করে মহলটি তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা করছে। এতে স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার পথে। তাই স্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ ও শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী পরিষদ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় স্কুলের ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা চলমান পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সমাধানের লক্ষ্যে যৌক্তিক দাবি সমূহ নিয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ১৯৯৮ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মামুন সিরাজ মজিদসহ আরও অনেকেই।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী মামুন সিরাজ মজিদ বলেন, ৫ই অগাস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পট পরিবর্তন হলে সারাদেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে। তারই অংশ হিসেবে বিগত ২৮ আগস্টের পর থেকে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ দাবি করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কিছু অংশ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করলে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইউএনও সুবল চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপণে প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত কে স্কুলের যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্ম থেকে সাময়িক বিরত থাকার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের জন্য স্থাপন করা হয় অভিযোগ বক্স। তারই প্রেক্ষিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্কুলের সুনাম ও ভাবমূর্তি যাতে বিনষ্ট না হয়, সেজন্য ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও যৌক্তিক দাবী উত্থাপন করা হয়।

২০১২ ব্যাচের পক্ষে আনিসুল হক ছোট্টো জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশনা অমান্য করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে ব্যবহার করা হয়েছে। যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ আদায় করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করছে, তারা স্কুলের শত্রু। তাদের জন্যেই এই বিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পথে। তাদের সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানান তিনি।

২০১৪ ব্যাচের পক্ষে বেলাল বলেন, আমরা কোন অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির পক্ষে নয়, কিন্তু যে সকল কুচক্রি মহল স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করবে।

২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সবুজ জানান, প্রধান শিক্ষক অন্যায় করলে তার ধারাবাহিক নিয়মে অভিযোগ করার সুযোগ আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করাতে হবে। অপরাধ করলে তার শাস্তি আমরাও চাই। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কে সরিয়ে যারা প্রধান শিক্ষক হওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তারাও সুবিধার নয়।

২০১৬ ব্যাচের তুহিন বলেন, ২০১২ সালের পূর্বের অবহেলিত একটা স্কুলকে যিনি আধুনিকায়ন করে বিভাগীয় সম—মানের মর্যাদায় নিয়ে এসেছেন তিনি প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত। তার অবদান কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। কেউ অনিয়ম করলে তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু কোন শিক্ষক যাতে প্রতিহিংসার শিকার না হয়।

এসময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্মারকলিপির মূল বিষয় উপস্থাপন করেন ২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিহাদ। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষা ও ধারাবাহিক এই অগ্রযাত্রা যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগ বক্স গতকাল সিলগালা করা হয়েছে। পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যেসকল অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জমা পড়েছে তার সূত্র ধরেই নিরপেক্ষ তদন্ত চালাবে তদন্ত কমিটি। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও কামনা করেন ইউএনও।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

চকরিয়ায় বসতভিটা ও দোকান দখলের জন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট: আহত ৫

ঈদগাহ হাইস্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্র, ইউনএনওকে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

প্রকাশিত সময় : ০৩:৫৬:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে ব্যবহার করে মহলটি তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা করছে। এতে স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার পথে। তাই স্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ ও শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী পরিষদ।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় স্কুলের ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা চলমান পরিস্থিতি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সমাধানের লক্ষ্যে যৌক্তিক দাবি সমূহ নিয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ১৯৯৮ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মামুন সিরাজ মজিদসহ আরও অনেকেই।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী মামুন সিরাজ মজিদ বলেন, ৫ই অগাস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পট পরিবর্তন হলে সারাদেশব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে। তারই অংশ হিসেবে বিগত ২৮ আগস্টের পর থেকে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ দাবি করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কিছু অংশ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করলে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইউএনও সুবল চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপণে প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত কে স্কুলের যাবতীয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্ম থেকে সাময়িক বিরত থাকার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের জন্য স্থাপন করা হয় অভিযোগ বক্স। তারই প্রেক্ষিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্কুলের সুনাম ও ভাবমূর্তি যাতে বিনষ্ট না হয়, সেজন্য ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও যৌক্তিক দাবী উত্থাপন করা হয়।

২০১২ ব্যাচের পক্ষে আনিসুল হক ছোট্টো জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশনা অমান্য করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে ব্যবহার করা হয়েছে। যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ আদায় করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করছে, তারা স্কুলের শত্রু। তাদের জন্যেই এই বিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পথে। তাদের সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানান তিনি।

২০১৪ ব্যাচের পক্ষে বেলাল বলেন, আমরা কোন অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির পক্ষে নয়, কিন্তু যে সকল কুচক্রি মহল স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করবে।

২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সবুজ জানান, প্রধান শিক্ষক অন্যায় করলে তার ধারাবাহিক নিয়মে অভিযোগ করার সুযোগ আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করাতে হবে। অপরাধ করলে তার শাস্তি আমরাও চাই। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কে সরিয়ে যারা প্রধান শিক্ষক হওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তারাও সুবিধার নয়।

২০১৬ ব্যাচের তুহিন বলেন, ২০১২ সালের পূর্বের অবহেলিত একটা স্কুলকে যিনি আধুনিকায়ন করে বিভাগীয় সম—মানের মর্যাদায় নিয়ে এসেছেন তিনি প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত। তার অবদান কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। কেউ অনিয়ম করলে তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু কোন শিক্ষক যাতে প্রতিহিংসার শিকার না হয়।

এসময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্মারকলিপির মূল বিষয় উপস্থাপন করেন ২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিহাদ। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষা ও ধারাবাহিক এই অগ্রযাত্রা যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।

ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগ বক্স গতকাল সিলগালা করা হয়েছে। পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যেসকল অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে জমা পড়েছে তার সূত্র ধরেই নিরপেক্ষ তদন্ত চালাবে তদন্ত কমিটি। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও কামনা করেন ইউএনও।