উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উখিয়ার ঘাট কাস্টমস এলাকায় প্রতারক, বখাটে অবাধ্য এক ছেলে ও এক কন্যা,পুত্রবধু,নাতির হাতে শারীরিক ও মানুষিক অত্যাচারের শিকার হয়ে আসছেন এক দম্পতি বৃদ্ধ বাবা-মা।বাবা-মা'কে বহুবার শারীরিক ভাবে মেরে রক্তাক্ত যখম করার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় একাধিক অভিযোগ এবং এজাহার দিয়েও প্রতিকার পায়নি বাবা-মা।উপরন্তু দিন-দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে চলছে।ছেলে,ছেলের বউ,ছেলের সন্তান ও এক কন্যা সন্তানের হাতে নির্মমতার শিকার বৃদ্ধ পিতা মো:শফি ও নুরুচ্ছাফা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,ছেলে মোহাম্মুদুল হক আমার বাড়িতে বারান্দায় বসবাস করে আসছেন,তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার একজন ভয়ংকর নারী।তার ৪ টি ছেলে সন্তান থাকায়,তার দুলাভাইয়ের অনৈতিক হস্তক্ষেপ আর অহংকার করে কথায়-কথায় পারিবারিক বিষয়ে মারধর করে আসছেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত কয়েক বছর ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে অজুহাত তুলে কথায়-কথায় মারধর ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে আসছেন ছেলে মোহাম্মুদুল হকের পরিবার।আর কন্যা স্বামী পরিত্যক্তা রোশন আরা বাবার নিকট থেকে হাওলাত নেওয়া,জমা রাখা সহ প্রায় প্রায় ৩ লাখের বেশী টাকা আত্মসাৎ, ভিটি জায়গা দখল ও পারিবারিক ভাবে চলাচলের পথ দখল করে রেখে গোপন বিক্রির পায়ঁতারা করে আসছেন। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বৃদ্ধা-বৃদ্ধা বাবা-,মাকে মেরেছেন রোশন আরা।ছেলে মোহাম্মুদুল হক,তার স্ত্রী ও পুত্ররা মিলে গত ৪ অক্টোবর মাতা নুরুচ্ছাফাকে মেরে শরীরের বিভিন্ন অংগে রক্তাক্ত যখন করে গলায় গামছা পেঁছিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যাপক মারধর করেন।স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় একটি তলির গর্ত থেকে উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করান,অবস্থার অবনতি দেখে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলেও আর্থিক সংকটে ভোগেই বাসায় চিকিৎসা গ্রহণ করে আসছেন মাতা নুরুচ্ছাফা।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওইদিনই উখিয়া থানায় অভিযোগ দেওয়া হয় অবাধ্য ছেলে মোহাম্মদুল হক,পুত্রবধু নাসিমা আক্তার,নাতি সাইদুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম সহ অজ্ঞাত ২/৩ জনের বিরুদ্ধে।অভিযোগ পালটিয়ে ওসি তদন্ত এজাহার দিতে বলেন এবং মামলা রেকর্ড পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ৯ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা জিডি হিসেবে লিপিবদ্ধ করে কোর্টে পাঠিয়ে দেন।পরবর্তী গত ৩০ অক্টোবর আদালত সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য উখিয়া থানার ওসি'কে আদেশ দেন।৩১ অক্টোবর মামলা হিসেবে গ্রহণ করার পর ২ অক্টোবর রাতে এজাহার নামীয় ১ ও ২ নং আসামী সাইদুল ইসলাম এবং সাইফুল ইসলাম কে বাড়ি থেকে উখিয়া থানা পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করেন।দুই আসামী গ্রেফতারের সময় আসামীরা ও আসামীর মাতা নাসিমা এবং অপর এক ভাই রবিউল আলম বৃদ্ধা নুরুচ্ছাফা,মো:শফি ও ছেলে গফুর কে খুন করিবে মর্মে পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়।ধৃত দুই আসামীকে নিয়ে পুলিশ চলে যাওয়ার পরপরই মামলার ৩ নং আসামী নাসিমা আক্তার, তার ছেলে রবিউল আলম বৃদ্ধ মো: শফিকে ফের মারধর করে মাটিতে লুটিয়ে ফেলে।আহত অবস্থায় রাতে উখিয়া থানায় গেলে, সেখানে ৩ নং আসামী নাসিমা, তার দুলাভাই ভালুকিয়ার ফৈজাবাপের পাড়ার মৃত ফজল করিমের ছেলে আবু তাহের,আবু তাহেরের দ্ধিতীয় স্ত্রীর ছেলে আপেল সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন লোক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করার চেষ্টা চালায় মো:শফি,মামলার বাদী নুরুচ্ছাফা এবং ছেলে গরুরের উপর।তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল নোমানের উপস্থিতিতে প্রানে রক্ষা পান আহত বৃদ্ধারা।
পুর্বের ঘটনার বিষয়ে পালংখালী ইউপির ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আলম ও মহিলা মেম্বার নুর বানু জানান,ইউনিয়ন পরিষদে দাখিল করা আবেদনেফ প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম দুইবার,আসামী পক্ষ কারো কথা শুনেনা এবং শালিস-বিচার মানে না,আমরা এই বিচার করতে পারবো না।বালুখালী পুলিশ ফাঁড়ি'র এএসআই মোজাম্মেক হক বলেন,সদ্য বদলি হয়ে যাওয়া ওসি শামীম স্যার বরাবর দেওয়া একটি অভিযোগ রয়েছে।একবার তদন্তে গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি,একবার বৈঠকে বসা হয়েছিল,বিবাদী পক্ষ কারো কথা মানে না।
আদালতের নির্দেশে উখিয়া থানায় রেকর্ড করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন,দুই আসামী গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠিয়েছি।
তদন্ত পুর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উখিয়া থানার ওসি তদন্ত মো: শফিকুল ইসলাম বলেন,বাবা-মায়ের উপর মারধর করা ছেলে সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।এ দিকে আসামীদের পুর্ব থেকেই বহুবার মারধর, অব্যাহত হুমকি, এবং জামিনে একজন আসামী মুক্তি পাওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে গালিগালাজ করে যাচ্ছে আসামীরা।ফলে তাদের অব্যাহত প্রাননাশের হুমকিতে বৃদ্ধ মো: শফি-নুরুচ্ছাফা দম্পতি ও ছেলে গফুর চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।আমাদের উপর বার বার হামলা,বাড়িতে ভাংচুর,মারধর,হুমকির জন্য পুত্রবধু নাসিমা আক্তার, তার দুলাভাই আবু তাহেরই সবচেয়ে বেধী দায়ী।আবু তাহের কোন স্বার্থে এহেন কর্মকান্ড ঘটাচ্ছেন,আর রাত-বিরাতে কেন গোপনে আমাদের অগোচরে আসছেন?।তারা যেকোন সময় মেরে ফেলার মত ঘটনা ঘটাতে পারে আশংকা করছি।পরিত্রানে বৃদ্ধ দম্পতি মাননীয় জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।