০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উখিয়ায় মুসলিম পরিচয়ে সাতকানিয়ার হিন্দু যুবক বাবলু কর্মকারের বিয়ে!

কক্সবাজারের উখিয়ার মরিচ্যায় মুসলিম পরিচয়ে হিন্দু যুবকের বিয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে সাতকানিয়ার ওই হিন্দু যুবক জিবীকার তাগিদে আসেন উখিয়ায়। উপজেলার মরিচ্যা বাজারে একটি মুদির দোকানে কর্মচারির চাকরি নেন।পরে মুসলিম পরিচয়ে ওই হিন্দু যুবক এনজিওকর্মী এক মুসলিম নারীর সাথে পরিচয়, প্রেম, বিয়ে-সংসার পেতেই সন্তান জন্মদানের পরপরই তথ্য গোপনের ঘটনা ফাঁস হয়।এরপর সেই প্রেমিক যুগল রহস্যজনকভাবে এলাকা থেকে লাপাত্তা। ঘটনাটি সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার রঙিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভদ্র কর্মকারের ছেলে বাবলু কর্মকার(২৬)একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী।মরিচ্যা বাজারে নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে পরিচিত করে তুলেন নিজেকে। বাবলু মরিচ্যা বাজারের একটি মুদির দোকানে কর্মচারী ছিলেন। প্রায়শ:ওই দোকানে সদায় করতে আসতেন ব্র্যাক অফিসের মাঠ কর্মী রিফা সুলতানা। আসা-যাওয়ায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।এলাকাবাসী ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়,বাবলু নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে, মুসলিম পরিচয়ে রিফা সুলতানার সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন।তার বেশ ভুষা,চালচলন,আচরণ এমনই ছিল, কেউই সন্দেহ করেতে পারেন নি,সে মুসলিম নন।নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে তুলে ধরার কৌশলেই তিনি রিফার মন জয় করেন, তাকে বশ করে নিজের আয়ত্তে নেন।।

এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা গোপনে বিবাহ সম্পাদন করেন।বিয়ের পর বাবলু ও রিফা দম্পতি শহরের কোলাহল ছেড়ে দূরে একটি পাহাড়ি জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার জীবনের বসবাস শুরু করেন। তাদের সংসার জীবন শুরুর দিক থেকেই অনেকের লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে চেষ্টা করেন।তাদেরকে সেখানে অনেকেই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে চিনতো এবং জানতো।তবে তারাও জানতেন না যে, বাবলুর প্রকৃত ধর্মীয় পরিচয় কি?।দাম্পত্য জীবনের কিছু সময় পর রিফা সুলতানা সন্তান সম্ভবা হন।

এ সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সন্দেহ হলে রিফা খোঁজ নিতে শুরু করেন বাবলু’র ব্যাপারে। এক পর্যায়ে সেও জানতে পারেন,তার স্বামী বাবলু আসলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী।এ খবরে রিফা সুলতানাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে, সে তৎক্ষণাৎ কিছুই করতে পারছিলেন না।বাবলুর প্রকৃত পরিচয় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা,উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই এমন প্রতারণামূলক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশর বলেন, আমরা সবাই বাবলুকে মুসলিম হিসেবে জানতাম। তার সাথে আমাদের সম্পর্কও সেই পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করেই ছিল। পরে জানতে পারি,সে আসলে হিন্দু, বিষয়টি শুনে আমরা অবাক।

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীদের অনেকেই জানান, ঘটনার পরপরই রাতের আঁধারে তারা পুর্বের বাসাটি ছেড়ে গোপনে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর মতে, এমন প্রতারণামূলক ঘটনায় তাদের ক্ষোভ রয়েছে, এ ব্যাপারে তারা সামাজিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ব্র্যাক অফিসের ম্যানেজার লিটন জানান, রিফা সুলতানা আমাদের অফিসের একজন পুরনো কর্মী। প্রায় ৫-৬ বছর ধরে সে এখানে দায়িত্ব পালন করতো। হঠাৎ একদিন এসে জানায়, সে আর চাকরি করবে না,কক্সবাজারের বাসায় ফিরে যাবেন।এরপর থেকে তার সাথে আমাদের আর যোগাযোগ নেই।
এ ঘটনার জন্মদাতা বাবলু কর্মকারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও,তার ফোন বন্ধ, এলাকা থেকে উধাও,তাই কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

জমে উঠেছে বৃহত্তর বাদশাঘোনা সমাজ পরিচালনা কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা

উখিয়ায় মুসলিম পরিচয়ে সাতকানিয়ার হিন্দু যুবক বাবলু কর্মকারের বিয়ে!

প্রকাশিত সময় : ০৭:১২:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের উখিয়ার মরিচ্যায় মুসলিম পরিচয়ে হিন্দু যুবকের বিয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামে সাতকানিয়ার ওই হিন্দু যুবক জিবীকার তাগিদে আসেন উখিয়ায়। উপজেলার মরিচ্যা বাজারে একটি মুদির দোকানে কর্মচারির চাকরি নেন।পরে মুসলিম পরিচয়ে ওই হিন্দু যুবক এনজিওকর্মী এক মুসলিম নারীর সাথে পরিচয়, প্রেম, বিয়ে-সংসার পেতেই সন্তান জন্মদানের পরপরই তথ্য গোপনের ঘটনা ফাঁস হয়।এরপর সেই প্রেমিক যুগল রহস্যজনকভাবে এলাকা থেকে লাপাত্তা। ঘটনাটি সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার রঙিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভদ্র কর্মকারের ছেলে বাবলু কর্মকার(২৬)একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী।মরিচ্যা বাজারে নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে পরিচিত করে তুলেন নিজেকে। বাবলু মরিচ্যা বাজারের একটি মুদির দোকানে কর্মচারী ছিলেন। প্রায়শ:ওই দোকানে সদায় করতে আসতেন ব্র্যাক অফিসের মাঠ কর্মী রিফা সুলতানা। আসা-যাওয়ায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।এলাকাবাসী ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়,বাবলু নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে, মুসলিম পরিচয়ে রিফা সুলতানার সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন।তার বেশ ভুষা,চালচলন,আচরণ এমনই ছিল, কেউই সন্দেহ করেতে পারেন নি,সে মুসলিম নন।নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে তুলে ধরার কৌশলেই তিনি রিফার মন জয় করেন, তাকে বশ করে নিজের আয়ত্তে নেন।।

এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা গোপনে বিবাহ সম্পাদন করেন।বিয়ের পর বাবলু ও রিফা দম্পতি শহরের কোলাহল ছেড়ে দূরে একটি পাহাড়ি জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার জীবনের বসবাস শুরু করেন। তাদের সংসার জীবন শুরুর দিক থেকেই অনেকের লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে চেষ্টা করেন।তাদেরকে সেখানে অনেকেই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে চিনতো এবং জানতো।তবে তারাও জানতেন না যে, বাবলুর প্রকৃত ধর্মীয় পরিচয় কি?।দাম্পত্য জীবনের কিছু সময় পর রিফা সুলতানা সন্তান সম্ভবা হন।

এ সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সন্দেহ হলে রিফা খোঁজ নিতে শুরু করেন বাবলু’র ব্যাপারে। এক পর্যায়ে সেও জানতে পারেন,তার স্বামী বাবলু আসলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী।এ খবরে রিফা সুলতানাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে, সে তৎক্ষণাৎ কিছুই করতে পারছিলেন না।বাবলুর প্রকৃত পরিচয় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা,উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই এমন প্রতারণামূলক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশর বলেন, আমরা সবাই বাবলুকে মুসলিম হিসেবে জানতাম। তার সাথে আমাদের সম্পর্কও সেই পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করেই ছিল। পরে জানতে পারি,সে আসলে হিন্দু, বিষয়টি শুনে আমরা অবাক।

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীদের অনেকেই জানান, ঘটনার পরপরই রাতের আঁধারে তারা পুর্বের বাসাটি ছেড়ে গোপনে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর মতে, এমন প্রতারণামূলক ঘটনায় তাদের ক্ষোভ রয়েছে, এ ব্যাপারে তারা সামাজিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ব্র্যাক অফিসের ম্যানেজার লিটন জানান, রিফা সুলতানা আমাদের অফিসের একজন পুরনো কর্মী। প্রায় ৫-৬ বছর ধরে সে এখানে দায়িত্ব পালন করতো। হঠাৎ একদিন এসে জানায়, সে আর চাকরি করবে না,কক্সবাজারের বাসায় ফিরে যাবেন।এরপর থেকে তার সাথে আমাদের আর যোগাযোগ নেই।
এ ঘটনার জন্মদাতা বাবলু কর্মকারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও,তার ফোন বন্ধ, এলাকা থেকে উধাও,তাই কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।