আগে দলীয় সরকারের প্রভাব খাটিয়ে,ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাদের ব্যবহার করে
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ঘুমধুম পয়েন্ট দিয়ে উভয় মুখী পাচারযজ্ঞ চালাতো
চোরাকারবারিরা।গত ৫ আগষ্টের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় নিরপেক্ষ অন্তর্বতীকালীন সরকার।এখন কি পাচারযজ্ঞ বন্ধ হবে?এমন প্রশ্ন সীমান্তের দেশপ্রেমিক জনতার।সাম্প্রতিক সময়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ও ঘুমধুম সীমান্তে একাধিক বিপুল পরিমাণের আইস ও ইয়াবার চালান জব্দ করেছে বিজিবি।তাতে বোঝা যাচ্ছে উভয়মুখী পাচারযজ্ঞ থেমে নেই।সম্প্রতি ঘুমধুম সীমান্তের পাচারকারী সিন্ডিকেটের সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু বক্কর আরো ৪জন সহযোগী নিয়ে ইয়াবা সহ ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হলেও সিন্ডিকেটের গডফাদাররা বরাবরই অধরাই থেকে যাছে।বক্কর ১৩ আগষ্ট রাত ৮ টার দিকে ৩০ বিজিবি'র রামুর মরিচ্যা চেকপোস্টে তারা গ্রেফতার হন।আবু বক্কর ঘুমধুম সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারি।তাদের চোরাই কারবারের বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে।কালো টাকার জোরে বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যেতো।আবু বক্কর সহ তাদের সিন্ডিকেটের অপরাপর সদস্যরা মিয়ানমারের কাটা তাঁর মাড়িয়ে মিয়ানমারে জ্বালানী তেল সহ প্রয়োজনীয় সব পণ্যসামগ্রী পাচারের ভিডিও চিত্র এ প্রতিবেদকের সংরক্ষণে রয়েছে।তাদের পাচার যজ্ঞ নিয়ে জাতীয়,আঞ্চলিক ও স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল সংবাদ প্রচার হয়।ঘুমধুম সীমান্তে যতসব চোরাকারবারি সিন্ডিকেট রয়েছে,তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বিনিয়োগ রয়েছে আবু বক্করের।তাদের সিন্ডিকেটের সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু বক্কর।জকির-আবু বক্করদের নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট উভয়মুখী পাচারে জড়িত।জড়িত ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের প্রায় সব দোকান।আর পাচার নির্বিঘ্ন করতে সীমান্ত এলাকায় নতুন করে দিন-দিন গজে উঠছে নতুন-নতুন দোকান।সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ ঘুমধুমের নোয়াপাড়া, মন্ডল পাড়া,মধ্যম পাড়া,পুর্বপাড়া,জলপাইতলী,খিজারীঘোনা,তেতুলগাছতলা লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন পাড়া,তুমব্রু পশ্চিমকুল,পাহাড়পাড়া,বাজার পাড়া,ফকিরা ঘোনা,কোনার পাড়া,উত্তর পাড়া,ভাজাবনিয়া,
চাকমা পাড়া,বাইশফাঁড়ীর প্রায় প্রতি পরিবারের কোন না সদস্য মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত কেন্দ্রিক উভয়নুখী পাচারে জড়িত।এমন কোন দিন বা রাত নেই মিয়ানমারে পাচার হচ্ছেনা।
প্রতিদিন রাতের আধারে মিয়ানমারে পাচার করছে কোটি টাকার পণ্য।সবচেয়ে পাচারের নিরাপদ রুট ঘুমধুম সীমান্ত।দিবারাত্রি কোটি-কোটি টাকার নানা পণ্য সামগ্রী পাচার হয়ে গেলেও সীমান্তের রক্ষী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিচ্ছে চোরাকারবারিরা। তবে অসমর্থিত সুত্রে জানা যায়,সব কিছুতেই টাকার জোরে নির্বিঘ্ন পাচারযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে চোরাকারবারিরা।প্রতিরাতে ঘুমধুম সীমান্তে পাচার করা বিভিন্ন পণ্যের শ্রমিক পিছু টাকা উত্তোলন করা হয়।প্রতিরাতে টাকা উঠে ২ থেকে তিন লাখ টাকা।ওই টাকার অংশ আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনের নেতা পরিচয়ধারী ব্যক্তি,জনপ্রতিনিধি,স্থানীয় দুয়েক সাংবাদিক(যারা পাচারে মিডিয়াও করে থাকেন)কতিপয় দালাল চক্র সহ বিভিন্ন জনের পকেটে পৌছে যায়।
ফলে চোরাকারবারিদের কালো টাকার জোরে ঘুমধুম সীমান্ত যেন তাদের অবাধ বিচরণের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে সীমান্ত।প্রতি দিবারাত্রি পাচারের ফলে চোরাকারবারি ও সুবিধাভোগীরা লাভবান হলেও খেসারত দিতে হচ্ছে স্থানীয় ভোক্তা-সাধারণদের।তাদের চড়া দামে নিত্যপণ্য সামগ্রী ক্রয় করতে হচ্ছে।আর উখিয়া ও কুতুপালংয়ের কিছু দোকানী মিয়ানমারে পাচারের সাথে প্রতেক্ষ্যভাবে জড়িত।সুবিধাভোগীদের আস্কারায় প্রতি দিবারাত্রি ওপারে বানের পানির মত পাচার হচ্ছে সরকারের ভর্তুকি দেয়া জ্বালানী তেল অকটেন,দামী মোবাইল সেট,সিম,মোবাইল সামগ্রী,ব্লেড,ইউরিয়া সার,ভোজ্যতেল,চাল,ডাল,শাকসবজি,গাছ,বাঁশ,সাবান,মরিচ,হলুদ,বিড়ি সহ নানা খাদ্যপণ্য সামগ্রী।বিনিময়ে ওপার থেকে বানের পানির মত নিয়ে আসছে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া গরু-মহিষ,ছাগল,ইয়াবা,স্বর্ণের বার,তরল মাদক,কাপড়চোপড়, সুপারী,খাদ্যপণ্য,রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করা সহ নিষিদ্ধ সামগ্রী। এসব পাচার যজ্ঞে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট।চিহ্নিত এই সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন ইয়াবা নিয়ে ২০২১ সালে কক্সবাজারে র্যাব-১৫'র হাতে গ্রেফতার হওয়া কথিত বিএনপি নেতা,ঘুমধুম ইউপির ১নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পশ্চিমকুল তেঁতুল গাছতলা লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন ছৈয়দ আলম-সোনা মেহের দম্পতির ছেলে জকির আহমদ।জকিরের নিয়ন্ত্রণে ঘুমধুমের সীমান্ত।তার সিন্ডিকেটে রয়েছে ডাম্প ট্রাক, সিএনজি,টমটম চালক,আওয়ামীলীগ ঘরানার দায়িত্বশীল কয়েক নেতা,মুক্তিযুদ্ধার নাতি,স্থানীয় যুবদলের কয়েক নেতা,তুমব্রু সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছেন পাহাড় পাড়ার জনৈক মুফিজুর রহমান,উত্তর পাড়ার ওবাইদুল,পশিচমকুলের রুহুল আমিন,শফি আলম,তুমব্রুর তারেক,আবুল হাসেম,পাহাড় পাড়ার বার্মাইয়া আবুল হাসেম,বার্মাইয়া বাইট্রা শাহ আলম,হামিদুল,ইমাম হোসেন,খিজারী ঘোনার সাইফুদ্দিন ও আরাফাত ও স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য।পুরো ঘুমধুম সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে এপার থেকে পাচার এবং ওপার থেকে এপারে যতসব পাচার যজ্ঞ চলে,তা সম্পুর্ন নিয়ন্ত্রণ করেন চোরাকারবার সিন্ডিকেটের প্রধান জকির আহমদ।এই সিন্ডিকেটের পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করে রাখা একাধিকবার পণ্য সামগ্রী জকির ও তার ভাইয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় রক্ষী বাহিনী।কিন্তু পাচারকারিরা বরাবরই অধরাই থেকে যায়।ফলে চোরাই মালামালের পাচার যজ্ঞ দ্ধিগুণ উৎসাহে চলমান রেখেছে চোরাকারবারিরা।ওই পাচারকারী সিন্ডিকেটের সুবিধাভোগী হিসেবে নিয়মিত অর্থ পেয়ে থাকেন যুবলীগ-আওয়ামীলীগের স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন এবং স্থানীয় দুইজন মেম্বার(যারা সরাসরি পাচারে জড়িত।আর বিভিন্ন সংস্থার নামে পাচার করা বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর বস্তা প্রতি টাকা উত্তোলন করেন জকির আহমদ।ওইসব টাকা নাকি যেখানে, যেভাবে দিতে হয়,সেভাবে পৌছেই দেন।সব কিছু মিডিয়া করে সে।একাধিক গোয়েন্দাকর্মীর তালিকায় জকির আহমদের নাম রয়েছে। চোরাকারবারি হিসেবে সে চিহ্নিত হলেও প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় রহস্যের দানা বাধছে।ফলে পাচারযজ্ঞও থেমে নেই।প্রতি দিবারাত্রি ঘুমধুম-তুমব্রু আর্মি সড়ক ও বাংলাদেশ-মিয়ামার মৈত্রী সড়ক,বালুখালী কাঁকড়া বীজস্থ বালুখালী-ঘুমধুম খাল দিয়ে বিভিন্ন গাড়ী ও নৌকা যোগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মালামাল।গাড়ী যোগে যাওয়া মালামাল জলপাইতলীর লেডুর আমবাগান পয়েন্ট,
লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন পয়েন্ট,ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি-বাগান পয়েন্ট,তুমব্রু পশ্চিমকুলের রুহুল আমিনের দোকানের সামনে দিয়ে,গোরা মিয়া খলিফার বাড়ির সম্মুখ পয়েন্ট,পশ্চিমকুল কবরস্থান সংলগ্ন মসজিদের পাশ দিয়ে পয়েন্ট,কোনার পাড়া,বাজার পাড়ার পিছনের খালের পয়েন্ট,উত্তর পাড়া,
ভাজাবনিয়া,চাকমা পাড়া ও বাইশফাঁড়ী পয়েন্ট, দিয়ে পাচার হচ্ছে এপারে।আর ওপার থেকে নিয়ে আসছে ইয়াবার বড়-বড় চালান,স্বর্ণের চালান,গরু-মহিষের চালান।সম্প্রতি ঘুমধুমের মধ্যম পাড়া দিয়ে পাচার হয়ে আসার পথে একটি স্বর্ণের বার ও ইয়াবার চালান ছিনতাই করে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের রুবেল সিন্ডিকেটের সদস্যরা।এদিকে গত ৩১ মে দিবাগত রাতে ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পাচার হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশের পথে দুই লাখ পিস ইয়াবার একটি চালান জব্দ করেছে বিজিবি।গত তিন দিনে নাইক্ষ্যংছড়ি ও ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবি'র হাতে আটক হয়েছে বিপুল আইস ও ইয়াবা।সম্প্রতি তুমব্রু পশ্চিমকুল এলাকা থেকে মুদির দোকানী রুহুল আমিনের হেফাজত থেকে মিয়ানমারে পাচার জন্য মজুদ করা বেশ কিছু পণ্য সামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি।
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে পাচার অব্যাহত এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোন আঁচড় না লাগায় দিন-দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা।যেনো ঘুমধুম সীমান্ত তাদের বাপ-দাদার সম্পদ।স্থানীয় যুবক শাহজারুল ইসলাম তৌহিদ তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেছেন পাচারের বিষয়ে।মিয়ানমারে পাচার হওয়া মালামালের প্রতি বস্তায় নাকি বিভিন্ন জায়গায় খরচ দিতে হয়।পাচারকারী সিন্ডিকেটের প্রধান নাকি বলে বেড়াচ্ছেন,তার পাচারের মালামাল কোন সংস্থা ধরলেও বাড়িতে পৌছে দিতে হবে।এমন খবর শোনার পর তৌহিদ ফেসবুকে পোস্ট দেন চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী মাঝে-মধ্যে অল্প কিছু চোরাই মালামাল কোন সংস্থা জব্দ করে সরকারী কোষাগারে জমা দিলেও চিহ্নিত চোরাকারবারিরা বরাবরই অধরাই থেকে যাওয়ায়, তারা আইনের আওতায় না আসায় পাচার যজ্ঞ বন্ধ হচ্ছেনা।ইতিমধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন পাচার রোধে মাঠে তৎপরতা বাড়িয়েছে।বেশ কিছু মালামাল জব্দও করেছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমান্তের রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য জানান,দিবারাত্রি সীমান্তে পাহারায় আছি।পাচাররোধে তাদের চেষ্টার ঘাটতি নেই।মাঝে-মধ্যে জব্দও হচ্ছে।এখন পাচার হচ্ছে এমন কোন খবর নেই।তারপরও চোরাকারবারিরা চোখ ফাঁকি দিচ্ছে।ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া বলেছেন,পাচার রোধ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক পাহারায় রয়েছে।
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে কাটা তাঁর ডিঙ্গিয়ে গাড়ী-গাড়ী, শত-শত লেভার পণ্য সামগ্রী মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে।প্রতিরোধের মুখেও পাচার হচ্ছেনা,এমন পরিস্থিতি লক্ষণীয়।মিয়ানমারে পাচারযজ্ঞ অব্যাহত থাকায় নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া,টেকনাফের বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য আকাশচুম্বী।যে হারে পাচার হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে সংকটে পড়ার আশংকা রয়েছে।সচেতন দেশপ্রেমিক জনতার প্রশ্ন ঘুমধুম সীমান্ত রক্ষায় আরো কোন দেশপ্রেমিক রক্ষক,জন
প্রতিনিধি,রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও নেতৃত্বশীল দেশপ্রেমিক নেতার প্রয়োজন!সীমান্ত এলাকাবাসীর প্রশ্ন আগেই দলীয় সরকারের প্রভাব খাটিয়ে পাচারযজ্ঞ চলতো।এখন নিরপেক্ষ সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন।এখন কি পাচার বন্ধ হবে?এমন প্রশ্ন রাখেন।