মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় উৎপাদন বন্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে বর্তমানে ২ লাখ ৮০ হাজার টন কয়লা রয়েছে। যা দিয়ে এক থেকে দেড়মাস উৎপাদন চালু রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছে কর্মকর্তারা। এছাড়া, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বেহাল অবস্থায় রয়েছে প্রকল্পটি।
মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কেন্দ্রগুলোর কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনা হয়ে থাকে। গত আগস্ট মাসে জাপানি প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি শেষ হয়েছে।
এদিকে, কয়লা শেষ হওয়ার আগেই কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কয়লা কেনার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও আদালতে মামলার কারণে তা আটকে গেছে।
কোলপাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত না করা গেলে দুইমাস পর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।
অপরদিকে এ বিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী কথা বলতে নারাজ। এই দুজনের বিরুদ্ধেই ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। সবশেষ গত ৩০ আগষ্ট তাদের নির্দেশে একটি জাহাজে করে সরিয়ে নেয়ার সময় সেখান থেকে ১৫ কোটি টাকার ক্যাবল জব্দ করে নৌ বাহিনী। এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। এই ঘটনায় আটক হয়েছেন প্রকল্পটির পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
এই প্রকল্পের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আলফাজ উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমানসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ।
প্রকল্পটির সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলফাজ উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সীমানা প্রায় ৯ কিলোমিটারের মতো। নিরাপত্তা বাহিনী প্রকল্পটির নিরাপত্তা দেখভাল করছে।
ক্যাবল জব্দ ইস্যুতে সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মিজানুল হাসান বলেন, কন্টেইনারের মাধ্যমে ক্যাবল নেয়ার সময় গেট পাসের সাথে ক্যাবলগুলোর ইনভয়েস ছিল না।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র যাত্রা শুরু করে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ৩৬৪ কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৬ ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।
কয়লার সংকটে প্রকল্পটি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে জাতীয় গ্রিডে এর প্রভাব পড়বে বলে ধারণা জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের।