০৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোলদিঘী, নাপিতাপুকুর ও লালদিঘী পুকুর সংস্কারের জন্য আর কেউ নেই?

  • এডভোকেট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ
    জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কক্সবাজার।

    বর্তমান সদাশয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কক্সবাজার পর্যটন শহরকে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য আরেকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাহলো কক্সবাজার শহরে অবস্থিত অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা গোলদিঘী, নাপিতাপুকুর, লালদিঘী এই ৩টি পুকুরকে বিদেশী নকশার আদলে শৈল্পিকভাবে সংস্কার করত: জনগণের জন্য ব্যবহার ভৌত উন্নয়ন পূর্বক দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলেন। সরকার পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য সম্প্রতি সময়ে তিনটি পুকুরকে পর্যটক স্পট হিসেবে রূপান্তর করেন। উক্ত ৩টি পুকুরকে সাজানোর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকার শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে বিগত ২/৩ বছর পূর্বে উক্ত ৩টি পুকুরের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ করে ৩টি পুকুরকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। গোলদিঘীতে ওয়াটার মিউজিক, রেস্টুরেন্ট, দর্শাণার্থীদের জন্য বসার সৌন্দর্য্য মন্ডিত গ্যালারী, চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরে রেলিংযুক্ত সিড়ি ইত্যাদি নির্মাণ করা হয়। নাপিতাপুকুরেও সুরম্য দর্শার্ণীদের জন্য চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরে সিড়ি, তার উপরে একটি নয়নাভিরাম দু’তলা বিশিষ্ট পাকা ঘর (অবশ্য ইহা এখনও দর্শাণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি), গণশৌচাগার, দর্শাণার্থীদের জন্য আরও একটি অবকাঠামো ইত্যাদি নির্মাণ করা হয়। লালদিঘীতেও একই কায়দায় সাজানো হয়, সুরম্য লালদিঘী জামে মসজিদ বিল্ডিং, শৈল্পিকযত্নে নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহুতল অফিস ভবন ও দর্শাণার্থীদের জন্য উক্ত লালদিঘীর চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরের সিড়ি স্থাপন পূর্বক অভূতপূর্বভাবে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে উক্ত তিনটি পুকুরকে সুসজ্জিত করা হয়। ইহা একটি বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকারের কক্সবাজার মেগাপ্রকল্পের উন্নয়নের আওতায় মহৎ উদ্যোগ। আমি উক্ত উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। উল্লেখ্য যে, উক্ত ৩টি পুকুর এভাবে ঢেলে সাজানো হয়, যার ফলে পর্যটন শহর কক্সবাজারের সৌন্দর্য্য অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায় এবং তিনটি পুকুর কক্সবাজারের গণমানুষের জন্য মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। কিন্তু অতীব দু:খজনক যে, সম্প্রতি সময়ে যদিও বা তিনটি পুকুরের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় যে, উক্ত পুকুর ৩টি তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা লোকজন হয়তো বা সঠিকভাবে পাহারা না দেওয়ায়, সঠিকভাবে যত্ন ও পরিচর্চার অভাবে গোলদিঘী ও নাপিতা পুকুরের অবস্থা বর্তমানে খুবই বেশি নাজুক। গোলদিঘীর বিভিন্ন স্থানের টাইল্্স গুলো খুলে কে বা কারা নিয়ে গেছে, দর্শাণার্থীদের বসার রেলিংয়ের একাংশ উঠে গেছে। বর্তমানে উক্ত রেলিং কোন রকম আটকিয়ে রাখা হয়েছে, যেকোন সময়ে রেলিংটি চুরি হয়ে যেতে পারে, রেলিংয়ের নেটগুলো ছিড়ে গেছে, জং ধরেছে, লাইট গুলো নষ্ট হয়ে গেছে, লাইটগুলো জ্বলে না। সাউন্ড বক্স গুলোর মধ্যে দু’তিনটি কোথাও উধাও হয়ে গেছে, সাউন্ড বক্স গুলো কাজ করে না, উক্ত সাউন্ডবক্স গুলো ব্যবহার হয়না, নাপিতা পুকুরের অবস্থাও একইরূপ। উক্ত নাপিতা পুকুরের পূর্ব দিকে দেওয়াল স্বরূপ বিল্ডিংয়ের পার্শ্বে যে রেলিং স্থাপন করা হয়েছে, উক্ত রেলিংয়ের নেটগুলো জং ধরেছে, ছিড়ে গেছে। আরাকান সড়কের সাইডে যে রেলিং বসানো হয়েছে, উক্ত রেলিংয়ের লোহার রড গুলো হয়তো বা চুরি হয়ে গেছে, অনেক লোহার রড, উক্ত রেলিং থেকে উধাও হয়ে গেছে। লাইটিং ব্যবস্থাও কিছু আছে কিছু নাই। দীর্ঘদিন যাবৎ এ গুলো মেরামত করা হচ্ছে না। যেন উক্ত পুকুর গুলো মেরামতের জন্য আর কোন কর্তৃপক্ষ নেই। উক্ত পুকুরগুলো এভাবেই অযত্নে অবহেলায় থাকলে অচিরেই ধ্বংস লীলায় পরিণত হয়ে যাবে। তাই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে আহ্বান জানাচ্ছি, অতিস্বত্বর যাতে উক্ত পুকুরগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যথায় নান্দনিক পর্যটন স্পট ৩টি পুকুর ধ্বংস হয়ে গেলে, কক্সবাজারবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

লেখক:
এডভোকেট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কক্সবাজার।
মোবাইল: ০১৮১২—৭১১৪৮৯।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

উখিয়ায় ক্যাম্পে রোহিঙ্গা যুবক’কে গলাটিপে হত্যা!

গোলদিঘী, নাপিতাপুকুর ও লালদিঘী পুকুর সংস্কারের জন্য আর কেউ নেই?

প্রকাশিত সময় : ০২:২১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
  • এডভোকেট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ
    জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কক্সবাজার।

    বর্তমান সদাশয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কক্সবাজার পর্যটন শহরকে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য আরেকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাহলো কক্সবাজার শহরে অবস্থিত অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা গোলদিঘী, নাপিতাপুকুর, লালদিঘী এই ৩টি পুকুরকে বিদেশী নকশার আদলে শৈল্পিকভাবে সংস্কার করত: জনগণের জন্য ব্যবহার ভৌত উন্নয়ন পূর্বক দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলেন। সরকার পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য সম্প্রতি সময়ে তিনটি পুকুরকে পর্যটক স্পট হিসেবে রূপান্তর করেন। উক্ত ৩টি পুকুরকে সাজানোর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকার শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে বিগত ২/৩ বছর পূর্বে উক্ত ৩টি পুকুরের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ করে ৩টি পুকুরকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। গোলদিঘীতে ওয়াটার মিউজিক, রেস্টুরেন্ট, দর্শাণার্থীদের জন্য বসার সৌন্দর্য্য মন্ডিত গ্যালারী, চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরে রেলিংযুক্ত সিড়ি ইত্যাদি নির্মাণ করা হয়। নাপিতাপুকুরেও সুরম্য দর্শার্ণীদের জন্য চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরে সিড়ি, তার উপরে একটি নয়নাভিরাম দু’তলা বিশিষ্ট পাকা ঘর (অবশ্য ইহা এখনও দর্শাণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি), গণশৌচাগার, দর্শাণার্থীদের জন্য আরও একটি অবকাঠামো ইত্যাদি নির্মাণ করা হয়। লালদিঘীতেও একই কায়দায় সাজানো হয়, সুরম্য লালদিঘী জামে মসজিদ বিল্ডিং, শৈল্পিকযত্নে নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বহুতল অফিস ভবন ও দর্শাণার্থীদের জন্য উক্ত লালদিঘীর চতুর্দিকে চধঃযধিু, পুকুরের সিড়ি স্থাপন পূর্বক অভূতপূর্বভাবে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে উক্ত তিনটি পুকুরকে সুসজ্জিত করা হয়। ইহা একটি বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকারের কক্সবাজার মেগাপ্রকল্পের উন্নয়নের আওতায় মহৎ উদ্যোগ। আমি উক্ত উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। উল্লেখ্য যে, উক্ত ৩টি পুকুর এভাবে ঢেলে সাজানো হয়, যার ফলে পর্যটন শহর কক্সবাজারের সৌন্দর্য্য অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায় এবং তিনটি পুকুর কক্সবাজারের গণমানুষের জন্য মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। কিন্তু অতীব দু:খজনক যে, সম্প্রতি সময়ে যদিও বা তিনটি পুকুরের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় যে, উক্ত পুকুর ৩টি তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা লোকজন হয়তো বা সঠিকভাবে পাহারা না দেওয়ায়, সঠিকভাবে যত্ন ও পরিচর্চার অভাবে গোলদিঘী ও নাপিতা পুকুরের অবস্থা বর্তমানে খুবই বেশি নাজুক। গোলদিঘীর বিভিন্ন স্থানের টাইল্্স গুলো খুলে কে বা কারা নিয়ে গেছে, দর্শাণার্থীদের বসার রেলিংয়ের একাংশ উঠে গেছে। বর্তমানে উক্ত রেলিং কোন রকম আটকিয়ে রাখা হয়েছে, যেকোন সময়ে রেলিংটি চুরি হয়ে যেতে পারে, রেলিংয়ের নেটগুলো ছিড়ে গেছে, জং ধরেছে, লাইট গুলো নষ্ট হয়ে গেছে, লাইটগুলো জ্বলে না। সাউন্ড বক্স গুলোর মধ্যে দু’তিনটি কোথাও উধাও হয়ে গেছে, সাউন্ড বক্স গুলো কাজ করে না, উক্ত সাউন্ডবক্স গুলো ব্যবহার হয়না, নাপিতা পুকুরের অবস্থাও একইরূপ। উক্ত নাপিতা পুকুরের পূর্ব দিকে দেওয়াল স্বরূপ বিল্ডিংয়ের পার্শ্বে যে রেলিং স্থাপন করা হয়েছে, উক্ত রেলিংয়ের নেটগুলো জং ধরেছে, ছিড়ে গেছে। আরাকান সড়কের সাইডে যে রেলিং বসানো হয়েছে, উক্ত রেলিংয়ের লোহার রড গুলো হয়তো বা চুরি হয়ে গেছে, অনেক লোহার রড, উক্ত রেলিং থেকে উধাও হয়ে গেছে। লাইটিং ব্যবস্থাও কিছু আছে কিছু নাই। দীর্ঘদিন যাবৎ এ গুলো মেরামত করা হচ্ছে না। যেন উক্ত পুকুর গুলো মেরামতের জন্য আর কোন কর্তৃপক্ষ নেই। উক্ত পুকুরগুলো এভাবেই অযত্নে অবহেলায় থাকলে অচিরেই ধ্বংস লীলায় পরিণত হয়ে যাবে। তাই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে আহ্বান জানাচ্ছি, অতিস্বত্বর যাতে উক্ত পুকুরগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যথায় নান্দনিক পর্যটন স্পট ৩টি পুকুর ধ্বংস হয়ে গেলে, কক্সবাজারবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

লেখক:
এডভোকেট মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কক্সবাজার।
মোবাইল: ০১৮১২—৭১১৪৮৯।