১২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যান্সার স্ক্রিনিং সচেতনতায় অবদান রাখতে চান মালেশিয়ায় পড়ুয়া বাংলাদেশের সৌরজিত

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির বসবাস। দেশটিতে শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ নানান পেশায় জড়িত রয়েছেন বাংলাদেশিরা। মালয়েশিয়ায় বাঙালি প্রবাসীরা নানান ধরণের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তেমনি একজন সৌরজিত বড়ুয়া। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা বড় অংশ রয়েছে যারা এখানে এসে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারেন না। কিন্তু সৌরজিত সেখানে ব্যতিক্রম। তিনি মালয়েশিয়ার অন্যতম সেরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ায়ায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে রেকর্ড সিজিপিএ ৩.৯৮ নিয়ে তার ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন।সৌরজিত রেকর্ড টানা ৫ বার ভাইস-চ্যান্সেলর লিস্ট পুরস্কার সহ মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং পারফরম্যান্স পুরষ্কার এবং ডিন লিস্ট পুরস্কার পেয়েছেন।

তার ঝুলিতে আরো রয়েছে ট্যালেন্টব্যাংক ফিউচার লীডার মালয়েশিয়া ২০২১ পুরস্কার, সেরা বাংলাদেশি ছাত্র মালয়েশিয়া ২০২১ পুরস্কার। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন হাল্ট প্রাইজ ২০২১ (Amherst, USA) এ রিজিওনাল ফাইনালিস্ট, ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ মালয়েশিয়া ২০২১ এবং ন্যাশনাল ফাইনালিস্ট এবং ল’ওরেল ব্র্যান্ডস্ট্রর্ম মালয়েশিয়া ২০২১ এ সেমিফাইনালিস্ট হয়েছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণের কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং গ্রামে নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম সৌরজিত বড়ুয়ার। ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়াতে ভর্তি হন। এসেই পড়াশোনার পরিবেশ এবং শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতা তার শিক্ষা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।গ্রাজুয়েশন শেষ করার পরে তিনি এখন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছেন। তার গবেষনার বিষয় “ক্যান্সার স্ক্রিনিং সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভূমিকা।

“গবেষণা সম্পর্কে সৌরজিত বলেন, ক্যান্সার স্ক্রিনিং ক্যান্সারের প্রাথমিক ভাবে সনাক্তকরণ করা হলে চিকিৎসার জন্যে সেটা ভালো। ক্যান্সার যদি প্রাথমিক স্তরেই চিহ্নিত করা যায় তবে রোগীর বাঁচানো সহজ হয়। আমার গবেষণার মূল বিষয়টাই হলো মানুষকে সচেতন করা এবং ক্যান্সারের ভয়বহতা কমানো। সৌরজিতের আশা “আমার গবেষনাটি সরকার, স্বাস্থ্যসেবার সাথে যুক্ত সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ক্যান্সার পরীক্ষার সচেতনতার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে অবহিত করা।তার গবেষণা ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে ডক্টরেট করার পর মালয়েশিয়ান কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করতে চান। অর্থ উপার্জন কখনোই আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল না। আমার জীবনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো যখন যেখানেই থাকি না কেন গবেষনায় যুক্ত থেকে নিত্যনতুন জ্ঞান অর্জন করা এবং শিক্ষকতার মাধ্যমে এই অর্জিত জ্ঞান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।

“ মালেয়শিয়ান শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি এখনো অনেকেই মালয়েশিয়ান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তেমন ধারণা রাখেন না। এখানকার শিক্ষা পদ্ধতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও গবেষণার মান খুবই উন্নত এবং এটা কিউএস র‌্যাংকিং দেখেই বোঝা যায়। বিশ্বর‌্যাংকিং এ সেরা ২০০ এর মধ্যে এখানকার ৫ টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিবছর এখানকার হাজার হাজার গবেষণা নিবন্ধ সনামধন্য জার্নালে প্রকাশিত হয়। সারাবিশ্বে মালেয়শিয়ান ডিগ্রির যথেষ্ঠ কদর রয়েছে।”

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

চকরিয়ায় বসতভিটা ও দোকান দখলের জন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট: আহত ৫

ক্যান্সার স্ক্রিনিং সচেতনতায় অবদান রাখতে চান মালেশিয়ায় পড়ুয়া বাংলাদেশের সৌরজিত

প্রকাশিত সময় : ১০:১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির বসবাস। দেশটিতে শ্রমিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ নানান পেশায় জড়িত রয়েছেন বাংলাদেশিরা। মালয়েশিয়ায় বাঙালি প্রবাসীরা নানান ধরণের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। তেমনি একজন সৌরজিত বড়ুয়া। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা বড় অংশ রয়েছে যারা এখানে এসে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারেন না। কিন্তু সৌরজিত সেখানে ব্যতিক্রম। তিনি মালয়েশিয়ার অন্যতম সেরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ায়ায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে রেকর্ড সিজিপিএ ৩.৯৮ নিয়ে তার ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন।সৌরজিত রেকর্ড টানা ৫ বার ভাইস-চ্যান্সেলর লিস্ট পুরস্কার সহ মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং পারফরম্যান্স পুরষ্কার এবং ডিন লিস্ট পুরস্কার পেয়েছেন।

তার ঝুলিতে আরো রয়েছে ট্যালেন্টব্যাংক ফিউচার লীডার মালয়েশিয়া ২০২১ পুরস্কার, সেরা বাংলাদেশি ছাত্র মালয়েশিয়া ২০২১ পুরস্কার। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন হাল্ট প্রাইজ ২০২১ (Amherst, USA) এ রিজিওনাল ফাইনালিস্ট, ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ মালয়েশিয়া ২০২১ এবং ন্যাশনাল ফাইনালিস্ট এবং ল’ওরেল ব্র্যান্ডস্ট্রর্ম মালয়েশিয়া ২০২১ এ সেমিফাইনালিস্ট হয়েছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণের কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং গ্রামে নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম সৌরজিত বড়ুয়ার। ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়াতে ভর্তি হন। এসেই পড়াশোনার পরিবেশ এবং শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতা তার শিক্ষা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।গ্রাজুয়েশন শেষ করার পরে তিনি এখন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছেন। তার গবেষনার বিষয় “ক্যান্সার স্ক্রিনিং সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভূমিকা।

“গবেষণা সম্পর্কে সৌরজিত বলেন, ক্যান্সার স্ক্রিনিং ক্যান্সারের প্রাথমিক ভাবে সনাক্তকরণ করা হলে চিকিৎসার জন্যে সেটা ভালো। ক্যান্সার যদি প্রাথমিক স্তরেই চিহ্নিত করা যায় তবে রোগীর বাঁচানো সহজ হয়। আমার গবেষণার মূল বিষয়টাই হলো মানুষকে সচেতন করা এবং ক্যান্সারের ভয়বহতা কমানো। সৌরজিতের আশা “আমার গবেষনাটি সরকার, স্বাস্থ্যসেবার সাথে যুক্ত সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ক্যান্সার পরীক্ষার সচেতনতার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে অবহিত করা।তার গবেষণা ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে ডক্টরেট করার পর মালয়েশিয়ান কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করতে চান। অর্থ উপার্জন কখনোই আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল না। আমার জীবনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো যখন যেখানেই থাকি না কেন গবেষনায় যুক্ত থেকে নিত্যনতুন জ্ঞান অর্জন করা এবং শিক্ষকতার মাধ্যমে এই অর্জিত জ্ঞান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া।

“ মালেয়শিয়ান শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি এখনো অনেকেই মালয়েশিয়ান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তেমন ধারণা রাখেন না। এখানকার শিক্ষা পদ্ধতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও গবেষণার মান খুবই উন্নত এবং এটা কিউএস র‌্যাংকিং দেখেই বোঝা যায়। বিশ্বর‌্যাংকিং এ সেরা ২০০ এর মধ্যে এখানকার ৫ টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিবছর এখানকার হাজার হাজার গবেষণা নিবন্ধ সনামধন্য জার্নালে প্রকাশিত হয়। সারাবিশ্বে মালেয়শিয়ান ডিগ্রির যথেষ্ঠ কদর রয়েছে।”