গতকাল রোববার দক্ষিণ গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের খবরে দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরে দল বেঁধে ফিরতে শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তবে টানা ছয় মাসের ইসরায়েলি হামলায় এ শহরের সব বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে অনেকের লাশও বের করা সম্ভব হয়নি। তাই তো নিজের বিধ্বস্ত ঘরে ফিরে চার সন্তানের মা মাহা থায়ের বলেছেন, শহরের বাতাসে সর্বত্র লাশের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে।
রোববার ৩৮ বছর বয়সী এ ফিলিস্তিনি নারী বলেন, আমাদের আর কোনো শহর নেই। শুধু ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। একেবারে কিচ্ছু বাকি নেই। সড়ক দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন কোনোভাবে কান্না থামাতে পারিনি।
তিনি বলেন, শহরের সব রাস্তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বত্র গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে। মানুষজন ধ্বংসস্তূপ খনন করে সেখান থেকে লাশ বের করে আনছেন।
গতকাল রোববার (৭ এপ্রিল) খান ইউনিস শহরসহ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় তেল আবিব।
ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের খবরে দলে দলে খান ইউনিস শহরে ফিরতে শুরু করেন ফিলিস্তিনিরা। যতই তারা শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে তাদের সামনে ততই ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র ফুঠে উঠতে থাকে। এরপরও নিজ নিজ ঘরের অবশিষ্ট অংশটা দেখতে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা।
গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর আগে এই শহর ও আশপাশের এলাকায় প্রায় ৪ লাখের মানুষের বাস ছিল। তবে কয়েক মাসের ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে শহরটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
পশ্চিম খান ইউনিসের হামাদ সিটি জেলার বাসিন্দা থায়ের বলেছেন, তিনি খুব মর্মাহত ও শোকাহত। ঘরের কোনো দেয়াল ও জানালা অক্ষত নেই। অধিকাংশ ভবন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এত কিছুর পরও নিজের ঘরেই ফিরবেন বলে জানালেন তিনি। থায়ের বলেন, আমার ঘরটা একেবারেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা কোনোভাবে বসবাসের উপযোগী নয়। তারপরও তাঁবু দিয়ে থাকার চেয়ে এখানে বসবাস করা ভালো।
এ ছাড়া গাজার অন্য ফিলিস্তিনিরা মাথায় করে মাদুর নিয়ে আসছেন। তাদের আশা একটাই—ঘরের চাল উড়ে গেলেও চার দেয়াল তো থাকবে। সেখানে মাদুর দিয়ে বাস করবেন তারা।