রাজশাহীতে গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের অর্ধকোটি টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে। গত সপ্তাহে বিষয়টি নজরে আসে ডাক বিভাগের। এরপরই বিষয়টি গ্রাহকদের নজরে আনেন তারা।
৩০ জন গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকার ওপরে হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ওই পোস্টমাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে ডাক কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহীর ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলী কৌশলে গ্রাহকদের সই করিয়ে নিজে টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রাজশাহীর তানোর পৌর শহরের কুঠিপাড়ায় উপজেলা কেন্দ্রীয় পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলীর বিরুদ্ধে বহু গ্রাহকের লাখ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাই। তদন্ত কমিটিতে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর মাইকিং করা হয় গ্রামে গ্রামে। এটি জানার পর গ্রাহকরা তাদের কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসছেন। এসব কাগজপত্র পেমেন্ট অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে। বাস্তবে গ্রাহক কোনো টাকা পাননি। আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনের মতো গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকার বিষয়ে জানতে পেরেছি।’
এ ঘটনায় পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল বলেন, তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তাকে এখানে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিনি আজ অফিসে আসেননি। আমরা থানায় একটি জিডি করেছি। যেহেতু তিনি সরকারি কর্মচারী, তার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করা যায় না। তাই এটি দুদকে অভিযোগ হবে। সেখানেই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
তানোরের কুঠিপাড়া গ্রামের আব্দুর রাকিব বলেন, ‘আমি সবশেষ যখন টাকা জমা দেই তখন আমার জমা বইয়ের একটি জায়গায় সই করতে বলেন মুখছেদ আলী। আমি তার দেখানো জায়গায় সই করে বাড়ি চলে যাই। পরে গতমাসে টাকা তোলার জন্য গিয়ে জানতে পারি যে আমার হিসাবে টাকা নেই।’
এ বিষয়ে রাজশাহীর পোস্টমাস্টার জেনারেল কাজী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দিনাজপুর থেকে ফিরছি। শুনেছি এক পোস্টমাস্টার গ্রাহকের টাকা তুলে নিয়েছেন। আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। এ ঘটনায় দুদকে মামলাও দেওয়া হয়েছে।’
তানোরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেননি। তারপরও আমরা বিষয়টি দেখছি।
দুদক রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের মৌখিকভাবে ডাক বিভাগ থেকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। তবে অভিযোগের কপি এখনো পৌঁছায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার মুখছেদ আলীর ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।