বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে সৎভাইগণ কর্তৃক দীর্ঘ ৪৫ বছরের ভোগ দখল স্বত্বীয় ভিটি জমি জবর দখল এবং ভিটি ছাড়া করা বোনদের প্রতিনিয়ত প্রাননাশের হুমকির ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী গং। ৮ সেপ্টেম্বর(রবিবার) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাকারিয়া’র কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ উপস্থাপন করেন ভুক্তভোগী সুজিতা বড়ুয়া।এ সময় অপরাপর ভুক্তভোগীরা সাথে ছিলেন।
জানা গেছে,উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ২৬৭ নং ঘুমধুম মৌজাধীন ৬ নং ওয়ার্ডের উত্তর ঘুমধুম বড়ুয়া পাড়ায় একই পিতার সৎ ভাইগণ গত ২০/২২ দিন পুর্বে প্রায় ৪৫ শতক ভিটি জায়গা দখল করে ভিটিতে থাকা গাছপালা কেটে নিয়ে যান। ভিটিতে স্থীত খড়ের স্তুপ ঘেরাবেড়া দিয়ে নিজেদের দখলে নেন।এতে ৩ বোন এবং মৃত ভাইয়ের স্ত্রী ও ২ সন্তান ভিটে ছাড়া হয়েছেন।
ভিটে ছাড়া হওয়া ভুক্তভোগী সুখি বড়ুয়া,সুজিতা বড়ুয়া ও জ্যোৎস্না বড়ুয়া অভিযোগ করে জানান,তাদের বাবা সেনাদা বড়ুয়ার দুই স্ত্রী।আমাদের মাতা ঝর্ণা বড়ুয়া ২য় স্ত্রী।আমাদের মাতার ৩ বোন ও এক ভাই।প্রথম স্ত্রী’র(আমাদের বড় মাতা অপুর্ব বড়ুয়া)ঘরে ৪ ভাই ও ১ বোন রয়েছে।আমাদের বসবাস ছিল মাতার আবাদ করা ৪৫ বছরের দখল স্বত্বীয় প্রায় ৪৫ শতক জায়গার উপর।আর প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা ছিল বাবা’র আলাদা ভিটিতে।আমাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মাতার ভিটিতে একমাত্র ভাই আদর্শ বড়ুয়া স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন।বাবা-মা মারা যান অনেক আগেই।গত আড়াই বছর পুর্বে ভাই আদর্শ বড়ুয়া মারা যান।
এর পর ভাইয়ের স্ত্রী ও দুই সন্তান সহ ল মাতার স্থীত ভিটিতে বসবাস করছিলাম।গত সপ্তাহ তিনেক আগেই সুজিতা বড়ুয়া এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান।কয়দিন পর এসে দেখেন ভিটিতে নতুন ঘেরাবেড়া এবং নতুন টংঘর।কে বা কারা ঘিরেছে? প্রতিবেশীদের নিকট জানতে পারি আমাদের বড় মাতা অপুর্ব বড়ুয়ার ঘরের সন্তান আমাদের সৎ ভাই রাধা কান্ত বড়ুয়া,বাঁশী মোহন বড়ুয়া,রাধা মোহন বড়ুয়া ও নিরবন্ধু বড়ুয়া দখল করে ঘিরে ফেলেছে।তারা জমিটি অন্যত্র বিক্রির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।তাদের নিকট ভিটি জমিতে নতুন করে ঘেরাবেড়া দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে কোন সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে উল্টো অশালীন গালিগালাজ করতেই থাকেন।
আমাদের মাতার জায়গা দখল মুক্ত করণে প্রতিকার চেয়ে ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র বরাবর অভিযোগ দায়ের করি।অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই কাসেম উভয় পক্ষ’কে ডেকে বৈঠকে বসেন।বৈঠকে বিবাদী পক্ষ জায়গা ছেড়ে দিতে মোটাংকের চাঁদা দাবী করে বসেন।জায়গার প্রকৃত মালিক মৃত ঝর্ণা বড়ুয়ার কন্যারা টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।তাতে বিবাদী পক্ষ জায়গা ছেড়ে দেওয়ার মৌখিক অঙ্গিকার করে আর ছেড়ে না দিয়ে উল্টো বোনদের অশালীন গালিগালাজ এবং প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছেন।এতে নিরুপায় বোনরা মাতার ভিটি জমি থেকে হাত ছাড়া হয়ে ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশ ও গণমান্য ব্যক্তিদের দ্ধারে-দ্ধারে ঘুরছেন।পুলিশও বিবাদীদের পক্ষাবলম্বন করছেন।নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাইক্ষ্যংছড়ি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
জায়গা দখলকারীদের একজন রাধা মোহন বড়ুয়া জানান,ভিটি জায়গাটি আমার বাবা সেনাদা বড়ুয়ার।উক্ত ভিটি জায়গায় বসবাস করেছিল সৎ ভাই আদর্শ বড়ুয়া।আদর্শ বড়ুয়া মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের স্ত্রী বিক্রি করে ফেলেছেন। ভাইয়ের স্ত্রী জায়গা বিক্রি করার এখতিয়ার আছে কিনা?ঝর্ণা বড়ুয়ার জায়গার ওয়ারিশান কন্যাদের নিকট জানিয়েছিলেন কিনা?তারা জায়গার মালিক কিনা?এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। ভিটি ছাড়া হওয়া এতিম কন্যাদের উপস্থাপিত লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:জাকারিয়া জানিয়েছেন,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি,বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) বরাবর লিখে পাঠিয়ে দিয়েছি।