বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ডানা’র প্রভাবে কক্সবাজারের সাগর উত্তাল রয়েছে। এতে ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা বেড়েছে। এ নিয়ে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকদের গোসলে নামা বিপজ্জনক বলে জানিয়েছেন লাইফগার্ডসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
তাঁরা জানিয়েছেন, উত্তাল সাগরে পর্যটকদের গোসলে না নামতে লাইফগার্ড, বীচকর্মি ও ট্যুরিস্ট পুলিশ নিষেধ করে মাইকিং করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারি আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টায় ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ ঘণিভূত রূপ নিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এবং ভারতের উড়িশ্যা উপকূল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে ধারণা রয়েছে।
তিনি জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহের উপর ধমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৯০ কিলোমিটার; যা ধমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সীসেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার ওসমান গণি বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় বড় বড় ঢেউ তীব্র বেগে সৈকত উপকূলে আঁচড়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতি সাগরে গোসলে নামা নিরাপদ নয়। এ কারণে পর্যটকদের গোসলে না নামতে লাইফগার্ড কর্মিদের পাশাপাশি বিচকর্মি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারপরও পর্যটকদের অনেকে নির্দেশনা না মেনে গোসল করছেন বলে জানান তিনি।আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলবর্তী সাগরে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত ১ থেকে ২ ফুটের কিছুটা বেশী। এতে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সাথে গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সকল নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।