১০:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন

ট্রেনের দাপটে কমছে বাস ভাড়া

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে টানা দুই মাস ট্রেন পরিচালনার পর কমতে শুরু করেছে এই রুটের বাস ভাড়া। ইতোমধ্যে দুটি বড় বাস কোম্পানি ১০০ টাকা পর্যন্ত তাদের ভাড়া কমিয়েছে। আরও কয়েকটি বাস কোম্পানি ভাড়া কমানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন চালুর আগে বাস মালিকরা তাদের কাছ থেকে যেমন খুশি তেমন ভাড়া আদায় করতেন। তবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে স্পেশাল ট্রেন চালুর পর থেকে বাস মালিকদের দৌরাত্ম্য কমতে শুরু করে। যাত্রী কমায় তারা ভাড়া কমাতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, সৌদিয়া পরিবহনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া এখন ৩৩০ টাকা। যা আগে ছিল ৪২০ টাকা। সে হিসাবে সৌদিয়া কর্তৃপক্ষ ভাড়া কমিয়েছে ৯০ টাকা। পাশাপাশি লোহাগাড়া এবং কেরানীহাটগামী রুটের ভাড়াও কমিয়েছে এই পরিবহন কোম্পানি।

অন্যদিকে, পূরবী পরিবহনও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া ১০০ টাকা কমিয়েছে। এই পথের নতুন ভাড়া ৩২০ টাকা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আগে ৪২০ টাকা ছিল। এছাড়া ঈদগাঁ-চট্টগ্রাম, চকরিয়া-চট্টগ্রাম এবং কেরানীহাট-চট্টগ্রাম রুটের ভাড়াও কমেছে। জানতে চাইলে পূরবী পরিবহনের এমডি কাজল কান্তি দাশ জানান, যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ছাড়ের ফলে আরও বেশি মানুষ বাসে যাতায়াত করবেন। যাত্রীরা ভাড়া কমানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই ছাড় অব্যাহত থাকবে।

কাজল কান্তি দাশ আরও বলেন, মানবিক কারণে যাত্রীদের সুবিধার্থে আমরা ভাড়া কমিয়েছি। যদিও কম ভাড়া নির্ধারণে পরিবহন মালিক সমিতিতে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু সেটি উপেক্ষা করে যাত্রীদের আর্থিক দিক চিন্তা করে ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তবে বাস মালিকদের এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়রা। ইবনে আমিন নামে স্থানীয় একজন বলেন, বাস মালিকপক্ষ যাত্রীর প্রতি সদয় হয়ে নয়, টিকে থাকার সংগ্রামে ভাড়া কমিয়েছে। কারণ ট্রেন চালুর পর থেকে বাসের একচেটিয়া রাজত্ব কমেছে। মানুষ ট্রেনেই বেশি যাতায়াত করছে।

এদিকে, গত ৩০ মে থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় এই রুটের যাত্রীরা ফের বাস মালিকদের হাতে জিম্মি হবে বলে দাবি করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতিগুলোর নেতারা। তাদের দাবি, ইঞ্জিন ও ক্রু সংকটের অজুহাতে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হলেও এর পেছনে বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশন রয়েছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

সিপিবি ও বাপার জেলা নেতা কলিম উল্লাহ মনে করেন, পরিবহন মালিকদের ষড়যন্ত্রের কারণেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। নাগরিক সমাজ দ্রুত এই স্পেশাল ট্রেন পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম থেকে পর্যটননগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে অনেক কম। সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া ট্রেনের যাত্রা বাসের চেয়েও আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের। ফলে বাসের চেয়ে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

চট্টগ্রাম থেকে পর্যটননগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে অনেক কম। সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া ট্রেনের যাত্রা বাসের চেয়েও আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের। ফলে বাসের চেয়ে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

এ নিয়ে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হতে পারে।

এই ট্রেন নিয়ে এমন টালবাহানার পেছনে বাস মালিকদের হাত আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে রেল কর্তৃপক্ষ থেকে অফিসিয়াল নোটিশ হলো, বিশেষ ট্রেনের লোকবল সংকটের কারণে এই ট্রেন বন্ধ হয়েছে।

এ নিয়ে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হতে পারে।

এই ট্রেন নিয়ে এমন টালবাহানার পেছনে বাস মালিকদের হাত আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে রেল কর্তৃপক্ষ থেকে অফিসিয়াল নোটিশ হলো, বিশেষ ট্রেনের লোকবল সংকটের কারণে এই ট্রেন বন্ধ হয়েছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আইন শৃঙ্খলা, দ্রব্যমুল্য, সংস্কার বিষয়ে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- ধর্ম উপদেষ্টা

১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন

ট্রেনের দাপটে কমছে বাস ভাড়া

প্রকাশিত সময় : ১০:৩৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে টানা দুই মাস ট্রেন পরিচালনার পর কমতে শুরু করেছে এই রুটের বাস ভাড়া। ইতোমধ্যে দুটি বড় বাস কোম্পানি ১০০ টাকা পর্যন্ত তাদের ভাড়া কমিয়েছে। আরও কয়েকটি বাস কোম্পানি ভাড়া কমানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন চালুর আগে বাস মালিকরা তাদের কাছ থেকে যেমন খুশি তেমন ভাড়া আদায় করতেন। তবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে স্পেশাল ট্রেন চালুর পর থেকে বাস মালিকদের দৌরাত্ম্য কমতে শুরু করে। যাত্রী কমায় তারা ভাড়া কমাতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, সৌদিয়া পরিবহনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া এখন ৩৩০ টাকা। যা আগে ছিল ৪২০ টাকা। সে হিসাবে সৌদিয়া কর্তৃপক্ষ ভাড়া কমিয়েছে ৯০ টাকা। পাশাপাশি লোহাগাড়া এবং কেরানীহাটগামী রুটের ভাড়াও কমিয়েছে এই পরিবহন কোম্পানি।

অন্যদিকে, পূরবী পরিবহনও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ভাড়া ১০০ টাকা কমিয়েছে। এই পথের নতুন ভাড়া ৩২০ টাকা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আগে ৪২০ টাকা ছিল। এছাড়া ঈদগাঁ-চট্টগ্রাম, চকরিয়া-চট্টগ্রাম এবং কেরানীহাট-চট্টগ্রাম রুটের ভাড়াও কমেছে। জানতে চাইলে পূরবী পরিবহনের এমডি কাজল কান্তি দাশ জানান, যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ছাড়ের ফলে আরও বেশি মানুষ বাসে যাতায়াত করবেন। যাত্রীরা ভাড়া কমানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই ছাড় অব্যাহত থাকবে।

কাজল কান্তি দাশ আরও বলেন, মানবিক কারণে যাত্রীদের সুবিধার্থে আমরা ভাড়া কমিয়েছি। যদিও কম ভাড়া নির্ধারণে পরিবহন মালিক সমিতিতে আমাকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু সেটি উপেক্ষা করে যাত্রীদের আর্থিক দিক চিন্তা করে ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তবে বাস মালিকদের এই যুক্তি মানতে নারাজ স্থানীয়রা। ইবনে আমিন নামে স্থানীয় একজন বলেন, বাস মালিকপক্ষ যাত্রীর প্রতি সদয় হয়ে নয়, টিকে থাকার সংগ্রামে ভাড়া কমিয়েছে। কারণ ট্রেন চালুর পর থেকে বাসের একচেটিয়া রাজত্ব কমেছে। মানুষ ট্রেনেই বেশি যাতায়াত করছে।

এদিকে, গত ৩০ মে থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় এই রুটের যাত্রীরা ফের বাস মালিকদের হাতে জিম্মি হবে বলে দাবি করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতিগুলোর নেতারা। তাদের দাবি, ইঞ্জিন ও ক্রু সংকটের অজুহাতে স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হলেও এর পেছনে বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশন রয়েছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।

সিপিবি ও বাপার জেলা নেতা কলিম উল্লাহ মনে করেন, পরিবহন মালিকদের ষড়যন্ত্রের কারণেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম স্পেশাল ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। নাগরিক সমাজ দ্রুত এই স্পেশাল ট্রেন পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম থেকে পর্যটননগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে অনেক কম। সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া ট্রেনের যাত্রা বাসের চেয়েও আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের। ফলে বাসের চেয়ে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

চট্টগ্রাম থেকে পর্যটননগরী কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া বাসের চেয়ে অনেক কম। সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া ট্রেনের যাত্রা বাসের চেয়েও আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের। ফলে বাসের চেয়ে ট্রেনকেই বেছে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

এ নিয়ে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হতে পারে।

এই ট্রেন নিয়ে এমন টালবাহানার পেছনে বাস মালিকদের হাত আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে রেল কর্তৃপক্ষ থেকে অফিসিয়াল নোটিশ হলো, বিশেষ ট্রেনের লোকবল সংকটের কারণে এই ট্রেন বন্ধ হয়েছে।

এ নিয়ে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানি জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরের দিন থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেন চলাচলের সময় বাড়ানো হতে পারে।

এই ট্রেন নিয়ে এমন টালবাহানার পেছনে বাস মালিকদের হাত আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম রব্বানী বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে রেল কর্তৃপক্ষ থেকে অফিসিয়াল নোটিশ হলো, বিশেষ ট্রেনের লোকবল সংকটের কারণে এই ট্রেন বন্ধ হয়েছে।