বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত বেয়ে লাশের উৎকট গন্ধ এপারের বাতাসে উড়ছে। অপরদিকে মিয়ানমারের ওপারে সীমান্তের তুমব্রু—বাইশফাড়ি সীমান্ত এলাকার বিপরীতে নারায়ন সং সেনা ক্যাম্পটি দখলে নিতে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ যেন কাপুনী দিয়ে উঠছে সীমান্ত সড়কের আশপাশ এলাকা। এ ঘটনা মিয়ানমারের সাহেব বাজার ও ফকিরা বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এসব গোলার আওয়াজে সোমবার ১৮ মার্চ বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সীমান্ত সড়কের আশপাশের লোকজনের মাঝে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এদিকে লাশের পঁচা গন্ধ পাচ্ছে জামছড়ি গ্রামের অধিবাসীরা। তারা গত শুক্রবার থেকে এ গন্ধ পাচ্ছেন মিয়ানমারের ওপার থেকে। এ নিয়ে অস্বস্থিতে সীমান্ত এলাকার কিছু মানুষ। ধারণা করা হচ্ছে ১১ মার্চ জান্তা বাহিনীর ১৭৯ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয়ে ঢুকার পূর্বে গুলিতে মারা যাওয়া লাশ থেকে এ গন্ধ বের হচ্ছে বলে ধারণা গ্রামবাসীর। ওদিকে জান্তা বাহিনীর এ টহল দলে ছিলো ২ শতাধিক সদস্য। এদিকে রাখাইনের বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মির মূখপাত্র খিন থু খা'র। ঘনিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্যে জানান, রাখাইনের বুথিদং শহরের জান্তা বাহিনীর খেমার (৫৫২) ব্যাটালিয়ন দখলে নিতে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি (এএ) গত ৩ দিন ধরে চতুর্মূখী হামলা চালাচ্ছে। এর আগে তারা (আরাকান আর্মি) জান্তা সরকারের আরো ৩ টি ব্যাটালিয়ন দখলে নেয়। সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে বলি বাজার, রাশিদং, বুচিদং, মন্ডু শহরের চতুর্পাশে জান্তার সাথে তাদের ( এএ) প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে। এখন স্থল অংশ তাদের আর জান্তা সরকার আকাশ এবং নৌ পথ দখলে রেখেছে। এদিকে সীমান্তের জামছড়ি ও সাপমারাঝিরির ওপারে লাশের উৎকট গন্ধ ভেসে আসছে সীমান্ত সড়কে। মাঝে— মধ্যে গ্রামের ভেতরেও এ গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে। জামছড়ি গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান, মো: জহির ও ছৈয়দ হোসেন সহ অনেকেই নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন এ বিষয়ে বলেন, সীমান্তের যে সমস্যা তা নিয়ে সকলে তটস্থ। বিজিবি সীমান্তে বসবাস থাকলেও লোকালয়ের পরিষদের অধিনস্থ মেম্বার, চৌকিদার ও দফাদারদের তিনি সজাগ থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান চেয়ারম্যান নুরল আবছার। বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো: মুজাহিদ উদ্দিন পালিয়ে আসা ১৭৯ জান্তা বাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে বলেন,তাদের বায়োডাটার কাজ রিভিউ সহ সব কিছু যাচাই—বাছাই করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় থেকে অল্প দিনের মধ্যে হয়তো তাদের বিষয়ে নির্দেশনা আসবে, তখন তাদের ফেরৎ দেয়ার কাজ শুরু হবে। সীমান্ত বিষয়ে তিনি আরো বলেন, গন্ধ আসুক বা আওয়াজ আসুক তাতে বাধা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।