ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘আল্লাহর কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ ঘটনায় ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দেশে নিযুক্ত তুর্কি উপরাষ্ট্রদূতকে তলব করার নির্দেশ দেন।
গত শুক্রবার এক্সে (সাবেক টুইটার) তুর্কি দূতকে তলব করা নিয়ে এক পোস্ট দেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাৎজ লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ওপর এরদোয়ানের আক্রমণ ও আল্লাহর কাছে তাঁকে পাঠানোর হুমকির পর আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ইসরায়েলে তুর্কি উপরাষ্ট্রদূতকে কঠোরভাবে তিরস্কার করতে ও এরদোয়ানকে স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে তলবের নির্দেশনা দিয়েছি।’
এরদোয়ানকে উদ্দেশ করে কাৎজ লেখেন, ‘আপনি সেই ব্যক্তি, যিনি শিশুদের পোড়ানো, খুনি, ধর্ষক ও হামাসের অপরাধীদের হাতে মরদেহ বিকৃত করা সমর্থন করেন। আপনিই শেষ ব্যক্তি যিনি (আবার) ঈশ্বর নিয়ে কথা বলতে পারেন।’
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘আপনার হামাস বন্ধুদের নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যাঁরা সমর্থন করেন, তাঁদের কথা শুনবেন এমন কোনো ঈশ্বর নেই। শান্ত ও লজ্জিত হোন!’
গত বৃহস্পতিবার এক নির্বাচনী সমাবেশের কিছু পর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ওই মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা জুইশ ন্যাশনাল সিন্ডিকেট জানায়।
ইসরায়েলি মন্ত্রীর এক্স বার্তায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনকু কেসেলি। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক সত্য কথা বলে যাবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অবর্ণনীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার বিষয়টি বৈশ্বিক অ্যাজেন্ডায় নিয়ে আসবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা এক পোস্টে তুর্কি মুখপাত্র আরও বলেন, ‘ছয় মাস ধরে ইসরায়েল গাজায় যে অপরাধ চালাচ্ছে, তা আর লুকিয়ে রাখা যাবে না এবং তাকে গণহত্যার বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে নেতানিয়াহুকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ কয়েকজন স্বৈরশাসক যেমন মুসোলিনি, হিটলার ও স্তালিনের সঙ্গে তুলনা করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ওই সময়ের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিভিন্ন খবরে বলা হয়, ‘হামাস কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয় বরং একটি প্রতিরোধ আন্দোলন। আমরা দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে আছি এবং তাদের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’
এরদোয়ানের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু তখন বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধের আইনকানুন মেনে চলে। তারা এরদোয়ানের নীতিবাক্যের ধার ধারে না। তিনি ‘‘সন্ত্রাসী’’ সংগঠন হামাসের ‘‘খুনি ও ধর্ষকদের’’ সমর্থন করেন এবং আর্মেনীয় গণহত্যা ও নিজ দেশে কুর্দি হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করেন।’