অর্থনৈতিক দিক থেকে চরম দুর্বলতম অবস্থানে থাকলেও সামরিক শক্তি অর্জনে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নয় পাকিস্তান। একদিকে দেউলিয়াত্ত থেকে বাঁচতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের দুয়ারে ধরনা দেওয়া অন্যদিকে সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করতে উন্নত অস্ত্র সংগ্রহ দুটোই সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে গোয়েন্দা রণতরী। যদিও অনেকটা গোপনেই এই জাহাজ সংগ্রহ করেছে পাকিস্তান।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের নৌবাহিনীর হাতে আসা প্রথম গুপ্তচর জাহাজটি দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করার সক্ষমতা রাখে। মূলত ভারতীয় নৌবাহিনীর আইএনএস ধ্রুব নামক গুপ্তচর জাহাজের জবাবেই পাকিস্তান তাদের নৌবাহিনীতে পিএনএস রিজওয়ানকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
ভারতের আইএনএস ধ্রুব থেকে অনেকটাই ছোট পাক গুপ্তচর জাহাজ। ভারতের রণতরীটি ১৭৫ মিটার লম্বা, সেখানে রিজওয়ানের দৈর্ঘ্য ৮৭ মিটার। এ জাহাজে গম্বুজের আকারের একটি অ্যান্টেনা আছে। এ ছাড়াও দূরপাল্লার ব়্যাডার আছে এতে।
আইএনএস ধ্রুব তৈরি করা হয়েছিল বিশাখাপত্তনমের হিন্দুস্তান শিপ ইয়ার্ডে। এই রণতরীর ওজন ১০ হাজার টন। শত্রুপক্ষের স্যাটেলাইট ও ডুবোজাহাজ চিহ্নিত করা ছাড়াও সমুদ্রতলের গঠন নিয়ে গবেষণা করতে পারে আইএনএস ধ্রুব। পিএনএস রিজওয়ানও এই কাজগুলো করতে পারে।
গেল কয়েক বছর ধরেই ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরে গুপ্তচর জাহাজের আনাগোনা বাড়িয়েছে চীন। প্রথমে শ্রীলংকা ও বর্তমানে মালদ্বীপে নোঙর ফেলছে চীনা গুপ্তচর জাহাজ। মূলত নিজ কার্যসিদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য পাকিস্তানকে গুপ্তচর জাহাজ দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে চীন।
বর্তমানে অল্প কয়েকটি দেশের কাছেই গুপ্তচর জাহাজ রয়েছে। নৌবাহিনীর এই এলিট ক্লাবে রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন ও ভারত। সর্বশেষ এ তালিকায় যুক্ত হলো পাকিস্তান। ফলে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ সমর্থিত পরমাণু শক্তিধর প্রতিটি দেশের কাছেই রয়েছে এই আধুনিক রণতরী।