দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত ছিল তাঁরা।একটু স্বচ্ছলতা ফেরাতে স্বপ্ন দেখছিলেন।তাই দালালের সাথে বোঝাপড়া।সহজেই পানিপথ বেচে নিয়েছিলেন।যাবেন মালয়েশিয়া।তাও ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে।যাওয়ার জন্য উঠলেন বোটে,কিন্তু বিধিবাম।গভীর সমুদ্রে ভাসছিলো শতাধিক রোহিঙ্গা ভর্তি করা ট্রলার, উদ্দেশ্য অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাত্রা। ঝুঁকি নিয়েও সে স্বপ্ন পূরণ হলো না। উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পানিপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা, শতাধিক নারী-পুরুষ'কে ইনানী সৈকতে নামিয়ে দিয়ে পালিয়েছে মানবপাচারে জড়িত দালালেরা।সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী থেকে ২৬ রোহিঙ্গা'কে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোর ৪টার দিকে প্রায় শতাধিক রোহিঙ্গাকে সৈকতের বালিয়াড়ি পেরিয়ে হঠাৎ লোকালয়ে আসতে দেখে অবাক হন তাঁরা।পাশে কোস্টগার্ডের স্টেশনে খবর দেওয়া হলেও দেখা যায়নি তাদের। তাৎক্ষণিক তৎপরতা, এই সুযোগে কমপক্ষে ৭০ জন রোহিঙ্গা অন্যত্র চলে যায় বলে জানা গেছে।
পরে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কূলে অবস্থানরত ২৬ জনকে আটক করে, যারা বর্তমানে হেফাজতে রয়েছে কোস্টগার্ড স্টেশনে।ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে উখিয়ার ১৭ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা খুরশিদা বেগম (২৪)। তিনি জানান, আমরা মালেয়শিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে টেকনাফ থেকে ট্রলারে যাত্রা করেছিলাম, মায়ানমারের নৌবাহিনী জলসীমা অতিক্রমের সময় বাঁধা দেয়। মাঝি বোট ঘুরিয়ে ফেলে এদিকে চলে আসে এবং আমরা সাগরের মাঝে ১০ দিন ছিলাম।পুলিশের বরাত দিয়ে ২০২৩ এ গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে,২০১৬ থেকে ঐ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের সময় এক হাজার ১৩৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা। যে সময়কালে এসব ঘটনায় উখিয়া ও টেকনাফ থানায় ১২০০ জনকে আসামি করে দায়ের করা হয় ৮৫টি মামলা এবং গ্রেফতার করা হয় ৫০৮ জন পাচারকারীকে।তারপরও থেমে থাকেনি মানব পাচার।