১২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির অভাবে নষ্টের মুখে ১২শ হেক্টর ধান

শুষ্ক মৌসুমে কৃষকের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার কক্সবাজার ঈদগাঁও খালে ‘ঈদগাঁও’ এবং ‘পোকখালী’ দুটি রবার ড্যাম নির্মাণ করেন। উজান থেকে পানি না আসায় বোরো মৌসুমে রাবার ড্যাম কৃষকের কাজে আসছে না। আর জমিতে পানি দিতে না পেরে জমির ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষকরা।
এ অবস্থায় পানি সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে পানি সংকটের জন্য ঈদগাঁও রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটিকে দায়ী করেছেন পোকখালী রাবার ড্যাম কমিটি। আর সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উজান থেকে পানি কম আসায় ‘ঈদগাঁও’ রাবার ড্যামে পরিচালনা কমিটি পানি ছাড়ছে না। ফলে ‘পোকখালী’ রাবার ড্যামে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উপজেলার পোকখালী, চোফলদন্ডি ও জালালাবাদ ইউনিয়নে ১ হাজার ২৮৪ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ করা বোরো ধান ও শীতকালীন সবজি শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।
ঈদগাঁও রাবার ড্যাম সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পানি ছাড়লে তারা নিজেরাও পানি সংকটে পড়বেন। তাদের অভিযোগ খাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সময় পানি নষ্ট হচ্ছে তেমনি উজান থেকেও পানি আসছে না। বারবার উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ করার পরও রহস্যজনক কারণে বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পোকখালী এলাকার কৃষকদের দাবি ঈদগাঁও রাবার ড্যাম থেকে পানি ছাড়লে সংকট কিছুটা হলেও কমে যাবে।
ঈদগাঁও উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, বোরো মৌসুমে ঈদগাঁওতে অনেক জমিতে চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু রাবার ড্যামে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পোকখালী এলাকার প্রায় ২০০ হেক্টরের বেশি জমির চাষ প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। পানি সংকট বাড়লে এ ক্ষতি হতে পারে আরও দ্বিগুণ। তবে সংকট সমাধানের চেষ্টার কথাও বলেন তিনি।
পোকখালীর ইউপি সদস্য ও পোকখালী রাবার ড্যাম সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করলেও ঈদগাঁও রাবার ড্যাম সমিতির লোকজন পানি ছাড়ছে না। তাই পানির অভাবে পোকখালী এলাকার ফসলি মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। মাটি ফেটে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষকরা। যারা ঋণ নিয়ে ধানের চাষ করেছে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। সংকট সমাধানে চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। দুএকদিনের মধ্যে পানি পাওয়া না গেলে পুরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পোকখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক জিয়ার রহমান বলেন, এমনিতে দেরিতে রাবার ড্যাম ফুলানো হয়েছে, তার ওপর ঋণ নিয়ে বোরো চাষ করেছি। এখন পানির অভাবে ফসল নষ্ট হলে নিঃস্ব হয়ে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।
ঈদগাহ্ রাবার ড্রাম সমিতির সভাপতি আরমান উদ্দিন মেম্বার জানান, আমরা নিজেরাও পানির সংকটে রয়েছি। তাই পানি ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন পানি ছাড়লে পাম্প বসিয়ে আমাদের জমিতে পানি দিতে হবে। তাছাড়া খাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে নষ্ট হচ্ছে পানি। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানতে চাইলে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, ঈদগাঁও এবং পোকখালী দুটি রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমাধানের কথা হয়েছে। তারা সমাধান করতে না পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আইন শৃঙ্খলা, দ্রব্যমুল্য, সংস্কার বিষয়ে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- ধর্ম উপদেষ্টা

পানির অভাবে নষ্টের মুখে ১২শ হেক্টর ধান

প্রকাশিত সময় : ০৮:০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

শুষ্ক মৌসুমে কৃষকের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার কক্সবাজার ঈদগাঁও খালে ‘ঈদগাঁও’ এবং ‘পোকখালী’ দুটি রবার ড্যাম নির্মাণ করেন। উজান থেকে পানি না আসায় বোরো মৌসুমে রাবার ড্যাম কৃষকের কাজে আসছে না। আর জমিতে পানি দিতে না পেরে জমির ফসল নষ্ট হয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষকরা।
এ অবস্থায় পানি সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে পানি সংকটের জন্য ঈদগাঁও রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটিকে দায়ী করেছেন পোকখালী রাবার ড্যাম কমিটি। আর সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উজান থেকে পানি কম আসায় ‘ঈদগাঁও’ রাবার ড্যামে পরিচালনা কমিটি পানি ছাড়ছে না। ফলে ‘পোকখালী’ রাবার ড্যামে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উপজেলার পোকখালী, চোফলদন্ডি ও জালালাবাদ ইউনিয়নে ১ হাজার ২৮৪ হেক্টরের বেশি জমিতে চাষ করা বোরো ধান ও শীতকালীন সবজি শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।
ঈদগাঁও রাবার ড্যাম সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পানি ছাড়লে তারা নিজেরাও পানি সংকটে পড়বেন। তাদের অভিযোগ খাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সময় পানি নষ্ট হচ্ছে তেমনি উজান থেকেও পানি আসছে না। বারবার উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ করার পরও রহস্যজনক কারণে বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। পোকখালী এলাকার কৃষকদের দাবি ঈদগাঁও রাবার ড্যাম থেকে পানি ছাড়লে সংকট কিছুটা হলেও কমে যাবে।
ঈদগাঁও উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, বোরো মৌসুমে ঈদগাঁওতে অনেক জমিতে চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু রাবার ড্যামে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পোকখালী এলাকার প্রায় ২০০ হেক্টরের বেশি জমির চাষ প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। পানি সংকট বাড়লে এ ক্ষতি হতে পারে আরও দ্বিগুণ। তবে সংকট সমাধানের চেষ্টার কথাও বলেন তিনি।
পোকখালীর ইউপি সদস্য ও পোকখালী রাবার ড্যাম সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করলেও ঈদগাঁও রাবার ড্যাম সমিতির লোকজন পানি ছাড়ছে না। তাই পানির অভাবে পোকখালী এলাকার ফসলি মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। মাটি ফেটে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষকরা। যারা ঋণ নিয়ে ধানের চাষ করেছে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। সংকট সমাধানে চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। দুএকদিনের মধ্যে পানি পাওয়া না গেলে পুরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পোকখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কৃষক জিয়ার রহমান বলেন, এমনিতে দেরিতে রাবার ড্যাম ফুলানো হয়েছে, তার ওপর ঋণ নিয়ে বোরো চাষ করেছি। এখন পানির অভাবে ফসল নষ্ট হলে নিঃস্ব হয়ে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।
ঈদগাহ্ রাবার ড্রাম সমিতির সভাপতি আরমান উদ্দিন মেম্বার জানান, আমরা নিজেরাও পানির সংকটে রয়েছি। তাই পানি ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন পানি ছাড়লে পাম্প বসিয়ে আমাদের জমিতে পানি দিতে হবে। তাছাড়া খাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে নষ্ট হচ্ছে পানি। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানতে চাইলে ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, ঈদগাঁও এবং পোকখালী দুটি রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমাধানের কথা হয়েছে। তারা সমাধান করতে না পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।