গতকাল ২৩ নভেম্বর ২০২৪ইং তারিখে কক্সবাজার জেলার বহুল প্রচারিত দৈনিক কক্সবাজার বার্তায় “কথা কম বলেন, কাজ হয়ে যাবে..., চকরিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ফাঁস” শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে গত ২২ নভেম্বর (শুক্রবার) ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং রাহমানিয়া দাখিল মাদ্্রাসার সুপার মাহাবুবুল আলম সিদ্দিকী কর্তৃক উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে ঘুষ দেওয়া হচ্ছে। এ কথাটির কোন ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে উক্ত মাহাবুবুল আলম রিংভং রাহমানিয়া মাদ্্রাসার একজন সুপার হিসেবে তার পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠানে একজন ভুক্তভোগী শিক্ষক নিয়োগ জালিয়াতি সংক্রান্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার চকরিয়াকে অভিযোগ করিলে, উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তভার দেওয়া হয় উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে। সে বিষয়ে উক্ত সুপার মাহাবুবুল আলম আলাপ করতে আসেন।
আমি উক্ত সুপারের কাছ থেকে কোন প্রকার ঘুষ লেনদেন করি নাই। যদি এসব করে থাকি, তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে আমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক সেটাও আমি চাই। দরকার হলে উক্ত মাদ্্রাসার সুপারের কাছ থেকে যাচাই—বাছাই করুন। সত্যটা কি আপনারা যাচাই করুন। অহেতুক একজন মানুষকে হয়রানি করার কোন প্রকার প্রশ্নই উঠে না। আমাকে ঘুষ আদায়কারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি এ পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অবদি কেউ ঘুষ দিয়েছেন বা আমি দাবী করেছি, এমন কোন ব্যক্তিকে পাবেন না। আমি যদি ঘুষ নিতাম তাহলে আমার ভয়ের কারণ ছিল। আমি কারো কাছ থেকে ঘুষ আদায় করিনি। আমি চকরিয়া উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের নিয়োজিত থাকাবস্থায় আমাকে বিভিন্নভাবে একটি চক্র হয়রানি করার কুমানসে উঠে পড়ে লেগেছে। উক্ত ভিডিওতে আমি যে টাকা গুলো পকেটে নিচ্ছি, সে টাকা গুলো হলো ২০২২ ইং সালের জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য ২০০০/—(দুই হাজার) টাকা করে নেওয়া উপজেলা রেজুলেশন কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে নেওয়ার বিধান রয়েছে।
উক্ত টাকা গুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী বিউটি রানী চৌধুরীকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেওয়া টাকা গুলো একত্রে করে আমার নিকট নিয়ে আসলে, আমি গণনা করার জন্য রিংভং রাহমানিয়া দাখিল মাদ্্রাসার সহ—সুপার আবু হুরাইরাকে দায়িত্ব প্রদান করি। সে সময় উক্ত মাদ্রাসার সুপার মাহাবুবুল আলম সিদ্দিকীকেও উপস্থিত ছিলেন। উক্ত সহ—সুপার কর্তৃক গণনা করে আমার নিকট টাকা গুলো হস্তান্তর করে। যার প্রেক্ষিতে আমি টাকা গুলো নিয়ে আমার পকেটে রাখি। আরেকটি বিষয় আমি সুপার মাহাবুবু আলমকে যে কথাটি বলেছি, সে গুলো তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক রিংভং রাহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তাধীন ছিল। উক্ত তদন্তের ভিত্তিতে আমি সুপার মাহাবুবুলের প্রশ্নের জবাবে বলেছি, যদি তদন্তের মাধ্যমে যার বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে শিক্ষকতা করে আসার প্রমাণ পাই, তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সাথে এও বলেছি আপনি চলে যান কাজ হয়ে যাবে। তার মানে এই নয় যে, আমি তার নিকট থেকে অনৈতিকভাবে ঘুষ আদায় করেছি। এটি সত্যের লেশ মাত্রই নেই। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যাচাই করতে পারেন, উক্ত টাকা গুলো কিসের বা কারা দিয়েছে বা কি কাজের জন্য দিয়েছে। আমি যেহেতু জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কমিটির আহ্বায়ক, সেহেতু প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে উপজেলা কমিটি কর্তৃক অনুমতি সাপেক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা বাবদ ২০০০/— (দুই হাজার) টাকা করে নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। সেহেতু উক্ত টাকা গুলো গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আনুসাঙ্গিক আয়ন ব্যয়ন করে খরচ করার জন্য। যে টাকা গুলো জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য উত্তোলন করা হয়েছে, সে টাকা গুলো উক্ত প্রতিযোগিতায় খরচ করা হয়।
সুপার মাহাবুবু আলমকে আমি কি বলেছি, কি জন্য কাজ হয়ে যাবে বলেছি, সেটি ওনার কাছ থেকে প্রশ্ন করুন। আমাকে যদি এব্যাপারে দোষারুপ করা হয়, আমার কোন কিছু করার নেই। কারণ আমি অপরাধী নই। আমাকে অহেতুক অপরাধী বানানো হচ্ছে। বিগত দিনেও কেউ কেউ আমাকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্ন ঘুষ দিতে চাইতো, আমি যখন নিতাম না, অনৈতিক সুবিধা আদায়কারীরা যখন সুযোগ পেত না, তখন আমার বিরুদ্ধে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখে আসছিল। যার প্রমাণ এই ভিডিও চিত্র। আর সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, আমাকে নাকি বক্তব্য নেওয়ার ফোন করা হয়েছে, আমি এ বিষয়ে মোটেও অবগত নই। কারণ আমি ফোন রিসিভ করলে সমস্যা কোথায়, কে বা কারা আমাকে ফোন করলে আমি রিসিভ করবো না কেন, যদি এমন হতো তাহলে সাংবাদিক না হয়ে অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও তো আমাকে কল করলে, আমি জানতাম সে সাংবাদিক অন্য কেউ। আমাকে কোন সাংবাদিক কল করেনি। এটি একটি ভুয়া ঢাহা মিথ্যা অপবাধ দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু নই। আমার প্রাণপ্রিয় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে উক্ত বিষয়টি আপনারা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখুন। সে টাকা গুলো আসলে কিসের টাকা।
আমি উক্ত সুপারের কোন অনৈতিক কাজ করিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা গুলো নিই নাই বা আমাকে উক্ত সুপার কর্তৃক টাকা দেওয়ার কোন মানেই হয় না। সে টাকা শুধুমাত্র বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার খরচের জন্য আমি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক হিসেবে উত্তোলন করেছি। সে টাকা গুলো জাতীয় গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রযোগিতার জন্য খরচ করা হয়। আর একটি কথা না বললে নই, আমি তাকে বলেছি, কাজ হয়ে যাবে, আসলেই তো হবে, কেন না, যারা সার্টিফিকেট জাল করে দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে শিক্ষকতা করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে তো অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ হবে। এখানে তদন্ত ছাড়া কোন কিছু আমার ব্যক্তিগতভাবে কারো প্রতি আক্রোসমূলক ক্ষতি করার প্রয়োজন নেই। তদন্তে যা আসবে, তাতেই কাজ হবে। বিশেষভাবে আমার প্রাণপ্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা এসব কিছু প্রচার করার আগেই সুষ্টুভাবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রচারণ করুন। আর বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন বটে। বক্তব্য ছাড়া এভাবে একজন মানুষকে অহেতুক হয়রানি করার কোন মানে হয় না। তাই আপনারা যাচাই বাছাই পূর্বক সংবাদ প্রকারশ করলে জাতি উপকৃত হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরণের সংবাদ কিংবা ভিডিও ভাইরাল করার আগে যাচাই—বাছাই করে সংবাদ পরিবেশন করার জন্য প্রাণপ্রিয় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
প্রতিবাদকারী
(নজরুল ইসলাম)
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা
চকরিয়া, কক্সবাজার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি