১১:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রত্যাবাসন না হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর হাব হবে

  • এন.এ সাগর
  • প্রকাশিত সময় : ১১:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪
  • ১১০ ভিউ

মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে করা আশংকার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এসব রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকে বলে আসছিলাম এদের দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে এখানে অস্তিরতা তৈরি হতে পারে। এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এই হতে পারার মধ্যে কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছে তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ কোন মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে। এখন ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক লোক মাদকের সাথে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেয়ায় আমাদের মুল কাজ।

শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকাল ১১ টায় উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন কার্যালয়ে যান। ওখানে সোয়া ১২ টা পর্যন্ত সভা করেন এপিবিএন কর্মকর্তাদের সাথে। এরপর পরই কথা বলেন সাংবাদিকদের সাথে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় সাংবাদিকদের বলেন, আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তা নিয়োজিত এপিবিএন এর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জ সমুহ জেনেছি। জেনেছি তাদের সুবিধা-অসুবিধা সমুহ। তাদের বলেছি বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে। এপিবিএন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করছেন। এপিবিএন তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা সহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিয়ানমার একটি অস্থিরশীল দেশ। ওখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা মিয়ানমারের কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেন।

এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ী এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ওখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যান টেকনাফে। ওখানে বিজিবি সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেন তিনি।

পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর, ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল, ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক হাসান বারী সহ সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউসে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা’য় প্রধান অতিথি ছিলেন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রত্যাবাসন না হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর হাব হবে

প্রকাশিত সময় : ১১:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে করা আশংকার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এসব রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকে বলে আসছিলাম এদের দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে এখানে অস্তিরতা তৈরি হতে পারে। এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। এই হতে পারার মধ্যে কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যারা যুদ্ধ করছে তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ কোন মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে। এখন ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক লোক মাদকের সাথে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেয়ায় আমাদের মুল কাজ।

শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকাল ১১ টায় উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন কার্যালয়ে যান। ওখানে সোয়া ১২ টা পর্যন্ত সভা করেন এপিবিএন কর্মকর্তাদের সাথে। এরপর পরই কথা বলেন সাংবাদিকদের সাথে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় সাংবাদিকদের বলেন, আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তা নিয়োজিত এপিবিএন এর সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জ সমুহ জেনেছি। জেনেছি তাদের সুবিধা-অসুবিধা সমুহ। তাদের বলেছি বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে। এপিবিএন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করছেন। এপিবিএন তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের কথা ও কাজে মিল নেই বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা সহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিয়ানমার একটি অস্থিরশীল দেশ। ওখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা মিয়ানমারের কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেন।

এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ী এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ওখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যান টেকনাফে। ওখানে বিজিবি সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেন তিনি।

পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর, ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. ইকবাল, ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক হাসান বারী সহ সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউসে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা’য় প্রধান অতিথি ছিলেন।