০৬:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘প্রথমবার’ আটক ভারতীয়দের ফেরত দেয়নি বিজিবি, বিস্মিত বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারকালে গত রোববার (১৮ আগস্ট) অস্ত্রসহ পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। এরপর বিজিবির সঙ্গে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও তাদের ফেরত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয়দের বিজিবি ফেরত না দেওয়ার ঘটনা এটাই ‘প্রথম’ বলে জানিয়েছেন বিএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এমন ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত তারা।

জানা যায়, রোববার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর সীমান্তের পদ্মা নদীতে নৌকায় করে তিনটি গরু পাচারকালে অস্ত্রসহ পাঁচ ভারতীয়কে আটক করে বিজিবি।

আটক ভারতীয় চোরাকারবারিরা হলেন মুর্শিদাবাদ এলাকার রতন সিংহের ছেলে দ্বীপ সিংহ, বাইতুল হলদারের ছেলে রনি মহালদার, মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে সারফরাজ ইসলাম, আলেক শেখের ছেলে আসলাম শেখ ও মেনাউলের ছেলে ওলিল মহালদার। ৫৩-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনির উজ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার ও সোমবার বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও আটক ভারতীদের ফেরত দিতে রাজি হয়নি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ।

বিএসএফের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার দাবি, গত ১৭ আগস্ট রাতে মালদার নদী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা গবাদি পশু উদ্ধারের জন্য দুই নৌকায় পাঁচজনকে ভাড়া করেছিলেন ১১৫ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা। এসময় একটি নৌকায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সেটি স্রোতের টানে ভেসে যায়। সেটিকে টেনে আনার চেষ্টা করেছিল দ্বিতীয় নৌকা। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে উভয় নৌকাই ‘অসাবধানতাবশত’ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। সেখানে এই পাঁচজনকে আটক করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) বাহিনী।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুসারে, সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের সদর দপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিজিবি সদস্যদের ফোন করে বিষয়টি জানান। কিন্তু বিজিবি জওয়ানরা আটক পাঁচ ভারতীয়কে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করলে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএসএফ কর্মকর্তারা দাবি করেন, অনুপ্রবেশের ঘটনাটি দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ‘ভুলক্রমে’ ঘটে গেছে। অনুপ্রবেশকারীদের কোনো ‘খারাপ উদ্দেশ্য’ ছিল না। তাই দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ‘সুসম্পর্কের স্বার্থে’ আটক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায় বিএসএফ।

কিন্তু ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির’ কারণ দেখিয়ে আটক ভারতীয়দের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান বিজিবি সদস্যরা। পরে পাঁচ অনুপ্রবেশকারীকে স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এ কে আর্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজিবি’কে সুসম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে ভারতীয় মাঝিদের ফেরত দিতে বলা হয়। কিন্তু তারা এতে রাজি হয়নি। বিজিবি এই প্রথমবার ‘অসাবধানতাবশত’ বাংলাদেশে ঢুকে পড়া ভারতীয় মাঝিদের ফেরত দেয়নি।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

উখিয়ায় ক্যাম্পে রোহিঙ্গা যুবক’কে গলাটিপে হত্যা!

‘প্রথমবার’ আটক ভারতীয়দের ফেরত দেয়নি বিজিবি, বিস্মিত বিএসএফ

প্রকাশিত সময় : ০১:৩৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারকালে গত রোববার (১৮ আগস্ট) অস্ত্রসহ পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে আটক করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। এরপর বিজিবির সঙ্গে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও তাদের ফেরত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ভারতীয়দের বিজিবি ফেরত না দেওয়ার ঘটনা এটাই ‘প্রথম’ বলে জানিয়েছেন বিএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এমন ঘটনায় রীতিমতো বিস্মিত তারা।

জানা যায়, রোববার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর সীমান্তের পদ্মা নদীতে নৌকায় করে তিনটি গরু পাচারকালে অস্ত্রসহ পাঁচ ভারতীয়কে আটক করে বিজিবি।

আটক ভারতীয় চোরাকারবারিরা হলেন মুর্শিদাবাদ এলাকার রতন সিংহের ছেলে দ্বীপ সিংহ, বাইতুল হলদারের ছেলে রনি মহালদার, মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে সারফরাজ ইসলাম, আলেক শেখের ছেলে আসলাম শেখ ও মেনাউলের ছেলে ওলিল মহালদার। ৫৩-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনির উজ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার ও সোমবার বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হলেও আটক ভারতীদের ফেরত দিতে রাজি হয়নি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ।

বিএসএফের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার দাবি, গত ১৭ আগস্ট রাতে মালদার নদী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা গবাদি পশু উদ্ধারের জন্য দুই নৌকায় পাঁচজনকে ভাড়া করেছিলেন ১১৫ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা। এসময় একটি নৌকায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সেটি স্রোতের টানে ভেসে যায়। সেটিকে টেনে আনার চেষ্টা করেছিল দ্বিতীয় নৌকা। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে উভয় নৌকাই ‘অসাবধানতাবশত’ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। সেখানে এই পাঁচজনকে আটক করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) বাহিনী।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুসারে, সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের সদর দপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিজিবি সদস্যদের ফোন করে বিষয়টি জানান। কিন্তু বিজিবি জওয়ানরা আটক পাঁচ ভারতীয়কে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করলে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএসএফ কর্মকর্তারা দাবি করেন, অনুপ্রবেশের ঘটনাটি দায়িত্বপালন করতে গিয়ে ‘ভুলক্রমে’ ঘটে গেছে। অনুপ্রবেশকারীদের কোনো ‘খারাপ উদ্দেশ্য’ ছিল না। তাই দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ‘সুসম্পর্কের স্বার্থে’ আটক ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায় বিএসএফ।

কিন্তু ‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির’ কারণ দেখিয়ে আটক ভারতীয়দের ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান বিজিবি সদস্যরা। পরে পাঁচ অনুপ্রবেশকারীকে স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এ কে আর্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজিবি’কে সুসম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে ভারতীয় মাঝিদের ফেরত দিতে বলা হয়। কিন্তু তারা এতে রাজি হয়নি। বিজিবি এই প্রথমবার ‘অসাবধানতাবশত’ বাংলাদেশে ঢুকে পড়া ভারতীয় মাঝিদের ফেরত দেয়নি।