০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অব্যাহতভাবে অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটিতে ইসরায়েলি অভিযান থামাতে যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতারসহ একাধিক দেশ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কাতার থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির গাজার উপপ্রধান খলিল আল হায়া জানান, যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে তাতে ইসরায়েল সাড়া দিয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১৩ এপ্রিল মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল তাতে দখলদার ইসরায়েল সাড়া দিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। রমজানের আগে এই চুক্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও এখন দুপক্ষের মতবিরোধের কারণে তা স্থবির হয়ে পড়ে আছে।

কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বার যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে হামাস প্রতিবারই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। এছাড়া তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করছে। হামামের এমন কঠোর প্রস্তাবের কারণে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি ইসরায়েল।

দুই পক্ষের মতানৈক্যের অবসান ঘটাতে বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে যায় মিসরের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। এছাড়া একই দিনে হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য গোষ্ঠীটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৭টি দেশ চিঠি দেয়।

বৃহস্পতিবার চিঠির প্রতিক্রিয়ায় হামাস নেতারা বলেন, তারা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথানত করবেন না। এর কয়েক ঘণ্টা পর তারা আবারও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে কোনো প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হামাস।’

মিসরের প্রতিনিধি দলের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ১৩ এপ্রিল পাঠানো প্রস্তাবে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দিতে হামাস সম্মত হয়েছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল

প্রকাশিত সময় : ০৬:১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অব্যাহতভাবে অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটিতে ইসরায়েলি অভিযান থামাতে যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতারসহ একাধিক দেশ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কাতার থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির গাজার উপপ্রধান খলিল আল হায়া জানান, যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে তাতে ইসরায়েল সাড়া দিয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ১৩ এপ্রিল মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল তাতে দখলদার ইসরায়েল সাড়া দিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।

অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। রমজানের আগে এই চুক্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও এখন দুপক্ষের মতবিরোধের কারণে তা স্থবির হয়ে পড়ে আছে।

কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বার যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে হামাস প্রতিবারই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। এছাড়া তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করছে। হামামের এমন কঠোর প্রস্তাবের কারণে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি ইসরায়েল।

দুই পক্ষের মতানৈক্যের অবসান ঘটাতে বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে যায় মিসরের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। এছাড়া একই দিনে হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য গোষ্ঠীটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৭টি দেশ চিঠি দেয়।

বৃহস্পতিবার চিঠির প্রতিক্রিয়ায় হামাস নেতারা বলেন, তারা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথানত করবেন না। এর কয়েক ঘণ্টা পর তারা আবারও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে কোনো প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হামাস।’

মিসরের প্রতিনিধি দলের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ১৩ এপ্রিল পাঠানো প্রস্তাবে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দিতে হামাস সম্মত হয়েছে।