০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধুদের ‘জোরাজুরিতে’ অতিরিক্ত মদপানে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশিত সময় : ১০:৫১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • ৭৮ ভিউ

চুয়াডাঙ্গায় বন্ধুদের জোরাজুরিতে অতিরিক্ত মদপানে হামিম নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হামিম (১৬) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়শলুয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার কৃষক মহিবুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় আরাফাত হোসেন স্মরণী বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। দুই ভাই-বোনের মধ্যে হামিম ছিল দ্বিতীয়।

এদিকে মৃত্যুর পর সদর হাসপাতাল থেকে হামিমের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

হামিমের নানা মিনাজ উদ্দিন বলেন, সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে ৮ বন্ধু হামিমকে নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় দোকান থেকে মুড়ি ও চানাচুর কিনে আরাফাত হোসেন স্মরণী বিদ্যাপীঠের পাশে একটি মাঠে সবাই মিলে মদপান করে। এ সময় হামিমকে জোরাজুরি করে তিন বোতল মদপান করালে সে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে হামিম মারা গেছে ভেবে বন্ধুরা তাকে ফেলে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, এরপর তাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পেলে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় এক কৃষক হামিমকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে ভ্যানে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে আমরা গ্রাম্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও অবস্থার অবনতি হয়। পরদিন বুধবার ভোরে হামিমকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঈদের দিন সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার নাতি মারা যায়।

মিনাজ উদ্দিন বলেন, আমার নাতি আজ পর্যন্ত ধুমপান পর্যন্ত করেনি। তাকে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে মদপান করায় তার বন্ধুরা। হামিমের কাছে নগদ সাত হাজার টাকা ছিল। টাকাগুলো নিয়ে নিয়েছে। তার মোবাইলটিও ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। আমার নাতিকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং (ইউপি) সদস্য মো. শমসের আলী বলেন, হামিমসহ ৪-৫ জন বন্ধু মিলে মদ কিনে একসঙ্গে পান করে। অতিরিক্ত মদপানে হামিম অচেতন পড়লে তাকে রেখে সবাই চলে যায়। পরদিন সকালে স্থানীয়রা হামিমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। ঈদের দিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

তিনি আরও বলেন, হামিম অত্যন্ত ভালো প্রকৃতির ছেলে ছিল। আমার জানা মতে, যে নেশায় আসক্ত ছিল না। এবার রমজানে সবগুলো রোজা রেখেছিল। এমনকি ঘটনার দিন আমার বাড়িতেও কাজ করেছে হামিম।

দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

‘স্টেপ ডাউন ইউনুস’পোস্ট করে আটক হলেন যুবক!

বন্ধুদের ‘জোরাজুরিতে’ অতিরিক্ত মদপানে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

প্রকাশিত সময় : ১০:৫১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় বন্ধুদের জোরাজুরিতে অতিরিক্ত মদপানে হামিম নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হামিম (১৬) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়শলুয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার কৃষক মহিবুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় আরাফাত হোসেন স্মরণী বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। দুই ভাই-বোনের মধ্যে হামিম ছিল দ্বিতীয়।

এদিকে মৃত্যুর পর সদর হাসপাতাল থেকে হামিমের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

হামিমের নানা মিনাজ উদ্দিন বলেন, সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে ৮ বন্ধু হামিমকে নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় দোকান থেকে মুড়ি ও চানাচুর কিনে আরাফাত হোসেন স্মরণী বিদ্যাপীঠের পাশে একটি মাঠে সবাই মিলে মদপান করে। এ সময় হামিমকে জোরাজুরি করে তিন বোতল মদপান করালে সে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে হামিম মারা গেছে ভেবে বন্ধুরা তাকে ফেলে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, এরপর তাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও না পেলে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় এক কৃষক হামিমকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে ভ্যানে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে আমরা গ্রাম্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও অবস্থার অবনতি হয়। পরদিন বুধবার ভোরে হামিমকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঈদের দিন সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার নাতি মারা যায়।

মিনাজ উদ্দিন বলেন, আমার নাতি আজ পর্যন্ত ধুমপান পর্যন্ত করেনি। তাকে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে মদপান করায় তার বন্ধুরা। হামিমের কাছে নগদ সাত হাজার টাকা ছিল। টাকাগুলো নিয়ে নিয়েছে। তার মোবাইলটিও ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। আমার নাতিকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং (ইউপি) সদস্য মো. শমসের আলী বলেন, হামিমসহ ৪-৫ জন বন্ধু মিলে মদ কিনে একসঙ্গে পান করে। অতিরিক্ত মদপানে হামিম অচেতন পড়লে তাকে রেখে সবাই চলে যায়। পরদিন সকালে স্থানীয়রা হামিমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। ঈদের দিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

তিনি আরও বলেন, হামিম অত্যন্ত ভালো প্রকৃতির ছেলে ছিল। আমার জানা মতে, যে নেশায় আসক্ত ছিল না। এবার রমজানে সবগুলো রোজা রেখেছিল। এমনকি ঘটনার দিন আমার বাড়িতেও কাজ করেছে হামিম।

দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।