বাইডেনের হুঁশিয়ারির কোনো তোয়াক্কা না করেই রাফায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার রাফায় হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে বাইডেন ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, ইসরায়েল যদি দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে আক্রমণ চালায় তবে তিনি তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। হামাসের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন প্রথমবারের মতো এটাই ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা ছিল।
কিন্তু বাইডেনের এই সতর্কবার্তা কানে তোলেনি ইসরায়েল। তারা ইতোমধ্যেই রাফায় ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে এবং সেখানে অভিযান শুরু হয়েছে। রাফাকে হামাসের শেষ ঘাঁটি উল্লেখ করে সেখানে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে রাফায় ভারী গোলাবর্ষণ হয়েছে। পরবর্তীতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
এদিকে রাফায় হামলা না চালানোর বিষয়ে বাইডেনের সতর্কবার্তাকে হতাশাজনক বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েল। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মার্কিন বোমা নিক্ষেপের ফলে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনারও নিন্দা জানান বাইডেন।
মিশরীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাফা শহরে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ অসহায় ফিলিস্তিনি। তাদের এখন আর কোথাও যাওয়ার মতো জায়গা নেই। গাজার এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়নি। এখন যদি ইসরায়েল রাফায় পূর্ণ মাত্রায় হামলা চালায় তবে আশ্রয়হীন এসব মানুষ কোথায় যাবে?
রাফা শহরে ইসরায়েল বড় ধরনের হামলা চালাতে প্রস্তুত এমন উদ্বেগ থেকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে বোমার একটি চালান বন্ধ করার পরেই নতুন করে সতর্কবার্তা দেওয়া হলো।
ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাইডেন বলেন, যদি তারা রাফায় হামলা চালায় তবে আমি তাদের অস্ত্র সরবরাহ করবো না। রাফায় হামলা চালানোর জন্য যেসব অস্ত্র এবং কামানের গোলা ব্যবহার করা হয়েছে তা সরবরাহ করব না।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি রাফায় আক্রমণ করবেন। ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত নন। তিনি রাফায় হামলা চালানোর পক্ষপাতি নন।
মঙ্গলবার শুরুর দিকে রাফার সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওই সীমান্ত ক্রসিং দিয়েই ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন সেখানকার নিয়ন্ত্রণও ইসরায়েলের হাতে চলে যাওয়ায় ত্রাণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হতে পারে বলে শুরু থেকেই সতর্ক করছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজার হাসপাতালগুলোত মাত্র তিন দিন চলার মতো জ্বালানি রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, জ্বালানি ছাড়া সব ধরনের মানবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে ও সংকট আরও তীব্র হবে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (৭ মে) দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে সেনা ও ট্যাঙ্ক পাঠিয়েছে ইসরায়েল। এই শহরে অবস্থিত ক্রসিংটি অবরুদ্ধ গাজা উপ্যতকায় বিদেশি সহায়তা পৌঁছানোর মূল পথ। কিন্তু এই পথ দিয়ে গাজায় জ্বালানি ঢুকতে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।