০৮:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বারান্দায় কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলি লাগে নাইমার

সামনে মেয়ে, পেছনে মা। মায়ের সঙ্গে চারতলার বাসার বারান্দায় শুকানো কাপড় আনতে যান রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার সুলতানা (১৫)। এ সময় তাদের বাসার নিচে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। হঠাৎ একটি গুলি তার মাথায় লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এর পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান সুলতানা।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ঢাকা পোস্টের কাছে এভাবেই স্কুল শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার সুলতানা নিহত হওয়ার বর্ণনা দেন তার বাবা গোলাম মোস্তফা দেওয়ান।

তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করে সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত করব। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে স্ত্রী-সন্তানকে অজোগাঁপাড়া গ্রাম থেকে পাঠিয়ে দিই রাজধানীর উত্তরায়। সেখানে ২০২১ সালে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে ভর্তি করাই। এর আগে মতলব দক্ষিণের নারায়ণপুরে একটি প্রাইমারি স্কুল থেকে বৃত্তিপায় মেয়েটি। পরে পুটিয়া হাইস্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পাস করে। এখন আমার সব শেষ। আমি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য উত্তরায় বাসা নিয়েছি। ঘটনার দিন, বারান্দায় শুকানো কাপড় আনতে যায় মেয়েটি। বারন্দা গেলে সেখানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। গুলির আঘাতে আমার মেয়ের মাথার মগজ খুলে যায়। আমার তিন সন্তানের মধ্যে মেয়েটি অনেক ভালো ছাত্রী ছিল।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে আমার সন্তানরা অংশগ্রহণ করেনি। কী অপরাধ ছিল আমার মেয়ের? সে তো আন্দোলনে যায়নি? তাহলে কী অপরাধে কারা এমন করে আমার মেয়েটাকে মারল? কার কাছে বিচার চাইব? আমি এখন কী নিয়া বাঁচব? জানি না ওপারে আমার মেয়েটা এখন কীভাবে আছে। আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। বিনা অপরাধে পৃথিবী থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

চকরিয়ায় বসতভিটা ও দোকান দখলের জন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট: আহত ৫

বারান্দায় কাপড় আনতে গিয়ে মাথায় গুলি লাগে নাইমার

প্রকাশিত সময় : ০৮:৩৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

সামনে মেয়ে, পেছনে মা। মায়ের সঙ্গে চারতলার বাসার বারান্দায় শুকানো কাপড় আনতে যান রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার সুলতানা (১৫)। এ সময় তাদের বাসার নিচে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। হঠাৎ একটি গুলি তার মাথায় লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এর পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান সুলতানা।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে ঢাকা পোস্টের কাছে এভাবেই স্কুল শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার সুলতানা নিহত হওয়ার বর্ণনা দেন তার বাবা গোলাম মোস্তফা দেওয়ান।

তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করে সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত করব। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে স্ত্রী-সন্তানকে অজোগাঁপাড়া গ্রাম থেকে পাঠিয়ে দিই রাজধানীর উত্তরায়। সেখানে ২০২১ সালে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে ভর্তি করাই। এর আগে মতলব দক্ষিণের নারায়ণপুরে একটি প্রাইমারি স্কুল থেকে বৃত্তিপায় মেয়েটি। পরে পুটিয়া হাইস্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পাস করে। এখন আমার সব শেষ। আমি ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য উত্তরায় বাসা নিয়েছি। ঘটনার দিন, বারান্দায় শুকানো কাপড় আনতে যায় মেয়েটি। বারন্দা গেলে সেখানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। গুলির আঘাতে আমার মেয়ের মাথার মগজ খুলে যায়। আমার তিন সন্তানের মধ্যে মেয়েটি অনেক ভালো ছাত্রী ছিল।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে আমার সন্তানরা অংশগ্রহণ করেনি। কী অপরাধ ছিল আমার মেয়ের? সে তো আন্দোলনে যায়নি? তাহলে কী অপরাধে কারা এমন করে আমার মেয়েটাকে মারল? কার কাছে বিচার চাইব? আমি এখন কী নিয়া বাঁচব? জানি না ওপারে আমার মেয়েটা এখন কীভাবে আছে। আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। বিনা অপরাধে পৃথিবী থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।