০৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশাল লক্ষ্যে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিন শেষ বাংলাদেশের

প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: তৃতীয় দিন- বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভারে ৪৭/৫ (মুমিনুল ৭*, তাইজুল ৬*, দীপু ০, লিটন ০, জাকির হাসান ১৯, মাহমুদুল হাসান জয় ০, নাজমুল হোসেন শান্ত ৬), লক্ষ্য ৫১১ রান।

শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ১১০.৪ ওভারে ৪১৮/১০ ( রাজিথা ৪*; দিমুথ করুণারত্নে ৫২, নিশান মাদুশকা ১০, কুশল মেন্ডিস ৩, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ২২, দিনেশ চান্ডিমাল ০, বিশ্ব ৪, ধনাঞ্জয়া ১০৮, প্রবাথ ২৫, লাহিরু ০, কামিন্দু ১৬৪) শ্রীলঙ্কার লিড ৫১০ রান।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫১.৩ ওভারে ১৮৮/১০ (রানা ০*; জাকির ৯, শান্ত ৫, মুমিনুল ৫, জয় ১২, শাহাদাত ১৮, লিটন ২৫, তাইজুল ৪৭, মিরাজ ১১, শরিফুল ১৫, খালেদ ২২)।

শ্রীলঙ্কা ৬৮ ওভারে প্রথম ইনিংসে ২৮০/১০ (রাজিথা ৬*; মাদুশকা ২, মেন্ডিস ১৬, করুণারত্নে ১৭, ম্যাথুজ ৫, চান্ডিমাল ৯, কামিন্দু ১০২, ধনাঞ্জয়া ১০২, প্রবাথ ১, ফার্নান্ডো ৯, কুমারা ০)।

বিশ্ব ফার্নান্ডোকে চার মারলেন তাইজুল ইসলাম। শেষ হলো তৃতীয় দিনের খেলা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সর্বোচ্চ রান করা নাইটওয়াচম্যান অপরাজিত থাকলেন ৬ রানে। বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে আবারও তাকে দিয়েই শেষ করতে হলো দিনের খেলা। অন্য প্রান্তে ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৭ রান। তাদের লক্ষ্য ৫১১ রানের। হার একপ্রকার নিশ্চিত, ব্যবধানটা বাংলাদেশ কত কমাতে পারে, সেটাই অপেক্ষা। এখনও তারা পিছিয়ে ৪৬৪ রানে।

চার খেয়ে বিশ্ব দিন শেষ করলেও নবম ওভারে পরপর দুটি উইকেট নেন। শাহাদাত হোসেন দীপু ও লিটন দাস তার বলে ডাক মারেন। তার আগের ওভারে লাহিরু কুমারা জাকির হাসানকে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ বানান। ২ উইকেটে ৩৬ রান করা বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ৩৭!

তারও আগেই প্রথম দুই ওভারে মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের চতুর্থ বলে জয়কে ফেরান বিশ্ব, শান্ত কাসুন রাজিথার শিকার।

এর আগে কামিন্দু মেন্ডিসের ১৬৪ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ১০৮ রানে চড়ে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১০ রানের লিড পায়। তারা ৪১৮ রানে অলআউট হয়। তাদের দিন শুরু হয়েছিল ৫ উইকেটে ১১৯ রানে।

বাংলাদেশের পক্ষে এই ইনিংসে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

৩৭ রানে নেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট

দুই ওভার শেষে ৯ রানের মধ্যে মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত উইকেট হারান। ছোট্ট প্রতিরোধ গড়েছিলেন জাকির হাসান ও মুমিনুল হক। ২৭ রানের তাদের জুটি ভেঙে গেলে আবার বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১ রানের ব্যবধানে জাকির, শাহাদাত হোসেন দীপু ও লিটন দাস উইকেট হারান। নবম ওভারে পরপর দীপু ও লিটনকে ফেরান বিশ্ব ফার্নান্ডো। ৩৭ রানে নেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট।

বড় লক্ষ্যে নেমে জয়, শান্তর বিদায়

৫১১ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে বরাবরের মতো প্রত্যাশিত সূচনা হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই উইকেট হারিয়েছে। বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। আম্পায়ার আউট দিলে জয় রিভিউ নিয়েছিলেন। যদিও লাভ হয়নি তাতে। জয় সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা না খুলে। জয়ের আউটের কোনও প্রভাব অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ওপর যদিও পড়েনি। নেমে একই ওভারে চার মেরেছেন। দ্বিতীয় ওভারেও একইভাবে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। তাতে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। রাজিথার অফ স্টাম্পের যথেষ্ট বাইরের বল খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে আউট হয়েছেন।

৪১৮ রানে শেষ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস, লিড ৫১০

আগের দিন ৫ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা তৃতীয় দিনের শুরুতেই বিশ্ব ফার্নান্ডোকে হারিয়েছিল। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও চাপের এই সময়টায় লঙ্কান ইনিংসকে পরিণতি দিলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। টানা দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তারা। প্রায় দুই সেশন বাংলাদেশকে শাসন করা ১৭৩ রানের সপ্তম এই জুটি ভাঙে ধনাঞ্জয়ার (১০৮) বিদায়ে। ততক্ষণে লিড ছিল ৩৯১। তার পর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে একার লড়াইয়ে দলের লিড পাঁচশ ছাড়িয়েছেন কামিন্দু। প্রবাথকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৬৭ রান যোগ করেছেন। রাজিথাকে নিয়েও শেষ জুটিতে যোগ করেছেন ৫২! তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে রানের পাহাড়ে চড়ে লঙ্কান দল। ২৩৭ বলে ১৬৪ রান করা কামিন্দুকে তাইজুল আউট করলে ৪১৮ রানে থেমেছে লঙ্কানদের ইনিংস। তারা ৫১০ রানের লিড পাওয়ায় বাংলাদেশের সামনে দাঁড়িয়েছে অসম্ভব লক্ষ্য (৫১১)। টেস্টে সফল রান তাড়ার নজিরটি ৪১৭ রানের।

৭৪ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭৫ রানে দুটি নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ১২৮ রানে নাহিদ রানাও দুটি শিকার করেছেন। একটি করে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ।

মিরাজের আঘাতে ভেঙেছে সপ্তম উইকেট জুটি। ৬৭ রানের অষ্টম জুটিটিও ভেঙেছেন এই অফস্পিনার। প্রবাথকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন ২৫ রানে। ততক্ষণে লিড সাড়ে চারশ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার। মিরাজ একই ওভারে কুমারাকেও সাজঘরে পাঠিয়ে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসকে শেষের কাছে নিয়ে গেছেন। তার পরেও কামিন্দু ক্রিজে এগিয়ে নিচ্ছেন লঙ্কান দলকে। তাকে ফেরানোর সুযোগও ছিল। কিন্তু ১৩৫ রানে কামিন্দুকে জীবন দিয়েছেন লিটন। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি তিনি।

চারশ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার লিড, টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি কামিন্দুর

সকাল থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম সেশন থেকে দাপট দেখানো এই জুটি ভাঙে দ্বিতীয় সেশনে সেঞ্চুরি পাওয়া ধনাঞ্জয়ার বিদায়ে। তার পরেও প্রতিরোধ দুর্বল হয়নি শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশকে হতাশ করে কামিন্দু মেন্ডিস টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। তার ব্যাটেই চা বিরতির আগে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়িয়েছে ৪৩০। দ্বিতীয় সেশন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৩৩৮। কামিন্দু ১০০* রানে ব্যাট করছেন। সঙ্গে রয়েছেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া ১৩।

১৭৩ রানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন থেকে শাসন করছিল ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা-কামিন্দু মেন্ডিস জুটি। দ্বিতীয় সেশনে এসে ১৭৩ রানের জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেঞ্চুরি পাওয়া ধনাঞ্জয়াকে ১০৮ রানে তালুবন্দি করিয়েছেন। ততক্ষণে অবশ্য লঙ্কানদের লিড দাঁড়িয়ে গেছে ৩৯১ রানে! লঙ্কান অধিনায়ক ফিরলেও সেঞ্চুরির পথে রয়েছেন কামিন্দু।

তৃতীয় দিনের লাঞ্চ থেকে ফিরেও লক্ষ্যে অবিচল শ্রীলঙ্কা। দুই সেট ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন। আগের ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ধনাঞ্জয়া। তুলে নিয়েছেন ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। তাতে দলটির হয়ে ২০১৪ সালের পর প্রথম ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। সর্বশেষবার এমনটা করেছিলেন কুমারা সাঙ্গাকারা। সঙ্গী কামিন্দুও দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন তাকে। প্রথম ইনিংসের মতো তিনিও সেঞ্চুরির দিকে ছুটছেন। তাতে সিলেট টেস্টে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটছে শ্রীলঙ্কা।

অবশ্য ৯৪ রানে ধনাঞ্জয়াকে আউটের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। মিরাজের ওভারে বল গ্লাভস ছুঁয়ে লিটনের কাছে জমা পড়েছিল। কিন্তু আবেদন করেনি কেউ!

৩২৫ রানের লিড নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা

প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রতিরোধ গড়েছে ধনাঞ্জয়া-কামিন্দু জুটি। তাদের ‍জুটিতে ভর করেই ৩২৫ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে শ্রীলঙ্কা দল। তৃতীয় ওভারে একটি উইকেটই নিতে পারে বাংলাদেশ। বাকিটা সময় স্বাগতিকদের ওপর শাসন করেছে সপ্তম উইকেটের এই জুটি। তাদের ব্যাটেই সিলেট টেস্টের নিয়ন্ত্রণে এখন লঙ্কান দল।

ধনাঞ্জয়া ফিফটি তুলে তা সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাট করছেন। কামিন্দুও তুলে নিয়েছেন ফিফটি। শত রান ছাড়িয়েছে দুজনের জুটি। প্রথম সেশনে এই জুটি যোগ করেছে ১০৭ রান। তাদের ব্যাটে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটছে সফরকারীরা।

ধনাঞ্জয়ার ফিফটি

যে লক্ষ্যে তৃতীয় দিন খেলতে নামা তাতে সফল হয়নি বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে নাইটওয়াচম্যান বিশ্বকেই শুধু ফেরাতে পেরেছে স্বাগতিকরা। তার পর নির্বিঘ্নে সময় পার করেছেন কামিন্দু ও ধনাঞ্জয়া জুটি। তাদের প্রতিরোধে প্রথম ঘণ্টাতেই লিড আড়াইশ ছাড়িয়েছে। লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া তুলে নিয়েছেন ১৪তম ফিফটি। তার পর আগ্রাসনের মাত্রা বাড়িয়ে লক্ষ্য অনুযায়ী তিনশ ছাড়িয়েছে সফরকারীদের লিড।

নাইটওয়াচম্যান বিশ্বকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিন শুরু বাংলাদেশের

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় দিন ৯২ রানের লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা। এর পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। দুজনে যোগ করেন ৪৯ রান। হাফসেঞ্চুরি করা করুনরাত্নেকে শেষ পর্যন্ত ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙেছেন শরিফুল। ততক্ষণে অবশ্য লিড দাঁড়িয়ে যায় দুইশ রানের। অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা নাইটওয়াচম্যান বিশ্ব ফার্নান্ডোকে নিয়ে দিন পার করেন তার পর। এ দুই ব্যাটারকে নিয়েই তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে সফরকারী দল। তবে দিনের তৃতীয় ওভারে বিশ্ব ফার্নান্ডোকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ষষ্ঠ উইকেট ফেলে দিয়েছেন খালেদ। নাইটওয়াচম্যানকে চতুর্থ স্লিপে মিরাজের ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। ২৪ বল খেলে বিশ্ব করেছেন ৪ রান।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

বিশাল লক্ষ্যে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিন শেষ বাংলাদেশের

প্রকাশিত সময় : ০১:০৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: তৃতীয় দিন- বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভারে ৪৭/৫ (মুমিনুল ৭*, তাইজুল ৬*, দীপু ০, লিটন ০, জাকির হাসান ১৯, মাহমুদুল হাসান জয় ০, নাজমুল হোসেন শান্ত ৬), লক্ষ্য ৫১১ রান।

শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ১১০.৪ ওভারে ৪১৮/১০ ( রাজিথা ৪*; দিমুথ করুণারত্নে ৫২, নিশান মাদুশকা ১০, কুশল মেন্ডিস ৩, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ২২, দিনেশ চান্ডিমাল ০, বিশ্ব ৪, ধনাঞ্জয়া ১০৮, প্রবাথ ২৫, লাহিরু ০, কামিন্দু ১৬৪) শ্রীলঙ্কার লিড ৫১০ রান।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫১.৩ ওভারে ১৮৮/১০ (রানা ০*; জাকির ৯, শান্ত ৫, মুমিনুল ৫, জয় ১২, শাহাদাত ১৮, লিটন ২৫, তাইজুল ৪৭, মিরাজ ১১, শরিফুল ১৫, খালেদ ২২)।

শ্রীলঙ্কা ৬৮ ওভারে প্রথম ইনিংসে ২৮০/১০ (রাজিথা ৬*; মাদুশকা ২, মেন্ডিস ১৬, করুণারত্নে ১৭, ম্যাথুজ ৫, চান্ডিমাল ৯, কামিন্দু ১০২, ধনাঞ্জয়া ১০২, প্রবাথ ১, ফার্নান্ডো ৯, কুমারা ০)।

বিশ্ব ফার্নান্ডোকে চার মারলেন তাইজুল ইসলাম। শেষ হলো তৃতীয় দিনের খেলা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সর্বোচ্চ রান করা নাইটওয়াচম্যান অপরাজিত থাকলেন ৬ রানে। বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে আবারও তাকে দিয়েই শেষ করতে হলো দিনের খেলা। অন্য প্রান্তে ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৭ রান। তাদের লক্ষ্য ৫১১ রানের। হার একপ্রকার নিশ্চিত, ব্যবধানটা বাংলাদেশ কত কমাতে পারে, সেটাই অপেক্ষা। এখনও তারা পিছিয়ে ৪৬৪ রানে।

চার খেয়ে বিশ্ব দিন শেষ করলেও নবম ওভারে পরপর দুটি উইকেট নেন। শাহাদাত হোসেন দীপু ও লিটন দাস তার বলে ডাক মারেন। তার আগের ওভারে লাহিরু কুমারা জাকির হাসানকে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ বানান। ২ উইকেটে ৩৬ রান করা বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ৩৭!

তারও আগেই প্রথম দুই ওভারে মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের চতুর্থ বলে জয়কে ফেরান বিশ্ব, শান্ত কাসুন রাজিথার শিকার।

এর আগে কামিন্দু মেন্ডিসের ১৬৪ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ১০৮ রানে চড়ে শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১০ রানের লিড পায়। তারা ৪১৮ রানে অলআউট হয়। তাদের দিন শুরু হয়েছিল ৫ উইকেটে ১১৯ রানে।

বাংলাদেশের পক্ষে এই ইনিংসে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

৩৭ রানে নেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট

দুই ওভার শেষে ৯ রানের মধ্যে মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত উইকেট হারান। ছোট্ট প্রতিরোধ গড়েছিলেন জাকির হাসান ও মুমিনুল হক। ২৭ রানের তাদের জুটি ভেঙে গেলে আবার বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১ রানের ব্যবধানে জাকির, শাহাদাত হোসেন দীপু ও লিটন দাস উইকেট হারান। নবম ওভারে পরপর দীপু ও লিটনকে ফেরান বিশ্ব ফার্নান্ডো। ৩৭ রানে নেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট।

বড় লক্ষ্যে নেমে জয়, শান্তর বিদায়

৫১১ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে বরাবরের মতো প্রত্যাশিত সূচনা হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই উইকেট হারিয়েছে। বিশ্ব ফার্নান্ডোর বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। আম্পায়ার আউট দিলে জয় রিভিউ নিয়েছিলেন। যদিও লাভ হয়নি তাতে। জয় সাজঘরে ফিরেছেন রানের খাতা না খুলে। জয়ের আউটের কোনও প্রভাব অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ওপর যদিও পড়েনি। নেমে একই ওভারে চার মেরেছেন। দ্বিতীয় ওভারেও একইভাবে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। তাতে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। রাজিথার অফ স্টাম্পের যথেষ্ট বাইরের বল খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে আউট হয়েছেন।

৪১৮ রানে শেষ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস, লিড ৫১০

আগের দিন ৫ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা তৃতীয় দিনের শুরুতেই বিশ্ব ফার্নান্ডোকে হারিয়েছিল। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও চাপের এই সময়টায় লঙ্কান ইনিংসকে পরিণতি দিলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। টানা দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তারা। প্রায় দুই সেশন বাংলাদেশকে শাসন করা ১৭৩ রানের সপ্তম এই জুটি ভাঙে ধনাঞ্জয়ার (১০৮) বিদায়ে। ততক্ষণে লিড ছিল ৩৯১। তার পর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে একার লড়াইয়ে দলের লিড পাঁচশ ছাড়িয়েছেন কামিন্দু। প্রবাথকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৬৭ রান যোগ করেছেন। রাজিথাকে নিয়েও শেষ জুটিতে যোগ করেছেন ৫২! তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে রানের পাহাড়ে চড়ে লঙ্কান দল। ২৩৭ বলে ১৬৪ রান করা কামিন্দুকে তাইজুল আউট করলে ৪১৮ রানে থেমেছে লঙ্কানদের ইনিংস। তারা ৫১০ রানের লিড পাওয়ায় বাংলাদেশের সামনে দাঁড়িয়েছে অসম্ভব লক্ষ্য (৫১১)। টেস্টে সফল রান তাড়ার নজিরটি ৪১৭ রানের।

৭৪ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭৫ রানে দুটি নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ১২৮ রানে নাহিদ রানাও দুটি শিকার করেছেন। একটি করে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ।

মিরাজের আঘাতে ভেঙেছে সপ্তম উইকেট জুটি। ৬৭ রানের অষ্টম জুটিটিও ভেঙেছেন এই অফস্পিনার। প্রবাথকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন ২৫ রানে। ততক্ষণে লিড সাড়ে চারশ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার। মিরাজ একই ওভারে কুমারাকেও সাজঘরে পাঠিয়ে লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসকে শেষের কাছে নিয়ে গেছেন। তার পরেও কামিন্দু ক্রিজে এগিয়ে নিচ্ছেন লঙ্কান দলকে। তাকে ফেরানোর সুযোগও ছিল। কিন্তু ১৩৫ রানে কামিন্দুকে জীবন দিয়েছেন লিটন। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি তিনি।

চারশ ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার লিড, টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি কামিন্দুর

সকাল থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম সেশন থেকে দাপট দেখানো এই জুটি ভাঙে দ্বিতীয় সেশনে সেঞ্চুরি পাওয়া ধনাঞ্জয়ার বিদায়ে। তার পরেও প্রতিরোধ দুর্বল হয়নি শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশকে হতাশ করে কামিন্দু মেন্ডিস টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। তার ব্যাটেই চা বিরতির আগে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়িয়েছে ৪৩০। দ্বিতীয় সেশন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৩৩৮। কামিন্দু ১০০* রানে ব্যাট করছেন। সঙ্গে রয়েছেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া ১৩।

১৭৩ রানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন থেকে শাসন করছিল ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা-কামিন্দু মেন্ডিস জুটি। দ্বিতীয় সেশনে এসে ১৭৩ রানের জুটি ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেঞ্চুরি পাওয়া ধনাঞ্জয়াকে ১০৮ রানে তালুবন্দি করিয়েছেন। ততক্ষণে অবশ্য লঙ্কানদের লিড দাঁড়িয়ে গেছে ৩৯১ রানে! লঙ্কান অধিনায়ক ফিরলেও সেঞ্চুরির পথে রয়েছেন কামিন্দু।

তৃতীয় দিনের লাঞ্চ থেকে ফিরেও লক্ষ্যে অবিচল শ্রীলঙ্কা। দুই সেট ব্যাটার কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনাঞ্জয়া প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন। আগের ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ধনাঞ্জয়া। তুলে নিয়েছেন ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। তাতে দলটির হয়ে ২০১৪ সালের পর প্রথম ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। সর্বশেষবার এমনটা করেছিলেন কুমারা সাঙ্গাকারা। সঙ্গী কামিন্দুও দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন তাকে। প্রথম ইনিংসের মতো তিনিও সেঞ্চুরির দিকে ছুটছেন। তাতে সিলেট টেস্টে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটছে শ্রীলঙ্কা।

অবশ্য ৯৪ রানে ধনাঞ্জয়াকে আউটের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। মিরাজের ওভারে বল গ্লাভস ছুঁয়ে লিটনের কাছে জমা পড়েছিল। কিন্তু আবেদন করেনি কেউ!

৩২৫ রানের লিড নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা

প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রতিরোধ গড়েছে ধনাঞ্জয়া-কামিন্দু জুটি। তাদের ‍জুটিতে ভর করেই ৩২৫ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে শ্রীলঙ্কা দল। তৃতীয় ওভারে একটি উইকেটই নিতে পারে বাংলাদেশ। বাকিটা সময় স্বাগতিকদের ওপর শাসন করেছে সপ্তম উইকেটের এই জুটি। তাদের ব্যাটেই সিলেট টেস্টের নিয়ন্ত্রণে এখন লঙ্কান দল।

ধনাঞ্জয়া ফিফটি তুলে তা সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাট করছেন। কামিন্দুও তুলে নিয়েছেন ফিফটি। শত রান ছাড়িয়েছে দুজনের জুটি। প্রথম সেশনে এই জুটি যোগ করেছে ১০৭ রান। তাদের ব্যাটে বড় লক্ষ্যের দিকে ছুটছে সফরকারীরা।

ধনাঞ্জয়ার ফিফটি

যে লক্ষ্যে তৃতীয় দিন খেলতে নামা তাতে সফল হয়নি বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে নাইটওয়াচম্যান বিশ্বকেই শুধু ফেরাতে পেরেছে স্বাগতিকরা। তার পর নির্বিঘ্নে সময় পার করেছেন কামিন্দু ও ধনাঞ্জয়া জুটি। তাদের প্রতিরোধে প্রথম ঘণ্টাতেই লিড আড়াইশ ছাড়িয়েছে। লঙ্কান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া তুলে নিয়েছেন ১৪তম ফিফটি। তার পর আগ্রাসনের মাত্রা বাড়িয়ে লক্ষ্য অনুযায়ী তিনশ ছাড়িয়েছে সফরকারীদের লিড।

নাইটওয়াচম্যান বিশ্বকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিন শুরু বাংলাদেশের

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় দিন ৯২ রানের লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা। এর পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। দুজনে যোগ করেন ৪৯ রান। হাফসেঞ্চুরি করা করুনরাত্নেকে শেষ পর্যন্ত ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙেছেন শরিফুল। ততক্ষণে অবশ্য লিড দাঁড়িয়ে যায় দুইশ রানের। অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা নাইটওয়াচম্যান বিশ্ব ফার্নান্ডোকে নিয়ে দিন পার করেন তার পর। এ দুই ব্যাটারকে নিয়েই তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে সফরকারী দল। তবে দিনের তৃতীয় ওভারে বিশ্ব ফার্নান্ডোকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ষষ্ঠ উইকেট ফেলে দিয়েছেন খালেদ। নাইটওয়াচম্যানকে চতুর্থ স্লিপে মিরাজের ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। ২৪ বল খেলে বিশ্ব করেছেন ৪ রান।