১২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ কক্সবাজারবাসী

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশিত সময় : ০৬:৫২:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • ৯৩ ভিউ

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র নগরী ২ হাজার ৪ শত ৯১ দশমিক ৮৬ বর্গকি.মি. আয়তনের কক্সবাজার। যেখানে বিশাল জনসংখ্যার বসবাস। এছাড়া কক্সবাজারে প্রতিদিন লাখো পর্যটকের সমাগম থাকে। সব মিলিয়ে কক্সবাজার খুবই ব্যস্ততম নগরী। কিন্তু বর্তমানে মশার উৎপাত এতই বেড়ে গেছে যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরীর জনজীবন। বাসা—বাড়ি, স্কুল কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস এমনকি যানবাহনেও মশার হাত থেকে নিস্তার নেই।

যার ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীর দৈনিক প্রতিবেদনে গত ২০২৩ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৪৬৮ জন। তারমধ্যে পুরুষ ১৪৩৭ জন এবং নারী ১০৩১ জন। এতে ৫ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩০৮ জন ছিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের নাগরিক।

চলতি বছরের গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের ডেঙ্গু রোগী পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত জানুয়ারি মাসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়। তার মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং ১৯ জন মহিলা ডেঙ্গু রোগী। তার মধ্যেও ৩ জন রয়েছে মায়ানমারের নাগরিক। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়। তার মধ্যে ৯ জন রোগী মায়ানমারের নাগরিক।

সর্বশেষ, চলতি মার্চ মাসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয় ৪ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ মোট ৯ জন ডেঙ্গু রোগী। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, কক্সবাজার পৌরসভার নালা নর্দমা নিয়মিত পরিস্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণেই মশার বিস্তার ঘটছে। এছাড়া মশা নিধনে অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন পৌরবাসী।

কক্সবাজার পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মাজেদ বলেছেন, ‘সম্প্রতি এ শহরে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে কোথাও গিয়েও শান্তি নেই। বাসায়ও মশা, অফিসেও মশা। কোথাও মশার অত্যাচার থেকে বাঁচার উপায় নেই।’

পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মশা এত পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে খুব ভয়ে আছি। কারণ আমার বোনও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আমরা পৌরসভার মেয়রের নিকট আবেদন জানাচ্ছি মশা নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিষ্কার করার জন্য পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করছে। মশা নিধনের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার বংশ বিস্তার রোধে ওষুধ ছিটানো, স্প্রেসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মশার বংশবিস্তার ঘটে ফুলের টব, ভাঙ্গা হাড়ি—পাতিল, গাড়ীর পরিত্যক্ত টায়ার, টিনের কোঁটা, ভাঙ্গা কলস, ড্রাম, ডাব—নারিকেলের খোসা, এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটারের তলায় জমিয়ে থাকা পানিতে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত হওয়ার আগে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যেসব স্থানে মশা জন্মাতে পাতে সেসব স্থানের পানি জমতে দেবেন না। বাড়ীর ভেতরে, আশ—পাশ ও আঙ্গিনা পরিস্কার করুন। দিনে ঘুমানোরে সময়ও মশারি ব্যবহার করুন। ডাব— নারিকেলের খোসা, ভাঙ্গা কলস, টিনের কৌটা ব্যবহারের পর জমিয়ে না রেখে মাটিতে পুঁতে রাখুন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আইন শৃঙ্খলা, দ্রব্যমুল্য, সংস্কার বিষয়ে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- ধর্ম উপদেষ্টা

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ কক্সবাজারবাসী

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫২:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র নগরী ২ হাজার ৪ শত ৯১ দশমিক ৮৬ বর্গকি.মি. আয়তনের কক্সবাজার। যেখানে বিশাল জনসংখ্যার বসবাস। এছাড়া কক্সবাজারে প্রতিদিন লাখো পর্যটকের সমাগম থাকে। সব মিলিয়ে কক্সবাজার খুবই ব্যস্ততম নগরী। কিন্তু বর্তমানে মশার উৎপাত এতই বেড়ে গেছে যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরীর জনজীবন। বাসা—বাড়ি, স্কুল কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস এমনকি যানবাহনেও মশার হাত থেকে নিস্তার নেই।

যার ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীর দৈনিক প্রতিবেদনে গত ২০২৩ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৪৬৮ জন। তারমধ্যে পুরুষ ১৪৩৭ জন এবং নারী ১০৩১ জন। এতে ৫ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩০৮ জন ছিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের নাগরিক।

চলতি বছরের গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের ডেঙ্গু রোগী পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত জানুয়ারি মাসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়। তার মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং ১৯ জন মহিলা ডেঙ্গু রোগী। তার মধ্যেও ৩ জন রয়েছে মায়ানমারের নাগরিক। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোট ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়। তার মধ্যে ৯ জন রোগী মায়ানমারের নাগরিক।

সর্বশেষ, চলতি মার্চ মাসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয় ৪ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ মোট ৯ জন ডেঙ্গু রোগী। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, কক্সবাজার পৌরসভার নালা নর্দমা নিয়মিত পরিস্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণেই মশার বিস্তার ঘটছে। এছাড়া মশা নিধনে অপর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন পৌরবাসী।

কক্সবাজার পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মাজেদ বলেছেন, ‘সম্প্রতি এ শহরে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে কোথাও গিয়েও শান্তি নেই। বাসায়ও মশা, অফিসেও মশা। কোথাও মশার অত্যাচার থেকে বাঁচার উপায় নেই।’

পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মশা এত পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে খুব ভয়ে আছি। কারণ আমার বোনও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আমরা পৌরসভার মেয়রের নিকট আবেদন জানাচ্ছি মশা নিধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিষ্কার করার জন্য পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করছে। মশা নিধনের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশার বংশ বিস্তার রোধে ওষুধ ছিটানো, স্প্রেসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মশার বংশবিস্তার ঘটে ফুলের টব, ভাঙ্গা হাড়ি—পাতিল, গাড়ীর পরিত্যক্ত টায়ার, টিনের কোঁটা, ভাঙ্গা কলস, ড্রাম, ডাব—নারিকেলের খোসা, এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটারের তলায় জমিয়ে থাকা পানিতে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত হওয়ার আগে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যেসব স্থানে মশা জন্মাতে পাতে সেসব স্থানের পানি জমতে দেবেন না। বাড়ীর ভেতরে, আশ—পাশ ও আঙ্গিনা পরিস্কার করুন। দিনে ঘুমানোরে সময়ও মশারি ব্যবহার করুন। ডাব— নারিকেলের খোসা, ভাঙ্গা কলস, টিনের কৌটা ব্যবহারের পর জমিয়ে না রেখে মাটিতে পুঁতে রাখুন।