১১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহেশখালীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে চাঁদাবাজির অভিযোগ

সাংবাদিক পরিচয়ে মহেশখালীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে সমঝোতার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কাইচারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কথিত ওই সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে ভূঁইফোড় অপরাধ বিচিত্রা নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কাইচারুল ইসলাম নেতৃত্বে সাংবাদিক পরিচয়ে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে আসছে। চক্রটি ভুক্তভোগীদের কোম্পানির নামে প্রথমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর আর কোনো সংবাদ হবে না বলে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দাবি করে; আর সেই টাকা না দিলেই শুরু হয় ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এবং ফেসবুক পোস্ট।

পরে এসব নিউজের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সেই টাকা কথিত সাংবাদিকরা মিলে ভাগ—বাটোয়ারা করে নেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নামসর্বস্ব একটি পত্রিকায় কথিত সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর আবার আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ চক্রটি বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, কারখানা থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করেন। এরই মাঝে হাসান ভুক্তভোগীর আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নামসর্বস্ব পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন।

কথিত ভুয়া সাংবাদিকদের বিষয়ে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আসলে এসব ভুয়া হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দানকারীদের ব্যাপারে আমরা প্রায়ই অভিযোগ পেয়ে থাকি এবং তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আরো জানা যায়, উক্ত কাইচারুল ইসলাম নামক উক্ত অনেকের কাছ থেকে এভাবে সংবাদ প্রকাশ করে লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি মহেশখালী উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকেও এভাবে ভুয়া, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়াও উক্ত কাইচারুল ইসলামের একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। যাদের দ্বারা সে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

কারণ উক্ত কায়ছারুল ইসলাম কাউকে তোয়াক্কাই করে না। তার নেতৃত্বে কারো না কারো মাধ্যমে সে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাই ভুক্তভোগীদের মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে তাকে টাকা দিলেও সে আরো পেতে ক্ষান্ত হয় না। পেতে চায়, আরো পেতে চায়, তাকে যেন কোনভাবেই পুষিয়ে দেওয়ার মতো না। বর্তমানে এভাবে তার কাছে বিশাল টাকার পাহাড় হয়ে গেছে। তাই সাধারণ সরকারী চাকুরীজীবিরা তার কাছ থেকে পরিত্রাণ চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন। গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, কাউকে হয়রানি এবং কারো কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিলে তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো জানা যায়, তার বিরুদ্ধে মহেশখালী উপজেলায় এভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর মানুষের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনের নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তার দাবীকৃত টাকা না দিলে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করিয়ে যায়। উক্ত কায়চারুল ইসলাম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খন্ডকালীন শিক্ষক বলেও জানা যায়। তার এমন আচরণে শিক্ষক সমিতির মাঝে চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।

এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহেশখালী উপজেলা শিক্ষক সমিতির এক প্রভাবশালী সদস্য জানান, উক্ত কায়চারুল হক শিক্ষক নামের কলঙ্ক, সে যদি শিক্ষক হিসেবে কাউকে পরিচয়দান করে থাকে, তাহলে শিক্ষক সমাজের অতুলীয় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। তাই তার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।

এ বিষয়ে কথিত সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শুধুমাত্র নিউজ করার জন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে ফোন দেই। এছাড়া কারো কাছে কোনো চাঁদা চাইনি। আমার কাজ হিসেবে আমি ধারাবাহিক নিউজ করে যাচ্ছি।

জানা যায়, উক্ত ভুয়া, ভুঁইপুড় সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নিয়ে আইসিটি আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

মহেশখালীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে চাঁদাবাজির অভিযোগ

প্রকাশিত সময় : ০১:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাংবাদিক পরিচয়ে মহেশখালীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে সমঝোতার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কাইচারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কথিত ওই সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে ভূঁইফোড় অপরাধ বিচিত্রা নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কাইচারুল ইসলাম নেতৃত্বে সাংবাদিক পরিচয়ে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে আসছে। চক্রটি ভুক্তভোগীদের কোম্পানির নামে প্রথমে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর আর কোনো সংবাদ হবে না বলে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দাবি করে; আর সেই টাকা না দিলেই শুরু হয় ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এবং ফেসবুক পোস্ট।

পরে এসব নিউজের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। সেই টাকা কথিত সাংবাদিকরা মিলে ভাগ—বাটোয়ারা করে নেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নামসর্বস্ব একটি পত্রিকায় কথিত সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর আবার আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ চক্রটি বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে সংবাদ প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, কারখানা থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করেন। এরই মাঝে হাসান ভুক্তভোগীর আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নামসর্বস্ব পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন।

কথিত ভুয়া সাংবাদিকদের বিষয়ে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আসলে এসব ভুয়া হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দানকারীদের ব্যাপারে আমরা প্রায়ই অভিযোগ পেয়ে থাকি এবং তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আরো জানা যায়, উক্ত কাইচারুল ইসলাম নামক উক্ত অনেকের কাছ থেকে এভাবে সংবাদ প্রকাশ করে লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি মহেশখালী উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকেও এভাবে ভুয়া, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়াও উক্ত কাইচারুল ইসলামের একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। যাদের দ্বারা সে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

কারণ উক্ত কায়ছারুল ইসলাম কাউকে তোয়াক্কাই করে না। তার নেতৃত্বে কারো না কারো মাধ্যমে সে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাই ভুক্তভোগীদের মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে তাকে টাকা দিলেও সে আরো পেতে ক্ষান্ত হয় না। পেতে চায়, আরো পেতে চায়, তাকে যেন কোনভাবেই পুষিয়ে দেওয়ার মতো না। বর্তমানে এভাবে তার কাছে বিশাল টাকার পাহাড় হয়ে গেছে। তাই সাধারণ সরকারী চাকুরীজীবিরা তার কাছ থেকে পরিত্রাণ চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন। গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, কাউকে হয়রানি এবং কারো কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিলে তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো জানা যায়, তার বিরুদ্ধে মহেশখালী উপজেলায় এভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর মানুষের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনের নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তার দাবীকৃত টাকা না দিলে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করিয়ে যায়। উক্ত কায়চারুল ইসলাম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খন্ডকালীন শিক্ষক বলেও জানা যায়। তার এমন আচরণে শিক্ষক সমিতির মাঝে চরম হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।

এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহেশখালী উপজেলা শিক্ষক সমিতির এক প্রভাবশালী সদস্য জানান, উক্ত কায়চারুল হক শিক্ষক নামের কলঙ্ক, সে যদি শিক্ষক হিসেবে কাউকে পরিচয়দান করে থাকে, তাহলে শিক্ষক সমাজের অতুলীয় ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে। তাই তার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।

এ বিষয়ে কথিত সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শুধুমাত্র নিউজ করার জন্য অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে ফোন দেই। এছাড়া কারো কাছে কোনো চাঁদা চাইনি। আমার কাজ হিসেবে আমি ধারাবাহিক নিউজ করে যাচ্ছি।

জানা যায়, উক্ত ভুয়া, ভুঁইপুড় সাংবাদিক কাইচারুল ইসলাম সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নিয়ে আইসিটি আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।