কক্সবাজারের কলাতলীতে হোটেল বেষ্ট ওয়েষ্টার্ন হেরিটেজ এর কর্মচারী নুরুল কাদের হত্যার বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন,কক্সবাজার জেলার উদ্যগে ১৩ জুন ২০২৪ইং,বৃহস্পতিবার বিকাল ০৩.০০ ঘটিকায় কক্সবাজার কলাতলী ডলফিন মোড়ে এক বিশাল মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়,মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ এবং তিনি আশ্বস্থ করেন এই বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার।
বক্তারা মানববন্ধনে এবং তাদের স্মারকলিপিতে বলেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন সারা বাংলাদেশে পর্যটন শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। এর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশের পর্যটনের একমাত্র স্বীকৃত শ্রমিক ফেডারেশন হচ্ছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন। কক্সবাজারে পর্যটন উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি শ্রমিক কর্মচারীদের অধিকার নিয়েও দীর্ঘদীন ধরে বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
ইতিমধ্যে পর্যটন শহর কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা অনেকটা অবনতি ঘটেছে। ছিনতাই, হত্যা,পর্যটক হয়রানী অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৯ জুন তারিখে তারকা মানের হোটেল বেস্ট ওয়েস্টার্ন এর একজন কর্মচারী নুরুল কাদের পিতা মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সাং ৪নং ওয়ার্ড, বরইতলী ইউনিয়ন, কলাতলীর দক্ষিণ মোড়, বেলী হ্যাচারি পয়েন্টে, ছিনতাইকারীদের আক্রমণের শিকার হয়ে অকালে নিহত হয়েছেন।
কক্সবাজারের প্রধান ব্যবসা ট্যুরিজম, ইদানীং কিশোর গ্যাং এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত যে ছিনতাই এর ঘটনাগুলো ঘটছে,তাতে করে পর্যটক যারা কক্সবাজার ভ্রমণ করার কথা ভাবছেন,তারা অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে,যার ফলে পর্যটন সেক্টর হুমকির মুখে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে আমাদের শ্রমিক-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সেখানে কিভাবে পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে? এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা দেশী-বিদেশী পর্যটক সহ যারা দেশের অন্য প্রান্ত থেকে কর্মের জন্য কক্সবাজারে আসে, তারাও কক্সবাজার বিমুখ হয়ে যাবে,যার ফলে আমরা হারাবো দক্ষ কর্মশক্তি।
২২শে মার্চ ২০২৪, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির তালাশ টিমের অনুসন্ধানের রিপোর্ট অনুসারে, কলাতলী থেকে লাবনী পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এদের সহযোগী হিসেবে আছে কক্সবাজারে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কিছু রোহিঙ্গা। যারা সিএনজি এবং ব্যাটারি চালিত রিক্সার ড্রাইভারের ছদ্দবেশে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে নিরিবিলি পরিবেশে ছিনতাই সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছে প্রতিনিয়ত। তাদের সাথে যুক্ত আছে তৃতীয় লিঙ্গের কিছু অসাধু চক্র।
জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা কর্তৃক ২০২৪ সালের বিশ্ব পর্যটন দিবসের শ্লোগান "পর্যটনের মাধ্যমে শান্তি" প্রতিষ্ঠায় কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে শহরকে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাস মুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
পর্যটন কর্মী নুরুল কাদের এর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা ও কক্সবাজারকে একটা শান্তি এবং নিরাপদ শহর হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপনের এবং নিহতের পরিবার কে যথার্থ ক্ষতিপুরণ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি এবং কক্সবাজার পর্যটন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মানববন্ধনে বক্তব্য ও স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক লায়ন মোঃ রাশেদুর রহমান, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) কক্সবাজারের যুগ্ন সমন্বয়কারী আসাদুল হক আসাদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও NCCWE, কক্সবাজার জেলা কমিটির সদস্য সচীব মো. রফিক, কক্সবাজার হোটেল শ্রমিক লীগের সভাপতি শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক সেলিম বিল্ডার, শ্রমিক জোটের প্রদীপ দাশ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের,কক্সবাজার জেলা আহবায়ক মো. নাজমুস সাকিব, সদস্য সচিব মো. শফি,আব্দুল ওয়াদুদ, মোঃ সিদ্দিকুর রহমান,মো. সৈয়দ আমিন, মো. হারুন আমিন, মোঃ আবু তাহের, মোঃ সেলিম, মোঃ বশির, মোঃ মনসুর, মোঃ নুরুল বাশার, মোঃ রফিক, এছাড়াও সংগঠের বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানবন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে হোটেল বেষ্ট ওয়েষ্টার্ন হেরিটেজ এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ রেদুয়ান (সেলস এন্ড মার্কেটিং) এবং মানবন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রদানকালে অশ্রুভেজা চোখে প্রিয় সহকর্মীর হত্যার বিচারের দাবীতে উপস্থিত ছিলেন হোটেল বেষ্ট ওয়েষ্টার্ন হেরিটেজের সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ।