০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানে মুখের যত্ন নেবেন যেভাবে

রমজান মাসে যুক্তিসঙ্গত কারণেই মুখের মধ্যকার স্বাভাবিক পরিবেশের কিছু পরিবর্তন হয়, সঠিক যত্নের অভাবে এখান থেকে নানা জটিলতার তৈরির আশঙ্কা থাকে।

* মুখের আর্দ্রতার তারতম্য

সারাদিন পানি বা তরল পান না করার কারণে মুখের শুষ্কতা খুব স্বাভাবিক। নিঃসৃত লালার জরুরি কাজ যেমন দাঁতকে পরিষ্কার রাখা, জীবাণু নিয়ন্ত্রণ, মুখকে পিচ্ছিল রেখে কথা বলতে সাহায্য করা ও ঘর্ষণজনিত ক্ষুদ্র ক্ষত প্রতিরোধে সাহার্য করে।

▶ করণীয় : ইফতারের পর বাজারজাত কোমল পানীয় বা কৃত্রিম ফলের জুস পরিহার করে বিশুদ্ধ পানি ও শরীরের অন্যান্য রোগ বিবেচনা করে লেবুর শরবত, মৌসুমি ফলের জুস যেমন মালটা, বেল, আনারস, তরমুজ, ইসবগুলের ভুসি জাতীয় তরল পানীয় পান করতে হবে। তবে চিনিতে অনেক সমস্যা হয়, তাই এর ব্যবহার কমাতে হবে। সেহরির শেষ সময়ের ৩০ মিনিট আগে খাবার গ্রহণ করে ২০ মিনিট পর পর্যাপ্ত পানি পান করা ভাল। যাদের মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়, তারা সেহরির পর দুটা এলাচ দানা চিবিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। খুব বেশি শুষ্ক থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* মুখে দুর্গন্ধ

রমজানে মুখের দুর্গন্ধ অতি সাধারণ। সারাদিন না খাওয়ার জন্য মুখের ব্যবহার কম হওয়া ও মুখ শুষ্ক থাকায় ভেতরের জীবাণু সক্রিয় হলে এমনটা হয়। গন্ধ ও স্বাদবিহীন টুথপেস্ট পাওয়া যায়, একান্তই না পেলে মেসওয়াক কার্যকর। তবে সেটা যেন নরম ও নিয়মমাফিক হয়। শক্ত মেসওয়াক বা ব্রাশ দাঁতের প্রতিরক্ষা আবরণকে ক্ষয় করতে পারে।

▶ করণীয় : ইফতার ও সেহরির পর অন্তত দু’মিনিট করে নিয়ম অনুযায়ী দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ ও মুখ পরিষ্কার করা, সেহরির পর ডেন্টাল ফ্লস করা, প্রয়োজনে অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার, ওজুর সময় ভালোমত কুলি করা ও মাড়ি ম্যাসেজ করা জরুরি। ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করে সহজ পাচ্য খাদ্যগ্রহণ।

* খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও অন্যান্য রোগ

এ মাসে আমাদের খাদ্য তালিকাটিও ভিন্ন হয়ে যায়, রাস্তার পাশে লোভনীয় বাহারি খাবারের যে সমারোহ চোখে পড়ে তার অধিকাংশই স্বাস্থবান্ধব নয়। রুচির জন্য চিনির শরবত, জিলাপি, মিষ্টি ইত্যাদি বেশি খাই যা দাঁতের ক্ষতি করে। অন্যদিকে ভাজাপোড়া থেকে গ্যাস্ট্রিক এসিডিটির ফলে পেটের অ্যাসিড মুখে এসে দাঁত ক্ষয় করতে পারে। যাদের ক্রনিক অসুখ যেমন-ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ আছে তাদের ওষুধের মাত্রা ও সময় পরিবর্তনে অসুখের মাত্রা বেড়ে মুখের স্বাস্থ্য প্রভাবিত করতে পারে।

▶ করণীয় : খাবারের তালিকা স্বাস্থ্যবান্ধব হতে হবে। সেহরিতে পরিমিত ভাত সঙ্গে ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ বা মাংস, ডাল, সবজি, সালাদ, এক কাপ দুধ বা টক দই, মিষ্টি ফল খেতে হবে। সেদ্ধ মোটা চাল বা লাল চালের ভাত খেতে পারেন। মজাদার ভাজাপোড়া খাবার থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে, এমনি কি ছোলা ভাজার পরিবর্তে ইফতারির সময় কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে আদা কুঁচি করে খাওয়া ভালো। খেজুরের উপকারিতা অনেক, সঙ্গে ১টা আপেল বা কলা খাওয়া যেতে পারে। শসা, ক্ষীরা, পেয়ারা এগুলো খেতে পারবেন। মুড়ি বা চিড়া খাওয়া যায়। সেহরিতে রুটি, খিচুড়ি, বাদাম, ভাজাপোড়া খেলে পিপাসা বাড়তে পারে।

* রমজানে ডেন্টাল চিকিৎসা

রোজা রেখে প্রায় সব ধরনের ডেন্টাল চিকিৎসা নেওয়া যায়। মুখের রোগ নিয়ে হতাশ বা বসে থাকার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করাও বিপদজনক। সে কারণই নির্দ্বিধায় সঠিক চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

রমজানে মুখের যত্ন নেবেন যেভাবে

প্রকাশিত সময় : ০২:১৮:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

রমজান মাসে যুক্তিসঙ্গত কারণেই মুখের মধ্যকার স্বাভাবিক পরিবেশের কিছু পরিবর্তন হয়, সঠিক যত্নের অভাবে এখান থেকে নানা জটিলতার তৈরির আশঙ্কা থাকে।

* মুখের আর্দ্রতার তারতম্য

সারাদিন পানি বা তরল পান না করার কারণে মুখের শুষ্কতা খুব স্বাভাবিক। নিঃসৃত লালার জরুরি কাজ যেমন দাঁতকে পরিষ্কার রাখা, জীবাণু নিয়ন্ত্রণ, মুখকে পিচ্ছিল রেখে কথা বলতে সাহায্য করা ও ঘর্ষণজনিত ক্ষুদ্র ক্ষত প্রতিরোধে সাহার্য করে।

▶ করণীয় : ইফতারের পর বাজারজাত কোমল পানীয় বা কৃত্রিম ফলের জুস পরিহার করে বিশুদ্ধ পানি ও শরীরের অন্যান্য রোগ বিবেচনা করে লেবুর শরবত, মৌসুমি ফলের জুস যেমন মালটা, বেল, আনারস, তরমুজ, ইসবগুলের ভুসি জাতীয় তরল পানীয় পান করতে হবে। তবে চিনিতে অনেক সমস্যা হয়, তাই এর ব্যবহার কমাতে হবে। সেহরির শেষ সময়ের ৩০ মিনিট আগে খাবার গ্রহণ করে ২০ মিনিট পর পর্যাপ্ত পানি পান করা ভাল। যাদের মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়, তারা সেহরির পর দুটা এলাচ দানা চিবিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। খুব বেশি শুষ্ক থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* মুখে দুর্গন্ধ

রমজানে মুখের দুর্গন্ধ অতি সাধারণ। সারাদিন না খাওয়ার জন্য মুখের ব্যবহার কম হওয়া ও মুখ শুষ্ক থাকায় ভেতরের জীবাণু সক্রিয় হলে এমনটা হয়। গন্ধ ও স্বাদবিহীন টুথপেস্ট পাওয়া যায়, একান্তই না পেলে মেসওয়াক কার্যকর। তবে সেটা যেন নরম ও নিয়মমাফিক হয়। শক্ত মেসওয়াক বা ব্রাশ দাঁতের প্রতিরক্ষা আবরণকে ক্ষয় করতে পারে।

▶ করণীয় : ইফতার ও সেহরির পর অন্তত দু’মিনিট করে নিয়ম অনুযায়ী দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ ও মুখ পরিষ্কার করা, সেহরির পর ডেন্টাল ফ্লস করা, প্রয়োজনে অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার, ওজুর সময় ভালোমত কুলি করা ও মাড়ি ম্যাসেজ করা জরুরি। ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করে সহজ পাচ্য খাদ্যগ্রহণ।

* খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও অন্যান্য রোগ

এ মাসে আমাদের খাদ্য তালিকাটিও ভিন্ন হয়ে যায়, রাস্তার পাশে লোভনীয় বাহারি খাবারের যে সমারোহ চোখে পড়ে তার অধিকাংশই স্বাস্থবান্ধব নয়। রুচির জন্য চিনির শরবত, জিলাপি, মিষ্টি ইত্যাদি বেশি খাই যা দাঁতের ক্ষতি করে। অন্যদিকে ভাজাপোড়া থেকে গ্যাস্ট্রিক এসিডিটির ফলে পেটের অ্যাসিড মুখে এসে দাঁত ক্ষয় করতে পারে। যাদের ক্রনিক অসুখ যেমন-ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ আছে তাদের ওষুধের মাত্রা ও সময় পরিবর্তনে অসুখের মাত্রা বেড়ে মুখের স্বাস্থ্য প্রভাবিত করতে পারে।

▶ করণীয় : খাবারের তালিকা স্বাস্থ্যবান্ধব হতে হবে। সেহরিতে পরিমিত ভাত সঙ্গে ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ বা মাংস, ডাল, সবজি, সালাদ, এক কাপ দুধ বা টক দই, মিষ্টি ফল খেতে হবে। সেদ্ধ মোটা চাল বা লাল চালের ভাত খেতে পারেন। মজাদার ভাজাপোড়া খাবার থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে, এমনি কি ছোলা ভাজার পরিবর্তে ইফতারির সময় কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে আদা কুঁচি করে খাওয়া ভালো। খেজুরের উপকারিতা অনেক, সঙ্গে ১টা আপেল বা কলা খাওয়া যেতে পারে। শসা, ক্ষীরা, পেয়ারা এগুলো খেতে পারবেন। মুড়ি বা চিড়া খাওয়া যায়। সেহরিতে রুটি, খিচুড়ি, বাদাম, ভাজাপোড়া খেলে পিপাসা বাড়তে পারে।

* রমজানে ডেন্টাল চিকিৎসা

রোজা রেখে প্রায় সব ধরনের ডেন্টাল চিকিৎসা নেওয়া যায়। মুখের রোগ নিয়ে হতাশ বা বসে থাকার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করাও বিপদজনক। সে কারণই নির্দ্বিধায় সঠিক চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে।