০১:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পথে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

মাত্র দু’সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে আরও ১০টি জান্তা ক্যাম্প দখল করেছে আরাকান আর্মি। জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দাবি, শহরটিতে লড়াই চলাকালে একজন স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডারসহ প্রায় ২০০ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। থাইল্যান্ড-ভিত্তিক বার্মিজ সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত মাসে মংডুর উত্তরাঞ্চল দখলের পর সম্প্রতি দক্ষিণে সামরিক জান্তা ক্যাম্প এবং সীমান্তরক্ষী পুলিশ অবস্থানগুলোকে নিশানা করেছে আরাকান আর্মি।
মূলত, বুথিডাং শহর দখলের পর গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মংডু শহরে বড় আকারে আক্রমণ শুরু করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। দুটি শহরই বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত। এসব এলাকায় মূলত রোহিঙ্গারা বসবাস করেন।

গত শুক্রবার (১৪ জুন) এক ঘোষণায় আরাকান আর্মি দাবি করেছে, তারা এ সপ্তাহে আরও চারটি জান্তা ক্যাম্প দখল করেছে, যার মধ্যে মাওয়ায়াদ্দি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড বেস এবং না খাউং টো ক্যাম্পও রয়েছে।

লড়াই চলাকালে তাদের হাতে জান্তা বাহিনীর মাওয়ায়াদ্দির স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডার কর্নেল তাইজার হতেসহ প্রায় ২০০ সেনা নিহত হয়েছেন।

গত বুধবার রাতে শহরটির প্রবেশপথে অবস্থিত সুপরিচিত জান্তা ক্যাম্প আহ লেল থান কিয়াও দখল করে আরাকান আর্মি। হামলার আগে সেখানে প্রায় ২০০ জন সেনা এবং সীমান্তরক্ষী কর্মী ছিলেন। তাদের অনেকে অন্যান্য ঘাঁটিতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের আহ লেল থান কিয়াউ ক্যাম্প এবং মাওয়ায়াদ্দি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড বেস উভয়কে রক্ষা করতে বিমান হামলা এবং কামানের গোলা ব্যবহার করেছিল বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আরাকান আর্মি ছয়টি জান্তা ঘাঁটি দখল করে, যার মধ্যে মংডু-আগনুমাউ রোডের মিন্ট লুট গ্রামের কাছে বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৯ এবং ইন দিন গ্রামে বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৬-এর সদর দপ্তরও রয়েছে।
আরাকান আর্মি বলেছে, তারা আরও কয়েকজন জান্তা সেনাকে বন্দি করেছে এবং পালিয়ে যাওয়া সেনাদের খোঁজে সন্ধান অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরাবতির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার মংডু থেকে অন্তত ২৮ জন জান্তা সেনা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এর আগে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ১৩০ জনেরও বেশি নিরাপত্তাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের গত রোববার ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। তার পরেই নতুন করে এই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটলো।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শহর রয়েছে প্রায় ১৭টি। এর মধ্যে নয়টিরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে রাজ্যটিতে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে তাদের। পার্শ্ববর্তী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরেরও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে জাতিগত গোষ্ঠীটি।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পথে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫০:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

মাত্র দু’সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে আরও ১০টি জান্তা ক্যাম্প দখল করেছে আরাকান আর্মি। জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দাবি, শহরটিতে লড়াই চলাকালে একজন স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডারসহ প্রায় ২০০ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন। থাইল্যান্ড-ভিত্তিক বার্মিজ সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত মাসে মংডুর উত্তরাঞ্চল দখলের পর সম্প্রতি দক্ষিণে সামরিক জান্তা ক্যাম্প এবং সীমান্তরক্ষী পুলিশ অবস্থানগুলোকে নিশানা করেছে আরাকান আর্মি।
মূলত, বুথিডাং শহর দখলের পর গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মংডু শহরে বড় আকারে আক্রমণ শুরু করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। দুটি শহরই বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত। এসব এলাকায় মূলত রোহিঙ্গারা বসবাস করেন।

গত শুক্রবার (১৪ জুন) এক ঘোষণায় আরাকান আর্মি দাবি করেছে, তারা এ সপ্তাহে আরও চারটি জান্তা ক্যাম্প দখল করেছে, যার মধ্যে মাওয়ায়াদ্দি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড বেস এবং না খাউং টো ক্যাম্পও রয়েছে।

লড়াই চলাকালে তাদের হাতে জান্তা বাহিনীর মাওয়ায়াদ্দির স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডার কর্নেল তাইজার হতেসহ প্রায় ২০০ সেনা নিহত হয়েছেন।

গত বুধবার রাতে শহরটির প্রবেশপথে অবস্থিত সুপরিচিত জান্তা ক্যাম্প আহ লেল থান কিয়াও দখল করে আরাকান আর্মি। হামলার আগে সেখানে প্রায় ২০০ জন সেনা এবং সীমান্তরক্ষী কর্মী ছিলেন। তাদের অনেকে অন্যান্য ঘাঁটিতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের আহ লেল থান কিয়াউ ক্যাম্প এবং মাওয়ায়াদ্দি স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড বেস উভয়কে রক্ষা করতে বিমান হামলা এবং কামানের গোলা ব্যবহার করেছিল বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আরাকান আর্মি ছয়টি জান্তা ঘাঁটি দখল করে, যার মধ্যে মংডু-আগনুমাউ রোডের মিন্ট লুট গ্রামের কাছে বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৯ এবং ইন দিন গ্রামে বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৬-এর সদর দপ্তরও রয়েছে।
আরাকান আর্মি বলেছে, তারা আরও কয়েকজন জান্তা সেনাকে বন্দি করেছে এবং পালিয়ে যাওয়া সেনাদের খোঁজে সন্ধান অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরাবতির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার মংডু থেকে অন্তত ২৮ জন জান্তা সেনা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এর আগে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ১৩০ জনেরও বেশি নিরাপত্তাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের গত রোববার ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। তার পরেই নতুন করে এই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটলো।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শহর রয়েছে প্রায় ১৭টি। এর মধ্যে নয়টিরই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে রাজ্যটিতে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে তাদের। পার্শ্ববর্তী চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরেরও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে জাতিগত গোষ্ঠীটি।