কুমিল্লায় রোহিঙ্গা যুবককে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানের অভিযোগে মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (২১ জুন) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়া।
গ্রেপ্তারকৃত ইউপি সচিব ইসমাইল কুমিল্লা জেলার আদর্শ উপজেলার গুনানন্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মুরাদনগর উপজেলার ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্মনিবন্ধন দিয়ে পাসর্পোট করতে আসেন ইয়াছিন (১৯) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক। পরিচয় নিয়ে সন্দেহ হলে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা তাকে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন জানান, তিনি মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে।
মিয়ানমার থেকে ২০ দিন আগে বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-৯-এ তার আশ্রয় হয়। তার চাচাতো ভাই ওসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসসংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে ২ দালালের কাছে পাসপোর্ট করতে দেয়। হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ ভুয়া ঠিকানা দিয়ে ইয়াছিনের সব কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তারা তদন্তে নামে। তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পান গোয়েন্দারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায় রোহিঙ্গা জন্মসনদ নিবন্ধনে ইউপি সচিব ইসমাইলের পাশাপাশি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটনসহ আরো অনেকেই জড়িত। প্রতিটি নিবন্ধনে ২ লাখ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কাজী তুফরীজ এটন বলেন, আমি সচিবকে সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়েছি। তারপর তাকে কেন এসব করতে হবে? যারা টাকার বিনিময়ে এসব করেছে তারা শাস্তি পাবে।
কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ দিকে আজ শুক্রবার দুপুরে আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।