শাহীন সুলতানার বাড়ি ছিল মহেশখালির ধলঘাটায়। ২০১৩ সালে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি বিলীন হলে পরিবারসহ চলে আসেন কক্সবাজারে। দশ সদস্যের পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শাহীন সুলতানার বাবা কামাল উদ্দিন একটি ছোট পান দোকান খুলে বসেন। তাঁর স্বল্প আয়ে পরিবারের অভাব দূর হয়না। এদিকে শাহীন সুলতানা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন। পরিবারের নিদারুন অর্থ সঙ্কটের মধ্যেও কঠোর পরিশ্রম আর হার না মানা মনোভাবের কারনে শাহীন বর্তমানে চিকিৎসক হওয়ার পথে দৃপ্ত পদে এগিয়ে চলেছেন।
কামাল উদ্দিন সকাল–সন্ধ্যা কঠোর পরিশ্রম করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন।পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান শাহীন সুলতানা। ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সহযোগিতার হাত বাড়ায় প্রথম আলো ট্রাস্ট। ভালো ফলাফলের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক– প্রথম আলো ট্রাস্ট অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তির জন্য মনোনীত হন তিনি। ভালো ফলের ধারাবাহিকতা বাজায় রেখে ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকেও জিপিএ-৫ পান শাহীন সুলতানা। এর পর ভর্তি পরীক্ষার বাধা পেরিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়ন করছে সুলতানা।
এ প্রসঙ্গে শাহীন সুলতানা বলেন, ‘পড়াশোনা করতে ছোটবেলা থেকেই ভালো লাগত। বাবা–মা ও শিক্ষকদের অক্লান্ত চেষ্টায় আমি এতদূর আসতে পেরেছি। প্রথম আলো ট্রাস্ট আমার পাশে ছিল, এখন মেডিকেল কলেজে পড়তেও সহযোগিতা করছে। এই শিক্ষা বৃত্তি আমার চলার পথকে সহজ করেছে। ভবিষ্যতে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।’
উল্লেখ্য, শাহীন সুলতানার স্বপ্নপূরণের পথে সহযোগিতা করছে ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট। তিনি স্নাতক পর্যায়েও ‘ব্র্যাক ব্যাংক–প্রথম আলো ট্রাস্ট শিক্ষাবৃত্তি’ নিয়মিত পাচ্ছেন।