০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক মুশফিকুল আনসারিকে হয়রানি, নিন্দা সিপিজের

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারিকে অনলাইনে হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

অভিযোগ উঠেছে, মুশফিককে টার্গেট করে নানা রকম হয়রানিমূলক প্রচারণা চলছে। এ ঘটনায় শনিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিপিজে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব স্টিফেন ডুজাররিককে সম্প্রতি ভারতে বিরোধী রাজনীতিকদের দমনপীড়ন নিয়ে প্রশ্ন করেন মুশফিক। এরপর থেকেই তিনি অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

সিপিজে বলেছে, প্রতিশোধ নেওয়া বা ভীতি প্রদর্শন মুক্ত পরিবেশে দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে সাংবাদিকদের।

প্রসঙ্গত, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার, জেলে রাখা এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে ভারতের। জার্মানি, পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং সর্বশেষ এ নিয়ে কড়া কথা বলেছে জাতিসংঘ।

দিল্লিতে জার্মান দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিক জর্জ এঞ্জওয়াইরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করে ভারত। তাদেরকে সতর্ক করে দেয় তারা। ভারতের কড়া মনোভাব ও আপত্তির কথা তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রকে এ সতর্কতা দেওয়ার পর আবারো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ইস্যুতে কথা বলেছে বুধবার।

মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারির প্রশ্নের জবাবে জানান, কেজরিওয়াল, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দসহ এসব ইস্যুতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে গ্লোরিয়া বারবেনাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে ৪০ মিনিট ধরে আলোচনা করেন কর্মকর্তারা। সেখানে কি আলোচনা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, কূটনৈতিক পর্যায়ে কি আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার অভিযোগ সম্পর্কেও অবহিত যুক্তরাষ্ট্র। মুশফিক তার কাছে জানতে চান-দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিককে তলব করেছে ভারত।

এর প্রেক্ষিতে আপনার প্রতিক্রিয়া কি এবং বিরোধী দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করাসহ ভারতের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখেন? অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমনপীড়ন একটি সংকটজনক পয়েন্টে এসে পৌঁছেছে’ বলে অভিহিত করেছে।

তার এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলছি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারসহ এসব বিষয়ে আমরা অব্যাহতভাবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আয়কর বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে বলে অভিযোগের বিষয়েও আমরা অবহিত। এটা করার ফলে আসন্ন নির্বাচনে কার্যকর প্রচারণা চালানো তাদের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। এর প্রতিটি ইস্যুতে সময়মতো অবাধ, স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি আমরা।

আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, কূটনৈতিক কোনো প্রাইভেট আলোচনা নিয়ে আমি কথা বলব না। তবে অবশ্যই প্রকাশ্যে আমি যেটা বলব তা হলো, আমরা সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং সময়মতো আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি। আশা করি এতে কারও কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। একই বিষয় আমরা প্রাইভেটলিও ক্লিয়ার করব। এই প্রশ্ন তোলার কারণে মুশফিকুল ফজল আনসারিকে অনলাইনে হয়রানি করা হচ্ছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

সাংবাদিক মুশফিকুল আনসারিকে হয়রানি, নিন্দা সিপিজের

প্রকাশিত সময় : ০২:০৮:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারিকে অনলাইনে হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

অভিযোগ উঠেছে, মুশফিককে টার্গেট করে নানা রকম হয়রানিমূলক প্রচারণা চলছে। এ ঘটনায় শনিবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিপিজে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব স্টিফেন ডুজাররিককে সম্প্রতি ভারতে বিরোধী রাজনীতিকদের দমনপীড়ন নিয়ে প্রশ্ন করেন মুশফিক। এরপর থেকেই তিনি অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

সিপিজে বলেছে, প্রতিশোধ নেওয়া বা ভীতি প্রদর্শন মুক্ত পরিবেশে দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে সাংবাদিকদের।

প্রসঙ্গত, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার, জেলে রাখা এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে ভারতের। জার্মানি, পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং সর্বশেষ এ নিয়ে কড়া কথা বলেছে জাতিসংঘ।

দিল্লিতে জার্মান দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিক জর্জ এঞ্জওয়াইরা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করে ভারত। তাদেরকে সতর্ক করে দেয় তারা। ভারতের কড়া মনোভাব ও আপত্তির কথা তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রকে এ সতর্কতা দেওয়ার পর আবারো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ইস্যুতে কথা বলেছে বুধবার।

মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারির প্রশ্নের জবাবে জানান, কেজরিওয়াল, কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দসহ এসব ইস্যুতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে গ্লোরিয়া বারবেনাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নিয়ে ৪০ মিনিট ধরে আলোচনা করেন কর্মকর্তারা। সেখানে কি আলোচনা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, কূটনৈতিক পর্যায়ে কি আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার অভিযোগ সম্পর্কেও অবহিত যুক্তরাষ্ট্র। মুশফিক তার কাছে জানতে চান-দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিককে তলব করেছে ভারত।

এর প্রেক্ষিতে আপনার প্রতিক্রিয়া কি এবং বিরোধী দলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করাসহ ভারতের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখেন? অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমনপীড়ন একটি সংকটজনক পয়েন্টে এসে পৌঁছেছে’ বলে অভিহিত করেছে।

তার এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলছি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারসহ এসব বিষয়ে আমরা অব্যাহতভাবে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আয়কর বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে বলে অভিযোগের বিষয়েও আমরা অবহিত। এটা করার ফলে আসন্ন নির্বাচনে কার্যকর প্রচারণা চালানো তাদের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। এর প্রতিটি ইস্যুতে সময়মতো অবাধ, স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি আমরা।

আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে বলতে হয়, কূটনৈতিক কোনো প্রাইভেট আলোচনা নিয়ে আমি কথা বলব না। তবে অবশ্যই প্রকাশ্যে আমি যেটা বলব তা হলো, আমরা সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং সময়মতো আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি। আশা করি এতে কারও কোনো আপত্তি থাকা উচিত নয়। একই বিষয় আমরা প্রাইভেটলিও ক্লিয়ার করব। এই প্রশ্ন তোলার কারণে মুশফিকুল ফজল আনসারিকে অনলাইনে হয়রানি করা হচ্ছে।