সারা দেশে কত রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তদন্ত করে তার হালনাগাদ তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে এ তালিকা হাইকোর্টে দাখিলের জন্য নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (১১ জুন) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে রিটটি শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত এবং রিটে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। সোমবার (১০ জুন) সারা দেশে কত রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তদন্ত করে তার হালনাগাদ তালিকা দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক রিটটি দায়ের করা হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ সুত্রে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল কি পরিমাণ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে নাগরিকত্ব পেয়ে ভোটার হয়েছেন, তার তালিকা দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিটে একইসঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। এ ছাড়া কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ঘোষিত তফসিলে নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ বন্ধ বা স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছিলো। রিটটির শুনানি শেষে গত ২৪ এপ্রিল পুরো কক্সবাজার জেলায় কি পরিমাণ রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তার তালিকা চান হাইকোর্ট। কক্সবাজারের ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ তালিকা আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তার ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুন হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদনটি করা হয়।
রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের ভোটার মো. হামিদুর রহমানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া এ রিটটি দায়ের করেন।
সেদিন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন ৩৮ জন রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।
এ ছাড়াও একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা বাংলাদেশের নাগরিক হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছিল রিটে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল রিটটির প্রাথমিক শুনানী শেষে শুধুমাত্র কক্সবাজার জেলায় কি পরিমাণ রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, ৬ জুনের মধ্যে তার তালিকা চেয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আর মঙ্গলবার ১১ জুন রিটটির সম্পূরক আবেদন এর শুনানির পর সারাদেশে কি পরিমাণ রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে তার তালিকা চেয়ে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ।