১০:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈকত দ্বিখন্ডিত করে নির্মিত ইনানী জেটি ভেঙে ফেলার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবরে বাপার স্মারকলিপি

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দ্বিখন্ডিত করে ২০২০ সালে কোন সমীক্ষা ছাড়া নির্মিত ইনানী জেটি ভেঙে ফেলা এবং জেটি থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করার দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বন পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন( বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা। ২৭ অক্টোবর বেলা ১ টার সময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হাতে উক্ত স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা সভাপতি এইচ এম এরশাদ, সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক এম জসিম উদ্দিন, কল্লোল দে চৌধুরী, মংথেহ্লা রাখাইন, দোলন ধর, শহর সভাপতি ইরফান উল হাসান, সদর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শামস্, আমিন উল্লাহ, এম কামরুল হাসান, শহিদুল ইসলাম সাহেদ, এডঃ রুবেল, নুরুল হোসাইন, মোহাইমুন উল্লাহ রানিম প্রমুখ।

বাপা নেতৃবৃন্দরা এসময় জেলা প্রশাসককে অবগত করে বলেন, ককসবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এটি প্রত্যেক বাংলাদেশীদের জন্য অনন্য গর্বের ঐতিহ্য।
এই সৈকতকে দ্বিখন্ডিত করে ২০২০ সালে একটি অপরিকল্পিত জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী নৌ মহড়া পরিদর্শন করবে এ মর্মে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে তখন প্রচার করা হলেও জনমনে সন্দেহ রয়েছে কতিপয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিগত বাবসা পরিচালনা করার জন্য যেখানে অত্যন্ত চতুরতার সাথে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়া দেশের প্রচলিত আইন ও ইসিএ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে দেশের সাথে গাদ্দারী দেখিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। যার ফলশ্রুতিতে ককসবাজারবাসীর পক্ষে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট মামলা হয় (নং১০৪৩৭/২২) মহামান্য হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে কেন এই জেটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবেনা মর্মে রুল নিশি জারী করেন। যা এখনো পেন্ডিং আছে। উল্লেখ্য তখনও আমরা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি দিয়েছিলাম কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কিন্তু এখন মহামান্য হাইকোর্টে মামলা পেন্ডিং থাকাবস্থায় কর্ণফুলি শিপিং নামের একটি জাহাজ কোম্পানি উক্ত জেটি দিয়ে সেন্টমার্টিন রুটে বানিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যা স্পষ্টতই মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি তথা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় এই অবৈধ কার্য্যক্রম বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এবং এই অবৈধ কর্মকান্ডের নেপথ্য কুশিলব এবং অবৈধ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ডিজিএফআই/ এনএসআই দিয়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে জাতীয় তথা বিশ্ব ঐতিহ্য ককসবাজার সমুদ্র সৈকতকে হুমকির হাত থেকে বাঁচানোর বিনীত অনুরোধ করেন। নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, এটি পুরোপুরি কক্সবাজারস্থ ইনানী সমুদ্র সৈকতের মাঝেখানে নির্মাণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে কক্সবাজার সমুদ্রকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হয়েছে। এখানে লাল কাঁকড়ার বিচরণ, বিলুপ্ত প্রজাতি কচ্ছপের ডিম পাড়ার জায়গা, এবং ডলফিন ও সাদা ডলফিনের বিচরণ ক্ষেত্র। তাই এ স্থান থেকে সেন্টমার্টিন গামী জাহাজ ছাড়লে জাহাজের প্রফেলারের আঘাতে অনেক ডলফিন মারা যাবে, তাছাড়া জেটি কারণে সমুদ্রের ঢেউ চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে এতে করে বালিয়াড়িতে ও মেরিন ড্রাইভ রোডে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হবে, যা ইতিমধ্যে হচ্ছে। তাই আমাদের সুস্পষ্ট দাবি এই জেটি ভেঙে ফেলা হউক।

বর্তমানে এ জেটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পর্যটক পারাপারের জন্য নিরাপদ নয়। যেখানে একটি বার্জের ধাক্কায় এটি ভেঙে যায়, তাহলে কর্ণফুলী জাহাজের ধাক্কা লেগে মারাত্মক দূর্ঘটনার শিকারও হতে পারে পর্যটকরা। ভবিষ্যতে কোন ধরনের অঘটন ঘটলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাছাড়া এ জেটি নিয়ে সারা বাংলাদেশের পরিবেশবাদী নেতৃবৃন্দের সাথে নৌবাহিনীর একটা বৈরী মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশে বিদেশে এ জেটি নিয়ে আমাদের নৌবাহিনীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। অথচ জেটি নৌবাহিনীর কোন কাজেই আসছে না। তাই এটি ভেঙে ফেললে নৌবাহিনীর কোন ধরনের ক্ষতি হবে মন্তব্য করেন উপস্থিত পরিবেশ আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুল জান্নাত

সৈকত দ্বিখন্ডিত করে নির্মিত ইনানী জেটি ভেঙে ফেলার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবরে বাপার স্মারকলিপি

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দ্বিখন্ডিত করে ২০২০ সালে কোন সমীক্ষা ছাড়া নির্মিত ইনানী জেটি ভেঙে ফেলা এবং জেটি থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করার দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বন পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন( বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা। ২৭ অক্টোবর বেলা ১ টার সময় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হাতে উক্ত স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা সভাপতি এইচ এম এরশাদ, সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক এম জসিম উদ্দিন, কল্লোল দে চৌধুরী, মংথেহ্লা রাখাইন, দোলন ধর, শহর সভাপতি ইরফান উল হাসান, সদর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শামস্, আমিন উল্লাহ, এম কামরুল হাসান, শহিদুল ইসলাম সাহেদ, এডঃ রুবেল, নুরুল হোসাইন, মোহাইমুন উল্লাহ রানিম প্রমুখ।

বাপা নেতৃবৃন্দরা এসময় জেলা প্রশাসককে অবগত করে বলেন, ককসবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এটি প্রত্যেক বাংলাদেশীদের জন্য অনন্য গর্বের ঐতিহ্য।
এই সৈকতকে দ্বিখন্ডিত করে ২০২০ সালে একটি অপরিকল্পিত জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী নৌ মহড়া পরিদর্শন করবে এ মর্মে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে তখন প্রচার করা হলেও জনমনে সন্দেহ রয়েছে কতিপয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একজন ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিগত বাবসা পরিচালনা করার জন্য যেখানে অত্যন্ত চতুরতার সাথে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ছাড়া দেশের প্রচলিত আইন ও ইসিএ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে দেশের সাথে গাদ্দারী দেখিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। যার ফলশ্রুতিতে ককসবাজারবাসীর পক্ষে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট মামলা হয় (নং১০৪৩৭/২২) মহামান্য হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে কেন এই জেটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবেনা মর্মে রুল নিশি জারী করেন। যা এখনো পেন্ডিং আছে। উল্লেখ্য তখনও আমরা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি দিয়েছিলাম কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কিন্তু এখন মহামান্য হাইকোর্টে মামলা পেন্ডিং থাকাবস্থায় কর্ণফুলি শিপিং নামের একটি জাহাজ কোম্পানি উক্ত জেটি দিয়ে সেন্টমার্টিন রুটে বানিজ্যিকভাবে জাহাজ চলাচল করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যা স্পষ্টতই মহামান্য হাইকোর্টের প্রতি তথা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল বলে আমরা মনে করি। এমতাবস্থায় এই অবৈধ কার্য্যক্রম বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এবং এই অবৈধ কর্মকান্ডের নেপথ্য কুশিলব এবং অবৈধ সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ডিজিএফআই/ এনএসআই দিয়ে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে জাতীয় তথা বিশ্ব ঐতিহ্য ককসবাজার সমুদ্র সৈকতকে হুমকির হাত থেকে বাঁচানোর বিনীত অনুরোধ করেন। নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, এটি পুরোপুরি কক্সবাজারস্থ ইনানী সমুদ্র সৈকতের মাঝেখানে নির্মাণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে কক্সবাজার সমুদ্রকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হয়েছে। এখানে লাল কাঁকড়ার বিচরণ, বিলুপ্ত প্রজাতি কচ্ছপের ডিম পাড়ার জায়গা, এবং ডলফিন ও সাদা ডলফিনের বিচরণ ক্ষেত্র। তাই এ স্থান থেকে সেন্টমার্টিন গামী জাহাজ ছাড়লে জাহাজের প্রফেলারের আঘাতে অনেক ডলফিন মারা যাবে, তাছাড়া জেটি কারণে সমুদ্রের ঢেউ চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে এতে করে বালিয়াড়িতে ও মেরিন ড্রাইভ রোডে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হবে, যা ইতিমধ্যে হচ্ছে। তাই আমাদের সুস্পষ্ট দাবি এই জেটি ভেঙে ফেলা হউক।

বর্তমানে এ জেটি ঝুঁকিপূর্ণ ও পর্যটক পারাপারের জন্য নিরাপদ নয়। যেখানে একটি বার্জের ধাক্কায় এটি ভেঙে যায়, তাহলে কর্ণফুলী জাহাজের ধাক্কা লেগে মারাত্মক দূর্ঘটনার শিকারও হতে পারে পর্যটকরা। ভবিষ্যতে কোন ধরনের অঘটন ঘটলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাছাড়া এ জেটি নিয়ে সারা বাংলাদেশের পরিবেশবাদী নেতৃবৃন্দের সাথে নৌবাহিনীর একটা বৈরী মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশে বিদেশে এ জেটি নিয়ে আমাদের নৌবাহিনীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। অথচ জেটি নৌবাহিনীর কোন কাজেই আসছে না। তাই এটি ভেঙে ফেললে নৌবাহিনীর কোন ধরনের ক্ষতি হবে মন্তব্য করেন উপস্থিত পরিবেশ আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।