০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২৩ সালে বায়ুদূষণে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, রানারআপ পাকিস্তান

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশিত সময় : ০৭:৫২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
  • ১০৮ ভিউ

মানুষ খাবার না খেয়ে দুই মাস বাঁচতে পারে। পানি ছাড়াও তিন দিন বেঁচে থাকা যাবে। তবে বাতাস ছাড়া একদিন তো দূরে থাক, কয়েক মিনিটের বেশি কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই মানুষের জীবন ধারণ ও নিঃশ্বাস নিতে বাতাসের গুরুত্ব অপরিহার্য। অথচ গুণগত বায়ুর ধারে-কাছেও নেই বাংলাদেশ। উল্টো বায়ুদূষণের তালিকায় বিশ্বে সবার উপরে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরই দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান ও ভারত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‍বিশ্বের ১৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের ৩০ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইকিউএয়ার।

আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুমানের দিক থেকে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত পাঁচ দেশ হলো : বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসো।

পিএম ২ দশমিক ৫ ধূলিকণা ও ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটারের ছোট পদার্থকে বোঝায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওই কণাগুলো ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫ এর পরিমাণ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি থাকতে পারবে না। তবে ২০২৩ সালে এই পাঁচ দেশের বাতাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়ে ৯ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেশি ছিল বলে প্রতিবেদন উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫ এর পরিমাণ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত পরিমাণের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। পাকিস্তানে এর পরিমাণ ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম, যা ১৪ গুণ এবং ভারতে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম, যা ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসোর বাতাসের পরিমাণ ৯ গুণ বেশি ছিল।

আইকিউএয়ারের বায়ুর গুণগত মানবিষয়ক বিজ্ঞানের ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেছেন, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় পিএম ২ দশমিক ৫ অনেক বেড়েছে। কারণ হলো এই অঞ্চল থেকে বায়ুর এই উপাদানের অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই। এসব কারণের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে কৃষি ব্যবস্থা, শিল্প ও জনসংখ্যার ঘনত্বের মতো বিষয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার চেয়ে আরও অবনতি হবে বলে মনে হচ্ছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ খান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ২০ শতাংশ অকাল মৃত্যু বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে। এই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবার খরচ দেশের মোট জিডিপির ৪ থেকে ৫ শতাংশ।

এর আগে ২০২২ সালে দূষিত বায়ুমানের তালিকায় বাংলাদেশ পঞ্চম এবং ভারত অষ্টম অবস্থানে ছিল।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

২০২৩ সালে বায়ুদূষণে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, রানারআপ পাকিস্তান

প্রকাশিত সময় : ০৭:৫২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

মানুষ খাবার না খেয়ে দুই মাস বাঁচতে পারে। পানি ছাড়াও তিন দিন বেঁচে থাকা যাবে। তবে বাতাস ছাড়া একদিন তো দূরে থাক, কয়েক মিনিটের বেশি কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই মানুষের জীবন ধারণ ও নিঃশ্বাস নিতে বাতাসের গুরুত্ব অপরিহার্য। অথচ গুণগত বায়ুর ধারে-কাছেও নেই বাংলাদেশ। উল্টো বায়ুদূষণের তালিকায় বিশ্বে সবার উপরে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরই দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পাকিস্তান ও ভারত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সুইডেনভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‍বিশ্বের ১৩৪টি দেশ ও অঞ্চলের ৩০ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইকিউএয়ার।

আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুমানের দিক থেকে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত পাঁচ দেশ হলো : বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসো।

পিএম ২ দশমিক ৫ ধূলিকণা ও ২ দশমিক ৫ মাইক্রোমিটারের ছোট পদার্থকে বোঝায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। ওই কণাগুলো ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫ এর পরিমাণ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি থাকতে পারবে না। তবে ২০২৩ সালে এই পাঁচ দেশের বাতাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত পরিমাণের চেয়ে ৯ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেশি ছিল বলে প্রতিবেদন উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫ এর পরিমাণ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত পরিমাণের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। পাকিস্তানে এর পরিমাণ ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম, যা ১৪ গুণ এবং ভারতে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম, যা ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে তাজিকিস্তান ও বুরকিনা ফাসোর বাতাসের পরিমাণ ৯ গুণ বেশি ছিল।

আইকিউএয়ারের বায়ুর গুণগত মানবিষয়ক বিজ্ঞানের ব্যবস্থাপক ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেছেন, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় পিএম ২ দশমিক ৫ অনেক বেড়েছে। কারণ হলো এই অঞ্চল থেকে বায়ুর এই উপাদানের অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই। এসব কারণের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে কৃষি ব্যবস্থা, শিল্প ও জনসংখ্যার ঘনত্বের মতো বিষয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার চেয়ে আরও অবনতি হবে বলে মনে হচ্ছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ মো. ফিরোজ খান বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ২০ শতাংশ অকাল মৃত্যু বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে। এই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবার খরচ দেশের মোট জিডিপির ৪ থেকে ৫ শতাংশ।

এর আগে ২০২২ সালে দূষিত বায়ুমানের তালিকায় বাংলাদেশ পঞ্চম এবং ভারত অষ্টম অবস্থানে ছিল।