কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পৃথিবীর খুব কাছে দেখা যাবে বিশাল আকারের এক ধূমকেতু। বলা হচ্ছে প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো পৃথিবীর এতটা কাছাকাছি আসবে এই ধূমকেতু যে খালি চোখেও তা দেখতে পারবে মানুষ। মাউন্ট এভারেস্টের সমান বিশাল এ ধূমকেতুটির নাম ১২পি/পনস–ব্রুকস। একে অনেক সময় শয়তান ধূমকেতু নামেও ডাকা হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, শয়তান ধূমকেতু আগামী ৮ এপ্রিল পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় একটি বিরল চেহারা দেখাবে। বলা হচ্ছে, আগামী ২১ এপ্রিল ধূমকেতুটি সূর্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছাবে। এ সময় সূর্য থেকে এর দূরত্ব থাকবে ৭ কোটি ৪৪ লাখ মাইল। এ ছাড়া আগামী ২ জুন এটি পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসবে। এ সময় পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব হবে প্রায় ১৪ কোটি মাইল।
১২পি/পনস-ব্রুকস ধূমকেতুটি নির্দিষ্ট সময় পরপর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে সৌরজগতের মধ্যে চলে আসে। সাধারণত হ্যালির ধূমকেতুর মতো এটিও প্রতি ৭০ বছর পরপর সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। ১৮১২ সালে প্রথম ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জ্যঁ-লুইস পনস। ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম রবার্ট ব্রুকস। তাদের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পন্স-ব্রুকসের ঘূর্ণন হার সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার জন্য পর্যবেক্ষণ করছেন। তাতে দেখা যায় শয়তান ধূমকেতুটির ঘূর্ণন সময়কাল ৫৭ ঘণ্টা, যা প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বেশি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এটি পরীক্ষা করতে চান যে ধূমকেতু থেকে নিঃসৃত বস্তুর জেটগুলো এটির গতি বাড়াচ্ছে নাকি কমিয়ে দিচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা জানান, এপ্রিল মাসজুড়ে সূর্যের খুব কাছাকাছি যেতে থাকায় ধূমকেতুটিকে আরও উজ্জ্বল দেখাবে। তবে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির উপনির্বাহী পরিচালক রবার্ট ম্যাসি জানান, ছবিতে যত উজ্জ্বল দেখা যায়, বাস্তবে শয়তান ধূমকেতুটি ততটা উজ্জ্বল না-ও হতে পারে। আকাশে চাঁদ না থাকলে তবে এটি খালি চোখে দেখা যেতে পারে। আলোক দূষণ না থাকলে বা আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে তবে এটি দেখার সুযোগ মিলতে পারে। তবে দূরবীক্ষণ যন্ত্র থাকলে এটি দেখতে সুবিধা হবে।