১০:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চক্ষু রোগীদের গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করে সেবা দিতে হবে

চোখের চিকিৎসার সময় চিকিৎসকদের অনেক সচেতন নিয়ে সেবা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, শুধু চশমা দিয়ে সেবা দিলে হবে না। চোখের রোগীর ফান্ডাস পরীক্ষা না করে সেবা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করেই সেবা দিতে হবে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিএসএমএমইউতে ‘এক সাথে হাত ধরে,গ্লুকোমা মুক্ত বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিএসএমএমইউ বিশ্ব গ্লোকোমা সপ্তাহ-২০২৪ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগে এ উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোনো রোগী আসলে সব ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে। চোখের সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেবা দিতে হবে। কারণ চোখের রোগগুলো বেশি জটিল। তাই সচেতনভাবে সেবা দিতে হবে। রোগীদের চক্ষু রোগের স্ক্রিনিং বিশেষ করে গ্লোকোমা রোগী বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবির মুখে কৃষকরা চশমা পরে ফসল তোলার ফলে চোখের আলসার অনেক কমে গেছে। চক্ষু রোগ প্রতিরোধে গবেষণা করতে হবে। আমাদের কাছে ময়মনসিংহ বিভাগের গ্লোকোমা রোগী বেশি আসছে। কেন এ অঞ্চলে গ্লুকোমা বেশি হয়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, গ্লুকোমা চোখের নীরব ঘাতক। এটা চোখের এমন একটি রোগ, যেন চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে, চোখের পেছনের স্নায়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়। গ্লুকোমা হলো বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে অনিবারণ যোগ্য অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। যে কোনো বয়সে এ রোগ হতে পারে। জন্মের সময় বেশ বড় চোখ এবং চোখের চাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লুকোমা বলে। তরুণ বয়সেও হতে পারে, এক বলে জুভেনাইল গ্লুকোমা।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ গ্লুকোমা রোগ ৪০ বছরের পরে হয়। এদের প্রাথমিক গ্লকোমা বলে। এছাড়াও, পারিবারিকভাবে যাদের এ রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ার চশমা পরেন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের মধ্যে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেশি বয়সজনিত চোখর গঠনে পরিবর্তন, জন্মগত গঠনের ত্রুটি, আঘাত, চোখ লাল হওয়া, ডায়াবেটিস জনিত চোখের রক্তহীনতা, অনিয়ন্ত্রিত স্টেরই বা হরমোন থেরাপি, ছানি পেকে যাওয়া, ইত্যাদি কারণে গ্লকোমা হতে পারে।
প্রাইমারি গ্লুকোমা সাধারণত ২ চোখে হয় এবং যে কোনো বয়সে হতে পারে। এর কারণ হলো চোখের গঠনগত পরিবর্তন। আর একটি হলো সেকেন্ডারি গ্লকোমা এটা সাধারণত এক চোখে হয়। আঘাতজনিত কারণে এবং ঘন ঘন চোখ লাল বা প্রদাহজনিত কারণে এই রোগহতে পারে। বিভিন্ন প্রকারের উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসতে পারে। হঠাৎ করে এক চোখে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া, তার সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। আবার সব সময় হালকা চোখে এবং মাথা ব্যথা (বিশেষ করে কম আলোতে) এবং আস্তে আস্তে দৃষ্টি শক্তি কমে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ, কমিউনিটি অফথালমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর, বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ্ নূর হাসান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল খালেক প্রমুখসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আইন শৃঙ্খলা, দ্রব্যমুল্য, সংস্কার বিষয়ে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- ধর্ম উপদেষ্টা

চক্ষু রোগীদের গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করে সেবা দিতে হবে

প্রকাশিত সময় : ০১:৪২:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

চোখের চিকিৎসার সময় চিকিৎসকদের অনেক সচেতন নিয়ে সেবা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, শুধু চশমা দিয়ে সেবা দিলে হবে না। চোখের রোগীর ফান্ডাস পরীক্ষা না করে সেবা দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করেই সেবা দিতে হবে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিএসএমএমইউতে ‘এক সাথে হাত ধরে,গ্লুকোমা মুক্ত বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিএসএমএমইউ বিশ্ব গ্লোকোমা সপ্তাহ-২০২৪ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগে এ উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোনো রোগী আসলে সব ধরনের চিকিৎসা দিতে হবে। চোখের সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেবা দিতে হবে। কারণ চোখের রোগগুলো বেশি জটিল। তাই সচেতনভাবে সেবা দিতে হবে। রোগীদের চক্ষু রোগের স্ক্রিনিং বিশেষ করে গ্লোকোমা রোগী বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবির মুখে কৃষকরা চশমা পরে ফসল তোলার ফলে চোখের আলসার অনেক কমে গেছে। চক্ষু রোগ প্রতিরোধে গবেষণা করতে হবে। আমাদের কাছে ময়মনসিংহ বিভাগের গ্লোকোমা রোগী বেশি আসছে। কেন এ অঞ্চলে গ্লুকোমা বেশি হয়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, গ্লুকোমা চোখের নীরব ঘাতক। এটা চোখের এমন একটি রোগ, যেন চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে, চোখের পেছনের স্নায়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়। গ্লুকোমা হলো বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে অনিবারণ যোগ্য অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। যে কোনো বয়সে এ রোগ হতে পারে। জন্মের সময় বেশ বড় চোখ এবং চোখের চাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লুকোমা বলে। তরুণ বয়সেও হতে পারে, এক বলে জুভেনাইল গ্লুকোমা।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ গ্লুকোমা রোগ ৪০ বছরের পরে হয়। এদের প্রাথমিক গ্লকোমা বলে। এছাড়াও, পারিবারিকভাবে যাদের এ রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ার চশমা পরেন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের মধ্যে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেশি বয়সজনিত চোখর গঠনে পরিবর্তন, জন্মগত গঠনের ত্রুটি, আঘাত, চোখ লাল হওয়া, ডায়াবেটিস জনিত চোখের রক্তহীনতা, অনিয়ন্ত্রিত স্টেরই বা হরমোন থেরাপি, ছানি পেকে যাওয়া, ইত্যাদি কারণে গ্লকোমা হতে পারে।
প্রাইমারি গ্লুকোমা সাধারণত ২ চোখে হয় এবং যে কোনো বয়সে হতে পারে। এর কারণ হলো চোখের গঠনগত পরিবর্তন। আর একটি হলো সেকেন্ডারি গ্লকোমা এটা সাধারণত এক চোখে হয়। আঘাতজনিত কারণে এবং ঘন ঘন চোখ লাল বা প্রদাহজনিত কারণে এই রোগহতে পারে। বিভিন্ন প্রকারের উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে আসতে পারে। হঠাৎ করে এক চোখে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া, তার সাথে প্রচন্ড মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। আবার সব সময় হালকা চোখে এবং মাথা ব্যথা (বিশেষ করে কম আলোতে) এবং আস্তে আস্তে দৃষ্টি শক্তি কমে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ, কমিউনিটি অফথালমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শওকত কবীর, বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ্ নূর হাসান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল খালেক প্রমুখসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।