আজ (১৩ মার্চ) প্রথম রমজান দিবাগত রাতে ইশার পর দ্বিতীয় দিনের তারাবিহ নামাজে আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে কোরআনের চতুর্থ পারা ও পঞ্চম পারার অর্ধেক তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আলে ইমরানের ৯৩ নং আয়াত থেকে শুরু হয়ে তিলাওয়াত হবে সুরা নিসার ৮৭ নং আয়াত পর্যন্ত।
পবিত্র কোরআনের এ অংশে দৈনন্দিন জীবন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যে বিধিবিধান আলোচিত হয়েছে:
১. সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর বাইতুল্লাহর হজ করা ফরজ। আল্লাহ বলেছেন,
وَ لِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡهِ سَبِیۡلًا وَ مَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ
সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ করা ফরয। আর যে কুফরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী। (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
২. ইনসাফ ও সমতা রক্ষা করতে পারলে ইসলামে একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারে। তবে ইনসাফ না করতে পারার আশংকা থাকলে একজন স্ত্রীতেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا تُقۡسِطُوۡا فِی الۡیَتٰمٰی فَانۡکِحُوۡا مَا طَابَ لَکُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ مَثۡنٰی وَ ثُلٰثَ وَ رُبٰعَ ۚ فَاِنۡ خِفۡتُمۡ اَلَّا تَعۡدِلُوۡا فَوَاحِدَۃً اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَدۡنٰۤی اَلَّا تَعُوۡلُوۡا
আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, এতিমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দুটি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তাহলে একজনকে কিংবা তোমাদের অধীনস্থ দাসীকে; এটাই হবে অবিচার না করার কাছাকাছি। (সুরা নিসা: ৪)
৩. স্ত্রীকে উপহার হিসেবে বিয়ের মোহর দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। মোহরের মালিক হবে স্ত্রী নিজে, তার অভিভাবক বা পরিবার নয়। স্ত্রী তার ইচ্ছে মতো কিছু অংশ ছেড়ে দিলে তা জায়েজ হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ اٰتُوا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَۃً فَاِنۡ طِبۡنَ لَکُمۡ عَنۡ شَیۡءٍ مِّنۡهُ نَفۡسًا فَکُلُوۡهُ هَنِیۡٓــًٔا مَّرِیۡٓــًٔا
তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও। (সুরা নিসা: ৪)
৪. আল্লাহ তাআলা মৃতের মিরাস বা উত্তরাধিকারের সম্পদ বণ্টনের বিধিবিধান উল্লেখ করেছেন, প্রত্যেক ওয়ারিসের অংশ বা হিস্যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মিরাস বণ্টন করা ফরজ। আল্লাহ বলেন,
لِلرِّجَالِ نَصِیۡبٌ مِّمَّا تَرَکَ الۡوَالِدٰنِ وَ الۡاَقۡرَبُوۡنَ ۪ وَ لِلنِّسَآءِ نَصِیۡبٌ مِّمَّا تَرَکَ الۡوَالِدٰنِ وَ الۡاَقۡرَبُوۡنَ مِمَّا قَلَّ مِنۡهُ اَوۡ کَثُرَ ؕ نَصِیۡبًا مَّفۡرُوۡضًا
পুরুষদের জন্য মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ রয়েছে। আর নারীদের জন্য রয়েছে মাতা পিতা ও নিকটাত্মীয়রা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে একটি অংশ- তা থেকে কম হোক বা বেশি হোক- নির্ধারিত হারে। (সুরা নিসা: ৭)
৫. কেউ অজু করতে অক্ষম হলে অজুর বিকল্প হিসেবে তায়াম্মুম করতে পারবে। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,
وَاِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا
যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর, তবে যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর; তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। (সুরা নিসা: ৪৩)