০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চরম ঝুঁকিতে খুরুশকুল বেইলি সেতু, দূর্ঘটনার শঙ্কা

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশিত সময় : ০১:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • ১১৪ ভিউ

বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত কক্সবাজার-খুরুশকুল বেইলি সেতুর অবস্থা খুবই নাজুক। শহর থেকে সেতুর প্রবেশ মুখে দেবে গেছে একটি অংশ। ভেঙ্গে গেছে সেতুর রেলিং। সেতুটির বিভিন্ন অংশে পাটাতন উঠে গিয়ে ফুটো হয়ে গেছে। নাট-বল্টুও ঝরে পড়ছে।

লবণ, বালু, ইট বোঝাই পিক-আপ সেতুতে উঠতেই দীর্ঘ লম্বা ব্রিজটার কাঁপুনি শুরু হয়। অনেকটা বাধ্য হয়ে ৮ টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।

এছাড়া ঝুঁকি নিয়েই চলছে ইজিবাইক, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, কৃষকের ধান নেয়া ভ্যান, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া। যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে বাঁকখালী নদীর উপর খুরুশকুল-কক্সবাজার সংযোগ সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় সড়ক ও জনপদ ( সওজ)। যার দৈর্ঘ্য ২১৮ মিটার এবং প্রস্থ ৩ দশমিক ৭ মিটার। সেতুটি নির্মাণের প্রায় ২৮ বছর পার হয়েছে। ঈদগাহ ৫ ইউনিয়ন, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী ও পিএমখালী ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ দৈনিক পারাপার হয়। সংস্কারবিহীন এই সেতুর অবস্থা এখন খুবই নাজুক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর থেকে সেতুর প্রবেশ মুখে উত্তর-দক্ষিণ দুই পাশের গাইড ওয়ালগুলো ভেঙে পড়েছে। অনেক পাটাতন ভেঙে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গেছে। কিছু পাটাতন দেবে গেছে। কিছু কিছু পাটাতন ক্ষয়ে ভেতরের রড বেরিয়ে গেছে। এরপরও সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করছেন।

সেতুর নিচে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি পিলারের প্রলেপ উঠে ঝুলে পড়েছে। পানির উপরের অংশ বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। ও-ই গর্তগুলোতে শামুক ও বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী বাসা বেঁধেছে। ৪ টি পিলারের ইট খুলে পড়েছে। পিলারের সাথে পাটাতনের নাট অধিকাংশ নেই। ফলে যেকোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। সেতুর প্রবেশ মুখে ঝুঁকি এড়াতে দেয়া হয়েছে ব্যারিকেড। মালবোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ব্যারিকেডের লোহার অংশটুকু বাঁকা হয়ে গেছে। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারনে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

চৌফলদন্ডি ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জসিম উদ্দিন জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই কিন্তু শিশুরা সেতু পেরিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। শুধু শিশুরাই নয়, গ্রামবাসীও এই সেতু পার হয়ে জেলা ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করছেন। তিনি বলেন, সেতুর অনেক জায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। কয়েকটি ইউনিয়নের জন্য সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দূর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এটাই এখন স্বাভাবিক।’

সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আমিন জানান, ‘প্রতিদিন অন্তত ৪/৫ বার যাত্রী নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। অনেক সময় মাঝ বরাবর গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতু দিয়ে পার হচ্ছে। অতিরিক্ত যানবাহনে সেতু নড়াচড়া করে। পাটাতনগুলো বাঁকা হয়ে গেছে। ছোট গাড়ির চাকা ফাটলে আটকে যায়। এছাড়া সপ্তাহে দু-তিনটে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে।’

সেতুর পাশের দোকানদার রবিউল আলম বলেন, ‘গভীর রাত পর্যন্ত সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। মালবোঝাই পিক-আপ ব্রিজে উঠলেই ঝনঝনানি শুরু হয়। এছাড়া রিকশা চালক ও সিএনজি অটোরিকশা চালকের সাথে প্রতিদিন দুই একটা ঝগড়া হয়।’

খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ছিদ্দিকি বলেন, ‘সেতুটি বর্তমানে খুবই ঝুকিপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে। অসংখ্য গাড়ি যাত্রী নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে। এছাড়া স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্র -ছাত্রীরা প্রতিদিন সেতুটি পার হয়ে আসা যাওয়া করছে।’

তিনি বলেন, ‘সেতুটির অনুকূলে ৮ টি ইউনিয়নের তিন লাখের বেশি মানুষ সেতুটি ব্যবহার করছে। খুরুশকুল এলাকার এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা এই বেইলি ব্রীজ। সেতুটির এখন নড়বড়ে অবস্থা। এর মেয়াদ চলে গেছে অনেক আগে। এছাড়া আজকাল এই সেতু দেশে খুব কমই আছে। দূর্ঘটনা এড়াতে ও মানুষের যাতায়াতের অন্যতম এই সেতুটি ভেঙে স্থায়ীভাবে একটি ব্রি তৈরির দাবি জানান তিনি।’

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জানায়, ‘কক্সবাজার-খুরুশকুল সংযোগ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে অনেক আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সেতুটির উপর দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল না করার জন্য সেতুটির সম্মুখভাগে লোহার পাটাতন দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।’

স্থানীয়দের দাবি, ‘সেতুটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্নভাবে অবগত করা হয়েছিল। অনেক সময় সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাব্যক্তিরা পরিদর্শনে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন। শীঘ্রই সেতুটি সংস্কারে ব্যবস্থা না নিলে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আশংকা করছে স্থানীয়রা।’

শুধু তাই নয়, সেতুটিতে আলোর কোনো ব্যবস্থা নেই। গভীর রাত পর্যন্ত এই সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি পার হয়। অনেকে ব্যবসায়ীক কাজে ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে রাতে ওই ব্রিজ দিয়ে পার হয়। কিন্তু কোন আলো না থাকায় চুরি ডাকাতির ঘটনাও ঘটেছে। সন্ধ্যার পর ব্রিজের নিচে পিলারের পাশে চলে মাদক সেবন। উঠতি বয়সী যুবক ও মাদক সেবিরা টাকা যোগাড় করতে রাতে যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে এমন তথ্যও দেন স্থানীয়রা।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী ( উপ-বিভাগ ১ ) প্রকৌশলী এস এম রাজীব বলেন, ‘সেতুটি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটা সংস্কারের প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সেতুটি পারাপার করতে গিয়ে কয়েকটি ছোটখাটো দুর্ঘটনার খবরও পেয়েছি।’

সড়ক উপ-বিভাগ ১ সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বলেন, ‘সেতুটি ওই এলাকার মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটি স্থায়ীভাবে নির্মাণে কাজ চলছে।’

জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ ( সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহ আরেফীন বলেন, ‘১৮ টি গুরুত্বপূর্ণ বেইলি সড়ক স্থলে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর ব্রীজ ডিজাইন উইং থেকে উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। এসব ব্রিজের মধ্যে এই সেতুটির নামও আছে।’

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

চরম ঝুঁকিতে খুরুশকুল বেইলি সেতু, দূর্ঘটনার শঙ্কা

প্রকাশিত সময় : ০১:৪৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত কক্সবাজার-খুরুশকুল বেইলি সেতুর অবস্থা খুবই নাজুক। শহর থেকে সেতুর প্রবেশ মুখে দেবে গেছে একটি অংশ। ভেঙ্গে গেছে সেতুর রেলিং। সেতুটির বিভিন্ন অংশে পাটাতন উঠে গিয়ে ফুটো হয়ে গেছে। নাট-বল্টুও ঝরে পড়ছে।

লবণ, বালু, ইট বোঝাই পিক-আপ সেতুতে উঠতেই দীর্ঘ লম্বা ব্রিজটার কাঁপুনি শুরু হয়। অনেকটা বাধ্য হয়ে ৮ টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।

এছাড়া ঝুঁকি নিয়েই চলছে ইজিবাইক, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, কৃষকের ধান নেয়া ভ্যান, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া। যেকোন মুহূর্তে সেতুটি ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালে বাঁকখালী নদীর উপর খুরুশকুল-কক্সবাজার সংযোগ সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় সড়ক ও জনপদ ( সওজ)। যার দৈর্ঘ্য ২১৮ মিটার এবং প্রস্থ ৩ দশমিক ৭ মিটার। সেতুটি নির্মাণের প্রায় ২৮ বছর পার হয়েছে। ঈদগাহ ৫ ইউনিয়ন, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী ও পিএমখালী ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ দৈনিক পারাপার হয়। সংস্কারবিহীন এই সেতুর অবস্থা এখন খুবই নাজুক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর থেকে সেতুর প্রবেশ মুখে উত্তর-দক্ষিণ দুই পাশের গাইড ওয়ালগুলো ভেঙে পড়েছে। অনেক পাটাতন ভেঙে ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গেছে। কিছু পাটাতন দেবে গেছে। কিছু কিছু পাটাতন ক্ষয়ে ভেতরের রড বেরিয়ে গেছে। এরপরও সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করছেন।

সেতুর নিচে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি পিলারের প্রলেপ উঠে ঝুলে পড়েছে। পানির উপরের অংশ বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। ও-ই গর্তগুলোতে শামুক ও বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী বাসা বেঁধেছে। ৪ টি পিলারের ইট খুলে পড়েছে। পিলারের সাথে পাটাতনের নাট অধিকাংশ নেই। ফলে যেকোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। সেতুর প্রবেশ মুখে ঝুঁকি এড়াতে দেয়া হয়েছে ব্যারিকেড। মালবোঝাই গাড়ির ধাক্কায় ব্যারিকেডের লোহার অংশটুকু বাঁকা হয়ে গেছে। অতিরিক্ত যানবাহন চলাচলের কারনে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।

চৌফলদন্ডি ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জসিম উদ্দিন জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই কিন্তু শিশুরা সেতু পেরিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। শুধু শিশুরাই নয়, গ্রামবাসীও এই সেতু পার হয়ে জেলা ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করছেন। তিনি বলেন, সেতুর অনেক জায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। কয়েকটি ইউনিয়নের জন্য সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দূর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এটাই এখন স্বাভাবিক।’

সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আমিন জানান, ‘প্রতিদিন অন্তত ৪/৫ বার যাত্রী নিয়ে সেতুটি পার হতে হয়। অনেক সময় মাঝ বরাবর গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতু দিয়ে পার হচ্ছে। অতিরিক্ত যানবাহনে সেতু নড়াচড়া করে। পাটাতনগুলো বাঁকা হয়ে গেছে। ছোট গাড়ির চাকা ফাটলে আটকে যায়। এছাড়া সপ্তাহে দু-তিনটে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে।’

সেতুর পাশের দোকানদার রবিউল আলম বলেন, ‘গভীর রাত পর্যন্ত সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। মালবোঝাই পিক-আপ ব্রিজে উঠলেই ঝনঝনানি শুরু হয়। এছাড়া রিকশা চালক ও সিএনজি অটোরিকশা চালকের সাথে প্রতিদিন দুই একটা ঝগড়া হয়।’

খুরুশকুল ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ছিদ্দিকি বলেন, ‘সেতুটি বর্তমানে খুবই ঝুকিপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হচ্ছে। অসংখ্য গাড়ি যাত্রী নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে। এছাড়া স্কুল-কলেজে পড়ুয়া ছাত্র -ছাত্রীরা প্রতিদিন সেতুটি পার হয়ে আসা যাওয়া করছে।’

তিনি বলেন, ‘সেতুটির অনুকূলে ৮ টি ইউনিয়নের তিন লাখের বেশি মানুষ সেতুটি ব্যবহার করছে। খুরুশকুল এলাকার এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা এই বেইলি ব্রীজ। সেতুটির এখন নড়বড়ে অবস্থা। এর মেয়াদ চলে গেছে অনেক আগে। এছাড়া আজকাল এই সেতু দেশে খুব কমই আছে। দূর্ঘটনা এড়াতে ও মানুষের যাতায়াতের অন্যতম এই সেতুটি ভেঙে স্থায়ীভাবে একটি ব্রি তৈরির দাবি জানান তিনি।’

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জানায়, ‘কক্সবাজার-খুরুশকুল সংযোগ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে অনেক আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। সেতুটির উপর দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল না করার জন্য সেতুটির সম্মুখভাগে লোহার পাটাতন দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।’

স্থানীয়দের দাবি, ‘সেতুটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিভিন্নভাবে অবগত করা হয়েছিল। অনেক সময় সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাব্যক্তিরা পরিদর্শনে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন। শীঘ্রই সেতুটি সংস্কারে ব্যবস্থা না নিলে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আশংকা করছে স্থানীয়রা।’

শুধু তাই নয়, সেতুটিতে আলোর কোনো ব্যবস্থা নেই। গভীর রাত পর্যন্ত এই সেতু দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি পার হয়। অনেকে ব্যবসায়ীক কাজে ও চিকিৎসা সেবা নিয়ে রাতে ওই ব্রিজ দিয়ে পার হয়। কিন্তু কোন আলো না থাকায় চুরি ডাকাতির ঘটনাও ঘটেছে। সন্ধ্যার পর ব্রিজের নিচে পিলারের পাশে চলে মাদক সেবন। উঠতি বয়সী যুবক ও মাদক সেবিরা টাকা যোগাড় করতে রাতে যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে এমন তথ্যও দেন স্থানীয়রা।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী ( উপ-বিভাগ ১ ) প্রকৌশলী এস এম রাজীব বলেন, ‘সেতুটি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটা সংস্কারের প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সেতুটি পারাপার করতে গিয়ে কয়েকটি ছোটখাটো দুর্ঘটনার খবরও পেয়েছি।’

সড়ক উপ-বিভাগ ১ সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ সরকার বলেন, ‘সেতুটি ওই এলাকার মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটি স্থায়ীভাবে নির্মাণে কাজ চলছে।’

জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ ( সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহ আরেফীন বলেন, ‘১৮ টি গুরুত্বপূর্ণ বেইলি সড়ক স্থলে স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর ব্রীজ ডিজাইন উইং থেকে উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। এসব ব্রিজের মধ্যে এই সেতুটির নামও আছে।’