বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম আচেহ প্রদেশের উপকূলে রোহিঙ্গা শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়/ /ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ৭০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। তারা সবাই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ মার্চ) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বরাতে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর বলেছে, মৃতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করা হলে চলতি বছরে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা হবে এটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বুধবার (২০ মার্চ) ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি কাঠের নৌকা ডুবে যায়। স্থানীয় জেলেরা তাৎক্ষণিকভাবে ছয়জনকে উদ্ধার করে। পরে আরও প্রায় ৭০ জনকে উদ্ধার করা হলেও এখনো প্রায় ৭৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
স্থানীয় জেলেরা আরও জানান, জোয়ারের কারণে নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর ডুবে যাওয়া নৌকাটির কাছে পৌঁছাতে তাদের কয়েক ঘণ্টা দেরি হয়ে যায়। এর কয়েকঘণ্টা পর আচেহ প্রদেশ থেকে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল রওনা দেয়। নৌকাটি উপকূলের অনেকটা দূরে চলে যাওয়ায়, সেটি শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের খুঁজে পাওয়া যায়।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-নিপীড়নের কারণে রোহিঙ্গারা তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া থেকে আগত বিদেশি হিসেবে বিবেচনা করে ও তাদের নাগরিকত্বও অস্বীকার করে।
ইউএনএইচসিআরের তথ্যে দেখা গেছে, গত বছর দুই হাজার ৩০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় এসেছেন। এই সংখ্যা আগের চার বছরের মোট সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। জানুয়ারিতে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছিল, মিয়ানমার বা বাংলাদেশ থেকে পালাতে গিয়ে ২০২৩ সালে অন্তত ৫৬৯ রোহিঙ্গা মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
ইউএনএইচসিআর’র এশিয়া মুখপাত্র বাবর বেলুচ শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন, এই সর্বশেষ নৌকাডুবির ঘটনায় ১৫১ জন রোহিঙ্গা আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ জনকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বাকিদের ‘মৃত বা নিখোঁজ’ বলে ধারণা করা হয়েছিল।
আচেহতে ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষা সহযোগী ফয়সাল রহমান রয়টার্সকে বলেছেন, বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গারা ভালো আছেন। তাদেরকে পশ্চিম আচেহের একটি রেডক্রস ভবনে রাখা হয়েছে। আচেহের অভিবাসন সংস্থাকে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও, তাড়া এখন পর্যন্ত রয়টার্সকে কোনো সাড়া দেয়নি।