সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা চট্টগ্রামের শিপিং কোম্পানি এস আর শিপিং-এর মালিকানাধীন এম ভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও নাবিকদের সুস্থ ও নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে চান জাহাজের মালিকপক্ষ। এই লক্ষে তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগ করে সমঝোতার চেষ্টা করছেন তারা।
তবে মালিকপক্ষ জিম্মি জাহাজ ঘিরে বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ জাহাজের তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। জানিয়েছেন জাহাজ উদ্ধারে কোন সামারিক অভিযানের পক্ষে নন তারা। সবার আগে জিম্মি থাকা নাবিকদের নিরাপত্তাই গুরুত্বপূর্ণ।
জিম্মি জাহাজের মালিক এস আর শিপিং-এর মাদার প্রতিষ্ঠান কে এস আর এম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন- আমরা জাহাজ উদ্ধারে সামারিক অভিযানের পক্ষে নই। সমঝোতার মাধ্যমেই আমরা আমাদের নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে চাই। এই লক্ষ্যে আমাদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগ চলছে। জলদস্যুরা এখনো তাদের দাবী জানায়নি। তবে আমরা যে কোনভাবে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছি। জাহাজের নাবিকদের সাথেও যোগাযোগ অব্যাহত আছে। তারা সবাই সুস্থ আছেন।
এদিকে জিম্মি নাবিকদের এক স্বজন নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন জাহাজ থেকে একজন নাবিক স্বজনের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন- তারা সবাই সুস্থ আছেন। তবে তাদের জাহাজের অনতিদূরে যুদ্ধ জাহাজের অবস্থান দেখতে পেয়েছেন। জাহাজে সামারিক অভিযান হলে জলদস্যুরা তাদের ক্ষতি করতে পারে এই আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
এদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব আফ্রিকা উপকূলে জলদস্যুতা নির্মূলে দায়িত্বরত ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স ‘অপারেশন আটলান্টার’ অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখছে ই ইউ-র যুদ্ধ জাহাজ। এই যুদ্ধ জাহাজটি এমভি আবদুল্লাহকে নজরে রেখে টহল দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে ২৩ জন নাবিক জিম্মি রয়েছে। তারা হলেন- জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার মো. আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট মো. সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এএসএম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, এবি পদের মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসাইন, জয় মাহমুদ, ওএস পদের মো. নাজমুল হক, অয়েলার পদের আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, ফায়ারম্যান মোশাররফ হোসেন শাকিল, চিফ কুক মো. শফিকুল ইসলাম, জিএস পদের মোহাম্মদ নুর উদ্দিন ও ফিটার মোহাম্মদ সালেহ আহমদ।
এদের মধ্যে ১১ জনের বাড়ি চট্টগ্রামে। দুই জনের বাড়ি নোয়াখালী, অন্যরা ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, খুলনা, নেত্রকোনা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও বরিশালের বাসিন্দা।