০২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেকুয়া-কুতুবদিয়া জেটিঘাটে জ্বলেনা বাতি, কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান

রাতের আঁধারে বাতি জ্বলে না কক্সবাজারের পেকুয়া-কুতুবদিয়ার সাত জেটিঘাটে। সন্ধ্যা নেমে এলেই যাত্রী বা মালামাল উঠা-নামা ও নারী-শিশুদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই জেটিঘাটগুলোতে সোলার লাইট নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই এমন দুরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, পেকুয়ার মগনামা লঞ্চ ঘাট, উজাটিয়ার করিমদাদ মিয়ার ঘাট, কুতুবদিয়া দ্বীপে আলী আকবর ডেইল জেটি, বড়ঘোপ জেটি, দরবার জেটি ও ধুরুং (সতরুদ্দিন) জেটি রয়েছে সরকারি ইজারার আওতায়। আব্বরবলী পাড়া ঘাটে জেটি অসমাপ্ত থাকায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সেটি ইজারা দেয়। বাকি ছয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতি বছর ইজারা প্রদান করা হয়। তবে, প্রতি বছর ইজারামূল্য বৃদ্ধি করা হলেও জেটিগুলোতে পর্যাপ্ত সুবিধা বাড়ানো হয়নি। ফলে, বছর বছর ইজারার হাতবদল হলেও যাত্রীদের ভোগান্তি বিষয়টি একই থেকে যাচ্ছে।

পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চ ঘাট (তিন বারের) ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, গত ২০১৯ সালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে এই ঘাটে আলো জ্বলত। যাত্রী উঠানামায় কোনো অসুবিধা ছিল না। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ কুতুবদিয়া দ্বীপে পারাপার করে। সন্ধ্যা হলেই তাদের টর্চ লাইটের আলো দেখিয়ে ড্যানিস বোটে উঠানামা অনেকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে।

কুতুবদিয়ার ধুরুং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজবাহুল আলম সিকদার বলেন, উপজেলার কোনো জেটিতেই সন্ধ্যার পর বাতি জ্বলে না। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিয়মিত ঘাট পারাপার হয়ে থাকে। অন্ধকারে যাত্রীরা জেটিতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় পা পিছলেও যায়। এক সপ্তাহ আগেও এক যাত্রী ড্যানিশ বোটে উঠতে গিয়ে অন্ধকারে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল। পরে ঐ যাত্রী পার না হয়েই পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যান পায়ের এক্স-রে করাতে।

দরবার জেটিঘাটে হাসিল আদায়কারী নাজেম উদ্দিন নাজু বলেন, প্রায় দুই/তিন বছর ধরে ঘাটের জেটিতে বাতি নেই। টর্চ লাইট জ্বালিয়ে যাত্রীদের জেটিতে উঠানামায় সহায়তা করতে হয়। যাত্রীরা এ নিয়ে অনেক সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চালিত লাইট প্রথমে দেওয়া হলেও তা তিন মাসেই বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে আর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

ঘাট পারাপারে পুরাতন ইজারাদার কামরুল হাসান সিকদার বলেন, বলতে গেলে দ্বীপের কোনো জেটিতেই বাতি জ্বলে না। তারা একাধিক বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। দীর্ঘদিনেও তার সমাধান হয়নি। যাত্রী ওঠানামায় রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দায়িত্ব। ছোটখাটো বিষয় হলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদাররা সমাধান করতে পারত।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান জানান, জেটিগুলোতে সৌর প্যানেলে ল্যাম্পপোস্ট প্রকল্পটি চার বছর আগের। এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল তিন বছর। তিন বছরের মেয়াদ শেষে বর্তমানে এগুলো দেখভালের দ্বায়িত্ব আমাদের আর নেই। তাছাড়া ল্যাম্পপোস্টগুলো মেরামত বা নতুন করে স্থাপনের জন্য নতুন কোনো প্রকল্পও নেই।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি এখানে নতুন জয়েন করেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যাত্রী ভোগান্তি নিরসনের চেষ্টা করব।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

‘স্টেপ ডাউন ইউনুস’পোস্ট করে আটক হলেন যুবক!

পেকুয়া-কুতুবদিয়া জেটিঘাটে জ্বলেনা বাতি, কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান

প্রকাশিত সময় : ০১:৪৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

রাতের আঁধারে বাতি জ্বলে না কক্সবাজারের পেকুয়া-কুতুবদিয়ার সাত জেটিঘাটে। সন্ধ্যা নেমে এলেই যাত্রী বা মালামাল উঠা-নামা ও নারী-শিশুদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই জেটিঘাটগুলোতে সোলার লাইট নষ্ট থাকায় সন্ধ্যার পর থেকেই এমন দুরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, পেকুয়ার মগনামা লঞ্চ ঘাট, উজাটিয়ার করিমদাদ মিয়ার ঘাট, কুতুবদিয়া দ্বীপে আলী আকবর ডেইল জেটি, বড়ঘোপ জেটি, দরবার জেটি ও ধুরুং (সতরুদ্দিন) জেটি রয়েছে সরকারি ইজারার আওতায়। আব্বরবলী পাড়া ঘাটে জেটি অসমাপ্ত থাকায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সেটি ইজারা দেয়। বাকি ছয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতি বছর ইজারা প্রদান করা হয়। তবে, প্রতি বছর ইজারামূল্য বৃদ্ধি করা হলেও জেটিগুলোতে পর্যাপ্ত সুবিধা বাড়ানো হয়নি। ফলে, বছর বছর ইজারার হাতবদল হলেও যাত্রীদের ভোগান্তি বিষয়টি একই থেকে যাচ্ছে।

পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চ ঘাট (তিন বারের) ইজারাদার নুরুল ইসলাম বলেন, গত ২০১৯ সালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে এই ঘাটে আলো জ্বলত। যাত্রী উঠানামায় কোনো অসুবিধা ছিল না। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ কুতুবদিয়া দ্বীপে পারাপার করে। সন্ধ্যা হলেই তাদের টর্চ লাইটের আলো দেখিয়ে ড্যানিস বোটে উঠানামা অনেকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে।

কুতুবদিয়ার ধুরুং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজবাহুল আলম সিকদার বলেন, উপজেলার কোনো জেটিতেই সন্ধ্যার পর বাতি জ্বলে না। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিয়মিত ঘাট পারাপার হয়ে থাকে। অন্ধকারে যাত্রীরা জেটিতে উঠতে গিয়ে অনেক সময় পা পিছলেও যায়। এক সপ্তাহ আগেও এক যাত্রী ড্যানিশ বোটে উঠতে গিয়ে অন্ধকারে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিল। পরে ঐ যাত্রী পার না হয়েই পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যান পায়ের এক্স-রে করাতে।

দরবার জেটিঘাটে হাসিল আদায়কারী নাজেম উদ্দিন নাজু বলেন, প্রায় দুই/তিন বছর ধরে ঘাটের জেটিতে বাতি নেই। টর্চ লাইট জ্বালিয়ে যাত্রীদের জেটিতে উঠানামায় সহায়তা করতে হয়। যাত্রীরা এ নিয়ে অনেক সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চালিত লাইট প্রথমে দেওয়া হলেও তা তিন মাসেই বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে আর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

ঘাট পারাপারে পুরাতন ইজারাদার কামরুল হাসান সিকদার বলেন, বলতে গেলে দ্বীপের কোনো জেটিতেই বাতি জ্বলে না। তারা একাধিক বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। দীর্ঘদিনেও তার সমাধান হয়নি। যাত্রী ওঠানামায় রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দায়িত্ব। ছোটখাটো বিষয় হলে সংশ্লিষ্ট ইজারাদাররা সমাধান করতে পারত।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান জানান, জেটিগুলোতে সৌর প্যানেলে ল্যাম্পপোস্ট প্রকল্পটি চার বছর আগের। এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল তিন বছর। তিন বছরের মেয়াদ শেষে বর্তমানে এগুলো দেখভালের দ্বায়িত্ব আমাদের আর নেই। তাছাড়া ল্যাম্পপোস্টগুলো মেরামত বা নতুন করে স্থাপনের জন্য নতুন কোনো প্রকল্পও নেই।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি এখানে নতুন জয়েন করেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যাত্রী ভোগান্তি নিরসনের চেষ্টা করব।