১১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপহরণের ৪৮ ঘন্টায় সিএনজি চালককে উদ্ধার করলো র‍্যাব

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী ও এক পুরুষ কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া নেন। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় লিংরোড এলাকায়। সেখানে চালক জাহেদ হোসাইন (২৫) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গহীন পাহাড়ে। সেখানে গিয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে চাওয়া হয় ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

ছায়া তদন্ত শেষে ৪৮ ঘন্টা ধরে র‍্যাব ১৫ এর একটি আভিযানিক দল স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় রামু থানাধীন রাজারকুলের উমখালীর গহীন পাহাড়ি এলাকায় ব্লক রেইড অভিযান পরিচালনা করে সোমবার (২৫ মার্চ) ভোরে অপহৃত সিএনজি চালককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণকারীকে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।

অপহৃত জাহেদ হোসাইন উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের গায়ালা মারা এলাকার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে।

অপহৃত সিএনজি চালকের বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন- গেল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে এক নারী ও এক পুরুষ জাহেদকে যাত্রী সেজে কলাতলী থেকে রামুর কলঘর বাজার যাবার জন্য ভাড়া করে। লিংকরোড এলাকায় পৌঁছানোর পর জাহেদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে, জাহেদের ফোন থেকেই পরিবারকে একাধিকবার ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সর্বশেষ অপহরণকারীরা জানায় ২৫ মার্চ রাতের মধ্যে অর্থ না দিলে জাহেদকে কেটে টুকরো টুকরো করে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে তারা (জাহেদের স্বজনেরা) র‍্যাবের শরণাপন্ন হন।

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানায়- অপহরণের পর থেকেই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে র‍্যাবের অভিযানের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। এ সময় পাহাড়-অরণ্য বেষ্টিত এলাকায় অপহরণকারীদের অবস্থানস্থল চিহ্নিত করে কয়েক শ গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীদের আস্তানা ঘিরে ফেলে সেখানে ব্লক রেইড অভিযান পরিচালনা শুরু করে র‍্যাব। একপর্যায়ে ২৫ মার্চ ভোরে অভিযানকারীদের উপস্থিত আঁচ করতে পেরে অপহৃত জাহেদকে অকুস্থলে রেখেই সটকে পড়েন অপহরণকারী চক্রের বেশিরভাগ সদস্য। এ সময় দুর্গম পাহাড়ি ঢাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহেদকে উদ্ধারের পাশাপাশি এক অপহরণকারীকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ওরফে ইকবাল (২৮)। তিনি কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন উমখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিমের পুত্র।

অপহৃত সিএনজি চালক জাহেদের মা জমিলা খাতুন বলেন- (আমার বুকের ধনকে আমার বুকে ফিরে পাব সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। র‍্যাবকে শত-কোটি ধন্যবাদ।

দুর্গম পাহাড়ে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা কক্সবাজার র‍্যাব -১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‍্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেনের নির্দেশে আমরা এই অভিযানের পরিকল্পনা করি। কক্সবাজার থেকে অপহরণ মুক্তিপণের এই চক্র নির্মূলে র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে কক্সবাজারবাসীরা বলেন, কক্সবাজারে র‍্যাব সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বেোচ্চ অভিযান অব্যাহত রেখে যেকোন কিছুর মূল্যে অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। কক্সবাজারবাসীদের মাঝে র‌্যাব আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে। তাই র‌্যাবকে আগামীর অপরাধী মুক্ত কক্সবাজার গড়ে তুলবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। এতে কক্সবাজারবাসীরা র‌্যাবের প্রশংসা জ্ঞাপন করেন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

অপহরণের ৪৮ ঘন্টায় সিএনজি চালককে উদ্ধার করলো র‍্যাব

প্রকাশিত সময় : ০৩:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪

স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী ও এক পুরুষ কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া নেন। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় লিংরোড এলাকায়। সেখানে চালক জাহেদ হোসাইন (২৫) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গহীন পাহাড়ে। সেখানে গিয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে চাওয়া হয় ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ।

ছায়া তদন্ত শেষে ৪৮ ঘন্টা ধরে র‍্যাব ১৫ এর একটি আভিযানিক দল স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় রামু থানাধীন রাজারকুলের উমখালীর গহীন পাহাড়ি এলাকায় ব্লক রেইড অভিযান পরিচালনা করে সোমবার (২৫ মার্চ) ভোরে অপহৃত সিএনজি চালককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণকারীকে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।

অপহৃত জাহেদ হোসাইন উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের গায়ালা মারা এলাকার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে।

অপহৃত সিএনজি চালকের বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন- গেল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে এক নারী ও এক পুরুষ জাহেদকে যাত্রী সেজে কলাতলী থেকে রামুর কলঘর বাজার যাবার জন্য ভাড়া করে। লিংকরোড এলাকায় পৌঁছানোর পর জাহেদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে, জাহেদের ফোন থেকেই পরিবারকে একাধিকবার ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সর্বশেষ অপহরণকারীরা জানায় ২৫ মার্চ রাতের মধ্যে অর্থ না দিলে জাহেদকে কেটে টুকরো টুকরো করে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে তারা (জাহেদের স্বজনেরা) র‍্যাবের শরণাপন্ন হন।

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানায়- অপহরণের পর থেকেই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে র‍্যাবের অভিযানের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। এ সময় পাহাড়-অরণ্য বেষ্টিত এলাকায় অপহরণকারীদের অবস্থানস্থল চিহ্নিত করে কয়েক শ গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীদের আস্তানা ঘিরে ফেলে সেখানে ব্লক রেইড অভিযান পরিচালনা শুরু করে র‍্যাব। একপর্যায়ে ২৫ মার্চ ভোরে অভিযানকারীদের উপস্থিত আঁচ করতে পেরে অপহৃত জাহেদকে অকুস্থলে রেখেই সটকে পড়েন অপহরণকারী চক্রের বেশিরভাগ সদস্য। এ সময় দুর্গম পাহাড়ি ঢাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহেদকে উদ্ধারের পাশাপাশি এক অপহরণকারীকে হাতেনাতে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ওরফে ইকবাল (২৮)। তিনি কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন উমখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিমের পুত্র।

অপহৃত সিএনজি চালক জাহেদের মা জমিলা খাতুন বলেন- (আমার বুকের ধনকে আমার বুকে ফিরে পাব সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। র‍্যাবকে শত-কোটি ধন্যবাদ।

দুর্গম পাহাড়ে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা কক্সবাজার র‍্যাব -১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‍্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেনের নির্দেশে আমরা এই অভিযানের পরিকল্পনা করি। কক্সবাজার থেকে অপহরণ মুক্তিপণের এই চক্র নির্মূলে র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
এদিকে কক্সবাজারবাসীরা বলেন, কক্সবাজারে র‍্যাব সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বেোচ্চ অভিযান অব্যাহত রেখে যেকোন কিছুর মূল্যে অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। কক্সবাজারবাসীদের মাঝে র‌্যাব আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে। তাই র‌্যাবকে আগামীর অপরাধী মুক্ত কক্সবাজার গড়ে তুলবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। এতে কক্সবাজারবাসীরা র‌্যাবের প্রশংসা জ্ঞাপন করেন।