০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং পাহাড়ে কাজ করতে গিয়ে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশে তৈরি অস্ত্রসহ বড় রামদা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভোর ৫টার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ইউনিয়নে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করা হয়।

আটক অপহরণকারীরা হলো টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং দক্ষিণ পাড়া এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মো. নবী সুলতান ওরফে নবীন (৩৫), বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী এলাকার মৃত হোছনের ছেলে মো. সলিম (২৬)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘দশ কৃষককে অপহরণের ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় আগের বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এ অভিযানে একটি দেশি ওয়ান শুটার গান (এলজি) এবং নানা আকারের আটটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুজন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘২১ মার্চ হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে পাঁচ জন, ২৬ মার্চ হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে দুজন এবং ২৭ মার্চ বিভিন্ন সময় হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে আট জনকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মোর্শেদ ও হেলাল চক্রের গ্রেফতার এই দুই সদস্য।

‘তারা জানিয়েছে, বাহারছড়ার সন্ত্রাসী মোর্শেদ ও হেলালের নেতৃত্বে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের নিয়ে অপহরণকারী চক্রটি গড়ে উঠেছে। তারা পাহাড়ের গহিনে নানা স্থানে আস্তানা তৈরি করেছে। অপহরণকারী চক্রের গ্রেফতার এ দুই সদস্যের কাছ থেকে বাকি সদস্যদের অনেকের নাম-পরিচয় জানা গেছে।’

চক্রপ্রধান মোর্শেদ ও হেলালের পাশাপাশি তাদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আটক সলিম পুলিশের কাছে বলেছে, ‘আমি ডাকাতি মামলায় কক্সবাজার কারাগারে ছিলাম। সেখান থেকে কিছুদিন আগে জামিনে এসেছি। কয়েকদিন ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে গিয়েছিলাম। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী এলাকার মোর্শেদের নেতৃত্বে মোস্তফা, দেলোয়ার, বদরুজ, শফিক, রহিম, হেলাল, জসিমসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল পাহাড়ে আস্তানা গড়ে তোলে। পুরো দলটি নিয়ন্ত্রণ করে মোর্শেদ। তার নেতৃত্ব আমরা এসব কর্মকাণ্ড চালানো হয়।’

এদিকে, গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৬ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ জন স্থানীয়। বাকিরা আশ্রিত রোহিঙ্গা। ভুক্তভোগীদের পরিবারের তথ্যমতে, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে কমপক্ষে ৫১ জনকে ছাড়াতে মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। এদিকে ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী থেকে অপহরণ হওয়া মাদ্রাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আবদুল্লাহকে ২০ দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক

প্রকাশিত সময় : ০১:০৯:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং পাহাড়ে কাজ করতে গিয়ে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশে তৈরি অস্ত্রসহ বড় রামদা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ভোর ৫টার সময় টেকনাফের হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ইউনিয়নে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করা হয়।

আটক অপহরণকারীরা হলো টেকনাফের হোয়াইক্যং রৈক্ষ্যং দক্ষিণ পাড়া এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে মো. নবী সুলতান ওরফে নবীন (৩৫), বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী এলাকার মৃত হোছনের ছেলে মো. সলিম (২৬)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘দশ কৃষককে অপহরণের ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় আগের বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এ অভিযানে একটি দেশি ওয়ান শুটার গান (এলজি) এবং নানা আকারের আটটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুজন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘২১ মার্চ হ্নীলার পানখালীর পাহাড়ি এলাকা থেকে পাঁচ জন, ২৬ মার্চ হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে দুজন এবং ২৭ মার্চ বিভিন্ন সময় হোয়াইক্যংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে আট জনকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মোর্শেদ ও হেলাল চক্রের গ্রেফতার এই দুই সদস্য।

‘তারা জানিয়েছে, বাহারছড়ার সন্ত্রাসী মোর্শেদ ও হেলালের নেতৃত্বে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের নিয়ে অপহরণকারী চক্রটি গড়ে উঠেছে। তারা পাহাড়ের গহিনে নানা স্থানে আস্তানা তৈরি করেছে। অপহরণকারী চক্রের গ্রেফতার এ দুই সদস্যের কাছ থেকে বাকি সদস্যদের অনেকের নাম-পরিচয় জানা গেছে।’

চক্রপ্রধান মোর্শেদ ও হেলালের পাশাপাশি তাদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আটক সলিম পুলিশের কাছে বলেছে, ‘আমি ডাকাতি মামলায় কক্সবাজার কারাগারে ছিলাম। সেখান থেকে কিছুদিন আগে জামিনে এসেছি। কয়েকদিন ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে গিয়েছিলাম। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী এলাকার মোর্শেদের নেতৃত্বে মোস্তফা, দেলোয়ার, বদরুজ, শফিক, রহিম, হেলাল, জসিমসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ দল পাহাড়ে আস্তানা গড়ে তোলে। পুরো দলটি নিয়ন্ত্রণ করে মোর্শেদ। তার নেতৃত্ব আমরা এসব কর্মকাণ্ড চালানো হয়।’

এদিকে, গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৬ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ জন স্থানীয়। বাকিরা আশ্রিত রোহিঙ্গা। ভুক্তভোগীদের পরিবারের তথ্যমতে, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে কমপক্ষে ৫১ জনকে ছাড়াতে মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। এদিকে ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী থেকে অপহরণ হওয়া মাদ্রাসাছাত্র ছোয়াদ বিন আবদুল্লাহকে ২০ দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।