গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েলকে সীমান্ত ক্রসিং খুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জাতিসংঘের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এই নির্দেশ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আদালত বলেছেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং অন্যান্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার জন্য আরও সীমান্ত ক্রসিং খোলাসহ মানবিক সহায়তা বাড়াতে হবে।
আদালত আরও বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী যেন গাজায় কোনও অভিযান না চালায়। শুধু তাই না, এই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে এক মাসের মধ্যে ইসরায়েলকে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু শুধু বোমাবর্ষণ বা স্থল হামলার কারণে হচ্ছে না। নানান রোগ ও অনাহারের কারণেও তাদের মৃত্যু হচ্ছে। জাতিসংঘ আদালতের এই নির্দেশ ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব রক্ষার ইঙ্গিত দেয়।
হামাস বলেছে, জাতিসংঘের এই রায় অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রয়োগ করা উচিত। সংগঠনটি আরও বলেছে, এটি অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। যাতে এই সিদ্ধান্তটি কাগজেই আবদ্ধ না থাকে।
জাতিসংঘের বৃহস্পতিবারের এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে স্বাগত জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গাজাবাসীর অনাহারের বিষয়টি উল্লেখ করে যুদ্ধবিরতিসহ আরও কিছু দাবি উন্থাপন করার পর এই আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, ইসরায়েল বলেছে, গাজায় সহায়তা প্রবেশের কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। বরং আরও বেশি সহায়তা আনার জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তার নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য ইসরায়েলের অধিকার ক্ষুণ্ন করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছে, গণহত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
ইসরায়েল বলেছে, গাজা উপত্যকায় সাহায্যের প্রবাহকে সক্ষম ও সহজতর করার জন্য নতুন উদ্যোগের প্রচার চালিয়ে যাবে। স্থল অভিযান, হামাসের ত্রাণ মজুদ করার প্রচেষ্টা ও চুরি করা সত্ত্বেও তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
ইসরায়েল আরও জানিয়েছে, শীঘ্রই সমুদ্রপথে ত্রাণ প্রবেশের পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে ইসরায়েল।
আদালত তার আদেশে বলেছে, ফিলিস্তিনিরা কেবল দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন না। জাতিসংঘের কার্যালয় থেকে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ শিশুসহ অন্তত ৩১ জন ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে মারা গেছে।
বিশ্ব আদালত বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মামলার শুনানির পর ইসরায়েলের ওপর আরোপিত আদেশে গাজায় কোনও পরিবর্তন আসেনি।